বাকসু নির্বাচনের দাবিতে সোচ্চার শিক্ষার্থীরা

আরিফিন তুষার, বরিশাল ব্যুরো
 | প্রকাশিত : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৯:০২

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের তোড়জোড় শুরুর পর বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজেও নির্বাচনের দাবিতে সোচ্চার হয়েছেন শিক্ষার্থীরা। ১৭ বছর ধরে ভোট না হওয়ায় হতাশার পাশাপাশি ক্ষোভও আছে তাদের মধ্যে।

এই কলেজের ছাত্রসংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠা পাওয়া বেশ কয়েকজন জাতীয় পর্যায়েও নিজের অবস্থান করে নিয়েছেন। কিন্তু দেড় যুগ ধরে নির্বাচন না হওয়ায় নেতা তৈরির প্রক্রিয়া কার্যত বন্ধ হয়ে গেছে।

বাকসু নির্বাচনে জয়ের পর জাতীয় পর্যায়ে যারা অবস্থান করে নিয়েছেন, তাদের মধ্যে আছেন আমির হোসেন আমু, জাহাঙ্গীর কবির নানক, বলরাম পোদ্দার, বিলকিছ আক্তার জাহান শিরিন, মাহাবুবুল হক নান্নু।

কলেজটিতে ২০০২ সালে নির্বাচনের আমেজ পেয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। নির্বাচনের দাবিতে কয়েক দিন ধরেই কলেজ প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি, বিক্ষোভসূচিসহ নানান কর্মসূচি পালন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। নির্বাচনের প্রশ্নে একমত কলেজ প্রশাসনও।

‘সত্য প্রেম পবিত্রা’ এই মূলমন্ত্র নিয়ে ১৮৮৯ সালে বিএম কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন প্রখ্যাত সমাজসেবক ও রাজনীতিবিদ অশ্বিনী কুমার দত্ত। ১৯৫২ সালে প্রতিষ্ঠা হয় বিএম কলেজ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (বাকসু)। এরপর থেকেই বিভিন্ন সময়ে সংঘটিত সব আন্দোলনের সম্মুখভাগে ছিলেন বিএম কলেজের শিক্ষার্থীরা। ধীরে ধীরে এটি দক্ষিণাঞ্চলের ছাত্ররাজনীতির অন্যতম কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। বাকসুর ভিপি, জিএস ও এজিএসরা জাতীয় রাজনীতিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছেন।

বাকসু নির্বাচন প্রসঙ্গে ছাত্র মৈত্রী বিএম কলেজ শাখার সভাপতি জয় চক্রবর্তী বলেন, ‘বাকসু নির্বাচন শিক্ষার্থীদের অধিকারের একটি জায়গা, যা শিক্ষার্থীদের ন্যায্য অধিকার ও দাবি আদায়ে সহায়ক ভূমিকা রাখে। বাকসু না থাকায় ক্যাম্পাসে শিক্ষা ও অধিকারের সুষ্ঠু পরিবেশ হারিয়ে গেছে। আমরা চাই অচিরেই সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি বাকসু নির্বাচন হোক।’

ছাত্র ইউনিয়ন বিএম কলেজ শাখার সভাপতি কিশোর কুমার বালা বলেন, ‘আমরা আগামী তিন মাসের মধ্যে বাকসু নির্বাচন চাই। তার আগে ভোটার তালিকা হালনাগাদ ও গঠনতন্ত্রের সংশোধন করতে হবে। এ নিয়ে চলতি সপ্তাহের মধ্যেই আমরা আন্দোলনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ মহানগর ছাত্রদলের সভাপতি হুমায়ুন কবির বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে এখানে ছাত্র সংসদ নির্বাচন না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা বঞ্চিত হচ্ছে। তাই শিক্ষার্থীরা ছাত্র সংসদের যে দাবি তুলেছে, তাতে আমরাও একমত।’

মহানগর ছাত্রলীগের নেতা অনিক সেরনিয়াবাত বলেন, ‘বাকসু নির্বাচন শুধু একটি ক্ষমতার লড়াই নয়, বরং এটি সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটি গণতান্ত্রিক অধিকারও।’ কলেজের অধ্যক্ষ শফিকুর রহমান সিকদার বলেন, ‘বর্তমানে নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ রয়েছে বিধায় আমরাও নির্বাচনের বিষয়ে ভাবছি। ঢাকসু নির্বাচনের পরে বাকসু নির্বাচন নিয়ে আমরা কলেজভিত্তিক ছাত্রসংগঠনগুলোর সাথে বসব।’

সরকারের পক্ষ থেকে দিকনির্দেশনার প্রয়োজন রয়েছে জানিয়ে অধ্যক্ষ বলেন, ‘আমরা চাই না নির্বাচনকে ঘিরে শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হোক। সুষ্ঠু-সুন্দর পরিবেশে বাকসু নির্বাচনের জন্য স্থানীয় রাজনীতিক, প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সহযোগিতাও প্রয়োজন।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

শিক্ষা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :