এক ক্লিকে মিলবে পোশাক কারখানার সব তথ্য

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ২২:১৬ | প্রকাশিত : ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ২১:৪৫

এখন থেকে ওয়েবসাইটে (https://rmg.org.bd/) জানা যাবে রপ্তানিমুখি তৈরি পোশাক কারখানার সব তথ্য। কারখানার অবস্থান, শ্রমিক সংখ্যা, উৎপাদন সক্ষমতা ও কোন ব্র্যান্ডের কাজ করে তা থাকবে ওয়েবসাইটে। এটি মূলত ক্রেতাদের সুবিধার্থে খোলা হয়েছে। তবে যে কেউ এখান থেকে তথ্য নিতে পারবে।

শনিবার কারওয়ান বাজারে বিজিএমইএ কার্যালয়ে ওয়েবসাইটটির উদ্বোধন করা হয়। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় ও সিএন্ডএ ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে ওয়েবসাইটি বানানো হয়েছে। বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর এতে সহায়তা করেছে। ‘ম্যাপড ইন বাংলাদেশ’ প্রকল্পের আওতায় প্রথম দফায় ঢাকা জেলাভিত্তিক পোশাক কারখানাগুলোর তথ্যসম্বলিত ডিজিটাল ম্যাপটি উদ্বোধন করা হয়।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। বিশেষ অতিথি ছিলেন এফবিসিসিআই সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, বিকেএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি মানসুর আহমেদ, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র পরিচালক আসিফ সালেহ, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শামসুজ্জামান ভূঁইয়া, প্রকল্পের টিম লিডার প্রফেসর ড. রহিম বি তালুকদার প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, গুগল ম্যাপের আদলে পোশাক খাতের বিশদ তথ্য নিয়ে ‘ডিজিটাল ম্যাপটি’ তৈরি করা হবে। প্রকল্পটি ২০১৭ সালের এপ্রিলে শুরু হয় শেষ হবে ২০২১ সালের মধ্যে। এ প্রকল্পের অধীনে ঢাকা জেলার রপ্তানিমুখি তৈরি পোশাক কারখানার গুরুত্বপূর্ণ প্রাথমিক তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে এবং অনলাইনে একটি ডিজিটাল মানচিত্রে তা প্রকাশ করা হয়েছে। শুরুতে ঢাকার সাভার, আশুলিয়া ও মিরপুরের পোশাক কারখানার যাবতীয় তথ্য পাওয়া যাবে। এতে কারখানার নাম, ঠিকানা, জিপিএস অবস্থান, শ্রমিক সংখ্যা, কারখানার উৎপাদিত পণ্য, পণ্য রপ্তানির দেশসমূহ, কারখানার সঙ্গে কাজ করা প্রধান ক্রেতা ও ব্র্যান্ডস, কারখানার সদস্যপদ, কারখানার সংশ্লিষ্টতা এবং কারখানার সনদ দেখা যাবে।

‘পোশাক খাতের সামান্য সমস্যা ফলাও করে প্রচার দুর্ভাগ্যজনক’

প্রধান অতিথির বক্তব্যে টিপু মুনশি বলেন, ‘ডিজিটাল ম্যাপিং খুবই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। তৈরি পোশাক খাতে প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিক আছে। একটা সমস্যা হলে সেটা এমনভাবে প্রচারিত হয় যেটা দুর্ভাগ্যজনক। তাই ডিজিটাল ম্যাপে শুধু ফ্যাক্টরির অবস্থান দেওয়ার পাশাপাশি এসব ব্যাপারও অন্তর্ভুক্ত করা দরকার।’

মন্ত্রী বলেন, ‘এত ফ্যাক্টরির মধ্যে একটি ফ্যাক্টরিতে সমস্যা হলে সেটাকেই বড় করে দেখায়। ৯৯ দশমিক ৯ ভাগ ফ্যাক্টরি যে ভালো আছে সেটা বলে না।’

কলকারখানা পরিদর্শক শামসুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন, ‘আমরা শ্রমিকদের স্মার্ট কার্ড দেয়ার চিন্তা করছি। এতে একজন শ্রমিক একটা কারখানা থেকে অন্য কারখানায় গেলে তার হিসাব থাকবে। পাশাপাশি তাদের ইনস্যুরেন্সের টাকা দেয়ার ক্ষেত্রে সহযোগিতা পাওয়া যাবে।’

বিজিএমইএর সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘সংবাদপত্রে প্রায়ই দেখি সাত হাজার শ্রমিক বেকার হয়েছে, পাঁচ হাজার শ্রমিক বেকার হয়েছে। এই তথ্যগুলো কোথায় পায় সেটাও জানি না। আমরা ফ্যাক্টরিতে খোঁজ নিয়ে তো চার হাজারও খুঁজে পাই না। কিন্তু ওনাদের কাছে সাত হাজার, আট হাজার তথ্য আসে। এখনও লিখতেই আছে, লিখতেই আছে। এতবড় একটা সেক্টর। যেখানে ৪৪ লাখ শ্রমিক ফরোয়ার্ড ও ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজ মিলালে প্রায় এক কোটি লোক কাজ করে। সেখানে তিন হাজার ২০০ ফ্যাক্টরি এখন চালু অবস্থায় আছে। দুইজন করে লোকের চাকরি গেলেও কিন্তু সাত হাজার হয়। সেইটা নিয়ে কত মায়াকান্না, কত কান্নাকাটি!’

সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘বায়াররা দাম না বাড়ালে এবং শ্রমিকরা আমাদের উৎপাদনশীলতা বাড়িয়ে সহযোগিতা না করলে আমরা কী করবো। আমি যদি দেখি আগামী মাসের বেতন দিতে পারবো না তখন তো আমাকে লোক কমিয়ে আনতেই হবে। আমি যখন বেতন দিতে পারবো না তখন আমাকে পুলিশ ধরে নিয়ে যাবে। সরকার আমাকে বিচারের আওতায় নেবে।’

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘যখন আমার এখানে কার্ড পাঞ্চ করে শ্রমিকরা চলে যায় এইটার আবার বিচার নেই। সেইজন্য আমি বলি সবদিকে বিচার-বিবেচনা করে সবার কথা বলাই উচিত।’

সিদ্দিকুর বলেন, ‘রানা প্লাজা ও তাজরীন দুর্ঘটনার পর অ্যাকর্ড-অ্যালায়েন্স সেফটি ইস্যুতে কাজ করেছে। পৃথিবীর মধ্যে সেইফেস্ট ইন্ডাস্ট্রি এখন বাংলাদেশ। কিন্তু আমরা যে কোটি কোটি ঢাকা খরচ করে ইন্ডাস্ট্রিকে সেইফ করলাম। শ্রমিকদের বেতন বাড়ালাম, সেই কথা কেউ বলছে না। আমাদের উপদেশ দেয়া হয় শ্রমিকদের ভালো রাখার জন্য। এখানে সিপিডির মোয়াজ্জেম সাহেব উপস্থিত আছেন। ওনারা যখন আমাদের এ উপদেশ দেন কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে ওনারা কেন বায়ারদের উপদেশ দেন না যে, তোমরা ফেয়ার প্রাইসটা দাও। আমি আশা করবো আপনারা যখন গবেষণা করবেন সেই গবেষণা উভয় পক্ষের জন্য করবেন। এক পক্ষের দিকে তাকিয়ে থাকবেন না।’

ব্যবসায়ী এই নেতা বলেন, ‘যে কাজ (শ্রমিক) করলো না সেই বেতন যে আমাদের দিতে হচ্ছে, সেইটার ব্যাপারে দেশে তো দেখলামই না বিদেশেও দেখলাম না কথা বলতে। দেশে শুধু সোচ্চার হবে আমরা এটা করেছি, ওটা করেছি। আবার এটাও বলবে, এটা আমাদের জাতীয় শিল্প, আমাদের গর্ব। আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নের চাবিকাঠি। সব চাবিকাঠি এক সঙ্গে গোল্লায় যায় যখন সামান্য কিছু হয়। জিনিসগুলো না গুলিয়ে আমার মনে হয় এখন একটা জায়গায় এসেছি, যেখান থেকে আমাদের সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। স্বার্থপরের মতো শুধু এক পক্ষ বললেই আমি লাভবান হই, সেই লাভটাকে না দেখে সবার লাভটাকে বিবেচনা করতে হবে।’

(ঢাকাটাইমস/০৯ফেব্রুয়ারি/জেআর/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

অর্থনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

অর্থনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :