মাছের স্বাস্থ্যে নজর রাখবে ‘ডিজিটাল লগার’

রাকিবুল হাসান, বাকৃবি প্রতিবেদক
 | প্রকাশিত : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৮:৩৪

পানিতে অক্সিজেনের অভাব দেখা দিলে নানা রোগে আক্রান্ত হয় মাছ। আর এর বলি হয়ে প্রতি বছরই বিপুল অংকের লোকশান গুণতে হয় মৎস্যচাষীদের। পুকুরের তলদেশে মাছের স্বাস্থ্য বিষয়ে ঠিকঠাক নজর রাখা সম্ভব না হওয়ায় নিঃস্বও হয়েছেন অনেক চাষি। এ অবস্থায় মাছ চাষিদের জন্য সুখবর বয়ে এনেছে ‘ডিজিটাল লগার’ নামের বিশেষ এক যন্ত্র।

গবেষকরা বলছেন, বিশেষ এ যন্ত্রটি পুকুরে মাছের রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে আগাম খবর দেবে। ‘ডিজিটাল লগার’ এর দেয়া সেই পূর্বাভাস বিবেচনায় এনে ব্যবস্থা নিলে রোগ থেকে রক্ষা পাবে মাছ। এর ফলে বড় ধরনের ক্ষতির থেকে পরিত্রাণ পাবেন মাছ চাষিরা। এরই মধ্যে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা, তারাকান্দা এবং সদর মুক্তাগাছা উপজেলার কয়েকটি পুকুরে যন্ত্রটি পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করে মাছের সবশেষ অবস্থা সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা গেছে। ‘ডিজিটাল লগার’ ব্যবহার করে পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেনের সঠিক মাত্রা এবং সময়ের সঙ্গে এর পরিবর্তনের হার নির্ণয় করা গেছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।

‘ডিজিটাল লগার’ নিয়ে দীর্ঘ দিন গবেষণা করে আসছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল হক। যন্ত্রটির পরীক্ষামূলক ব্যবহারে সফলতা এসেছে জানিয়ে এ গবেষক ঢাকা টাইমসকে বলেন ‘পুকুরের পানিতে অক্সিজেনের মাত্রা শূন্যের কাছাকাছি গেলে মাছের স্বাভাবিকতা ব্যাহত হয়। এর ফলে মাছ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। এজন্য পুকুরে অক্সিজেনের মাত্রা ঠিক আছে কী না-তা জানা খুবই জরুরি। অক্সিজেনের মাত্রা সম্পর্কে সঠিক তথ্যটাই দেবে এ যন্ত্রটি। পুকুরের পানিতে ডিজিটাল লগার স্থাপন করলে তা প্রতি ১০ মিনিট পর পর অক্সিজেনের মাত্রা বিষয়ে তথ্য দেবে। এ তথ্যের ভিত্তিতে পুকুরে অক্সিজেনের সরবরাহ করাসহ যথাযথ ব্যবস্থা নিলে নানাবিধ রোগের আক্রমণ থেকে মাছকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।’

সম্প্রতি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘মাছের রোগের পূর্বাভাস নির্ণয় ও এর প্রশমনের উপায়’ শীর্ষক এক আন্তর্জাতিক কর্মশালাতেও ‘ডিজিটাল লগার’ বিষয়ে নানা তথ্য তুলে ধরেন দেশি ও বিদেশি গবেষকরা। বাংলাদেশ থেকে সংগ্রহকৃত মাছ, পুকুরের পানি ও কাদার বিভিন্ন নমুনার পরীক্ষাকৃত তথ্য ও হিস্টোলজিক্যাল ফলাফল তুলে ধরে তারা বলেন, মাছের সুস্থতার জন্য পুকুরের তাপমাত্রা, পিএইচ (অম্লীয়/ক্ষারীয় অবস্থা) এবং অক্সিজেনের নির্দিষ্ট মাত্রা অপরিবর্তিত রাখা খুবই গুরত্বপূর্ণ। এসব নির্ণায়কের কোন একটির স্বাভাবিক অবস্থার পরিবর্তন হলে মাছ সহজেই বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়। পুকুরের এসব নিয়ামক বিশেষ এ যন্ত্রটির মাধ্যমে খুব সহজেই নির্ণয় করা যায়। এর মাধ্যমে মাছের রোগের পূর্বাভাস জানা ও রোগ প্রশমন করা সম্ভব হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

শিক্ষা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিক্ষা এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :