‘ট্যানারি নাকি গ্যাছেগা, ঘেরান তো যায় নাই’

কাজী রফিক
 | প্রকাশিত : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৮:২০
হাজারীবাগ ট্যানারি স্থানান্তর হলেও গোপনে চলছে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান

হাজারীবাগে যেতেই চোখে পড়ছে ট্যানারির বর্জ্য। নাকে আসছে চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের গন্ধ। বেড়িবাঁধের পাশে জায়গায় জায়গায় ফেলে রাখা হয়েছে প্রক্রিয়াজাতকরণের পর উচ্ছিষ্ট অংশ। নির্দিষ্ট সময় পরপর পুড়িয়ে দেখা হচ্ছে চামড়ার অংশগুলো। চামড়া পোড়ার ধোঁয়া মিশে যাচ্ছে বাতাসে, ছড়িয়ে পড়ছে চারপাশে।

এসব বিষয় নিয়ে আক্ষেপ জানালেন পথচারী হায়দার মিয়া। ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আগেও ট্যানারি আছিল, গন্ধ আছিল। এহন তো ট্যানারি নাকি গ্যাছেগা। কই, ঘেরান (গন্ধ) তো যায় নাই। ওই পাশে (বেড়িবাঁধের সাথে) দ্যাহেন চামড়া পুড়তাছে।’

রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকা থেকে ট্যানারি বিদায় নিয়েছে গত বছরের মার্চে। তবে এখনো সেখানে রয়ে গেছে ট্যানারির বর্জ্য। আবার হরহামেশা বর্জ্য এনে ফেলা হচ্ছে হাজারীবাগ এলাকার বেড়িবাঁধ-সংলগ্ন মজা পুকুরে। তাই কারও কারও মতে, রাতের আঁধারে এখনো চালছে কয়েকটি ট্যানারি।

সরেজমিন হাজারীবাগ এলাকার বেড়িবাঁধ অংশে দেখা মিলেছে ট্যানারিতে কাজ করার পরে চামড়ার উচ্ছিষ্ট অংশ, যা ভ্যানগাড়িতে করে ফেলে যাওয়া হচ্ছে বেড়িবাঁধের পাশে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, প্রতিদিন প্রায় ১০ থেকে ২০টি ভ্যানগাড়িতে করে ট্যানারি থেকে আসা উচ্ছিষ্ট ফেলা হচ্ছে এই স্থানটিতে।

স্থানীয়রা জানান, কে বা কারা এসে এখানে ট্যানারি বর্জ্য ফেলে যায়, তা তারা জানেন না। আবর্জনা ফেলতে যাদের দেখা যায়, তাদের সবাই ভ্যানগাড়ির চালক বা দিনমজুর।

আজাহার আলী নামে এক পথচারী জানান, বাসাবাড়ির মধ্যেই বেশ কিছু ট্যানারি চলছে। আর সেখান থেকেই উচ্ছিষ্ট অংশগুলো এনে এখানে ফেলে যাচ্ছে। বলেন, ‘কারা ফালায় সবাই জানে। কেউ কিছু বলবে না। কেউ ঝামেলায় পড়তে চায় না।’

কয়েক দিনের জমা বর্জ্য যাতে বড় স্তূপে পরিণত না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখা হচ্ছে। বর্জ্য ফেলে তা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।

পরিবেশগত দিক থেকে বিচার করলে দেখা যায়, চামড়ার ধোঁয়া পরিবেশের সাথে মিশে বাতাসকে দূষিত করছে, যা পরিবেশ ও মানবদেহের জন্য হুমকিস্বরূপ।

এ বিষয়ে ২২ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী আসনের কাউন্সিলর আয়শা মোকাররমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সম্প্রতি স্থানীয় সংসদ সদস্য শেখ ফজলে নূর তাপসও অনেকগুলো জায়গা পরিদর্শন করেছেন। সমস্যা সমাধানে অতিসত্ত্বর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

‘জায়গাগুলো ভরাট করে সেখানে বাচ্চাদের জন্য খেলার মাঠ তৈরি করা হবে। তাহলে আর কেউ সেখানে ময়লা বা অন্য কোনো বর্জ্য ফেলতে পারবে না।’

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন বলেন, ‘ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন যেখানেই বর্জ্য আছে, তা পরিষ্কার করা হচ্ছে এবং হবে। হাজারীবাগ অংশে ট্যানারির বর্জ্য রয়েছে বিষয়টি নিয়ে পরিবেশ মন্ত্রণালয়কে কাজ করতে হবে।’

নগর কর্তৃপক্ষ কী করবে এমন প্রশ্নে এই কর্মকর্তা বলেন, ‘যেখানেই বর্জ্য থাকবে, সেখানেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমি আমার স্থানীয় কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে অবগত করে দিচ্ছি। খুব দ্রুতই সমস্যাটির সমাধান সবার নজরে আসবে।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

ডিএনসিসি কার্যালয় সরানোর মধ্য দিয়ে কারওয়ান বাজার স্থানান্তরের প্রক্রিয়া শুরু 

বিএসএমএমইউ উপাচার্যের দায়িত্ব নিলেন দীন মোহাম্মদ, বললেন ‘কোনো অন্যায় আবদার শুনব না’

সাত বিভাগে ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে

বাংলাদেশে মুক্ত গণতন্ত্র বাস্তবায়নে সমর্থন অব্যাহত থাকবে: যুক্তরাষ্ট্র

সীমান্তে নিহত দুই বাংলাদেশির লাশ ফেরত দিলো বিএসএফ

ট্রেনে ঈদযাত্রা: পঞ্চম দিনের মতো অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু

৫০ হাজার টন ভারতীয় পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন

চার বিভাগে নতুন অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার

শ্রমিকদের বেতন-বোনাস ঈদের আগেই, ছুটি সরকারি ছুটির চেয়ে কম নয়

সব ধরনের বৈষম্যের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সংবিধান শক্ত অবস্থানে রয়েছে: স্পিকার

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :