দুদকের অভিযান

পাসপোর্ট অফিসে দালালিতে খোদ পুলিশ

প্রকাশ | ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৬:৩৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

অনলাইনে আবেদন চালু হলেও পাসপোর্ট অফিস যে দালাল মুক্ত হতে পারেনি, দুর্নীতি দমন কমিশনের অভিযানে তার প্রমাণ মিলেছে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে যোগসাজস করে দালালরা একটি বৃত্ত তৈরি করেছে। এতে সেবাগ্রহীতারা দালালদের পাশ কাটিয়ে পাসপোর্ট করতে গেলে ভোগান্তিতে পড়ে।  এমনকি দালালিতে জড়িত খোদ পুলিশ সদস্যরাও।

দুর্নীতির তথ্য জানাতে চালু করা হটলাইনে (১০৬) অভিযোগ পেয়ে সাতটি জেলার পাসর্পোট অফিসে অভিযানে এই চিত্র উঠে এসেছে। সেবাগ্রহীতার কাছ থেকে ঘুষ আদায়ে অফিসের কর্মী ও দালালদের মধ্যে যোগসাজসের অভিযোগে এই অভিযানে চারজন দালালকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করা হয়।

বৃহস্পতিবার দিনাজপুর, বরিশাল, কুমিল্লা, টাঙ্গাইল, সিলেট, মেহেরপুর ও মুন্সিগঞ্জ জেলায় এই অভিযান চালানো হয়। এ সময় মেহেরপুর, মুন্সিগঞ্জ, কুমিল্লা এবং দিনাজপুরে একজন করে দালালকে আটক করা হয়। পরে তাদেরকে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতে সোপর্দ করা হয়। বিচারকরা তাদেরকে জরিমানা ও বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন।
অভিযান চলাকালে বরিশাল পাসপোর্ট অফিসে অভিনব চিত্র দেখা যায়। দালালদের বিরুদ্ধে যাদের অভিযানে থাার কথা, সেই পুলিশ সদস্যরাই দালালিতে সম্পৃক্ত। তারা নিজেরাই সেজে গ্রাহকদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করছে পাসপোর্ট করিয়ে দেওয়ার কথা বলে। আর পুলিশ নিজে এই কাজ করে বলে প্রতিকার পাওয়ার কোনো সুযোগই ছিল না ভুক্তভোগীদের।

অভিযান চলাকালে পাসপোর্ট করতে আসা লোকজন অভিযোগ করে, সাধারণ পাসপোর্টের মূল ফির অতিরিক্ত দেড় হাজার টাকা এবং এবং জরুরি পাসপোর্টের ক্ষেত্রে চার হাজার টাকা। কিন্তু ঘুষ না দিলে ইচ্ছা করে নানা ঝামেলা করে অফিস। আর দালাল ধরলে তার সমাধান হয়।

সিলেট পাসপোর্ট অফিসে দেখা যায়, বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সি পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তার সাথে যোগযোগ করে দালাল চক্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়েছে।

টাঙ্গাইল পাসপোর্ট অফিসে দালালরা গ্রাহকদের কাছ থেকে নির্ধারিত ফর বাইরে ৫০০ টাকা থেকে ২৫০০ টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে বলে প্রমাণ মেলে।

মুন্সিগঞ্জে দেখা যায়, দপ্তরের সহকারী পরিচালক হালিমা খাতুন গত এক মাস যাবত হাজিরা খাতা যাচাই করছেন না। কুমিল্লা পাসপোর্ট অফিসের চার জন কর্মকর্তাকে অনুপস্থিত পায় দুদক দল। এ বিষয়ে কোনো ব্যাখ্যা দিতে পারেনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।

এ অভিযান প্রসঙ্গে দুদকের মহাপরিচালক (প্রশাসন) মুনীর চৌধুরী ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘পাসপোর্ট অফিসের দুর্নীতি ও হয়রানি বন্ধে দুদকের এই অভিযান। দুর্নীতির প্রমাণের ভিত্তিতে দুদক সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে।’