খেলাপি ঋণ বাড়লে পরে বলবেন: অর্থমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৭:৩২
ফাইল ছবি

খেলাপি ঋণ আর বাড়বে না বলে আবার জোর দিয়ে বলেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। নতুন করে বাড়লে পরে এ নিয়ে কথা তুলতে বলেছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার শেরেবাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যবসা ও শিল্প-বাণিজ্যের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে করণীয় নির্ধারণ করতে ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে প্রথম পর্বের ধারাবাহিক আলোচনায় বসেন অর্থমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। আলোচনা শেষে মুস্তফা কামাল এই মন্তব্য জানান।

গত এক দশক ধরেই ব্যাংকের খেলাপি ঋণ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। সবশেষ হিসাবে ৯৯ হাজার কোটি টাকা খেলাপি ঋণ আর আরও ৩৭ হাজার কোটি টাকার অবলোপন করা ঋণ রয়েছে। ৩০ ডিসেম্বরের ভোটে জয়ের পর আওয়ামী লীগের নতুন সরকারে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়ে মুস্তফা কামাল খেলাপি ঋণ নিয়ে কাজ করার কথা জানান। ১০ জানুয়ারি তিনি বলেন, ‘এখন থেকে খেলাপি ঋণ আর এক টাকাও বাড়বে না।’

এরই মধ্যে অর্থমন্ত্রী ব্যাংকারদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছেন এ বিষয়ে। বুধবারও এক আলোচনায় অসৎ ঋণদাতা ও ব্যাংকারদেরকে তিনি সাবধান করে দিয়েছেন।

ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এক প্রশ্নে মুস্তফা কামাল বলেন, ‘আমি বলছি, আর খেলাপিঋণ বাড়বে না। আমি যেদিন বলছি, এরপর আর বাড়বে না। যদি বেড়ে থাকে তাহলে বলেন যে, বাড়ছে।’

‘ডেইলি বেসিসে তো আর খেলাপি ঋণ বের করা যায় না। খেলাপি ঋণ বের করতে হলে ছয় মাস বা এক বছর লাগবে।’

বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে- জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর সঙ্গে আমরা ফলপ্রসূ আলোচনা করেছি। কার কী সমস্যা আমরা শুনেছি। তাদের একটা অভিযোগ হলো, আমরা প্রত্যেক বছর তাদেরকে আশ্বস্ত করি, কিন্তু ফাইনালি আমরা সেগুলো বাস্তবায়ন করি না। তবে এবার আমরা তাদেরকে বলেছি, আমরা এগুলো বাস্তবায়ন করব।’

‘আমাদের কথা হচ্ছে, কাউকে কষ্ট দেওয়া না। কাউকে কষ্ট না দিয়ে আমরা কীভাবে আমাদের রাজস্ব অর্জন করতে পারি। রেভিনিউ (রাজস্ব) আমাদের বাড়াতে হবে। কারণ সরকারের চাহিদা অনেক বেড়ে গেছে। আগামীতে চাহিদা আরও অনেক বাড়বে। সেটা মোকাবেলা করার জন্য রাজস্ব আহরণ ছাড়া আর কোনো হাতিয়ার নেই। রাজস্ব আহরণ করার জন্য আমরা যাব, তারা পরিশোধ করবে।’

অর্থন্ত্রী জানান বৈঠকে তারা ব্যসায়ীদের বলেছেন, সরকারের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে বে। ব্যবসায়ীরা সরকারের চাহিদা পূরণ করলে সরকার তাদের সহযোগিতা করবে।

‘আমরা একটা উইন উইন সিচুয়েশনে যাচ্ছি, তারাও জিতবে আমরাও জিতব। এই মানসিকতা নিয়ে আমরা বসেছিলাম।’

ব্যবসায়ীদের সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম বলেন, ‘আমরা দেশের উন্নয়নের জন্য সরকারের সঙ্গে কাজ করতে চাই। আমাদের সমস্যাগুলো খুঁজে বের করবে সংস্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগুলো। আমরা ইজি ডুইং বিজনেসের কথা বলেছি। ইন্টারেস্ট রেট কমিয়ে আনার কথা বলেছি এবং করপোরেট ট্যাক্স রেট কমিয়ে আনার বিষয়ে বলেছি। অনেক জায়গা আছে যেখানে দুই-তিন বারও ট্যাক্স দিতে হয়।’

বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-বিডা, বাংলাদেশ ব্যাংক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, অর্থ বিভাগ, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড একচেঞ্জ কমিশন, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ, অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ, রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ, পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ অথরিটি, জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ, এফবিসিসিআই, ইন্সুরেন্স অ্যাসোসিয়েশেন, ঔষধ শিল্প সমিতি, ডিসিসিআই, এমসিসিআই, রিহ্যাব, ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন, লেদার গুডস অ্যান্ড ওয়ার ম্যানুফ্যাকচার্স অ্যাসোসিয়েশন, ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার, কোল্ড স্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন, প্লাস্টিক গুডস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, এগ্রো ফিড ইনগ্রেডিয়েন্টস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন, ঢাকা স্টক একচেঞ্জ, আইসিএমএবি, লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশন, আইসিএসবি, ডিএসই ব্রোকার অ্যাসোসিয়েশন অব পাবলিকলি লিস্টেড কোম্পানিজের প্রতিনিধিরাও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

অর্থনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

অর্থনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :