রামসাগরের নীলগাই সঙ্গী পাওয়ায় বংশ বৃদ্ধির আশা

শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর
 | প্রকাশিত : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৫:২১

দেশে বিলুপ্তপ্রায় প্রাণী নীলগাই বংশ বিস্তারের সুযোগ এসেছে। দিনাজপুরের রামসাগর জাতীয় উদ্যানের স্ত্রী নীলগাইটি আকস্মিকভাবেই পেয়েছে একটি পুরুষ সঙ্গী।

ঠাকুরগাঁওয়ে উদ্ধার হওয়া মাদি নীলগাইটির বংশ বিস্তারে একটি সঙ্গী খুঁজছিল দিনাজপুর সামাজিক বন বিভাগ কর্তৃপক্ষ। কাকতালীয়ভাবে নওগাঁয় পাওয়া যায় ষাড় নীলগাইটি। সেটিতে এরই মধ্যে পাঠানো হয়েছে দিনাজপুরের রামসাগর জাতীয় উদ্যানে।

শুক্রবার রাতে রাজশাহী থেকে দিনাজপুরে নিয়ে আসা হয় নীলগাইটি। বিলুপ্ত প্রায় প্রাণী দুটি আকস্মিকভাবে মিলে যাওয়ায় এখন এর বংশবিস্তারের সুযোগ পেয়েছে দিনাজপুর সামাজিক বন বিভাগ কর্তৃপক্ষ।

দিনাজপুরের রামসাগর দীঘি জাতীয় উদ্যানে চার মাস থেকে অবস্থান করছে দেশের একমাত্র মাদি নীলগাইটি। ঠাকুরগাঁও এর রানীশংকৈল সীমান্তের কুলিক নদী ধার থেকে উদ্ধার হয় প্রাণীটি। এর গর্ভের বাচ্চা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল।

নীলগাই সর্বশেষ দেখা দিয়েছিল ১৯৪০ সালে। দেখা মিলেছিলো পঞ্চগড় জেলায়। এর মধ্যে গত ৪ সেপ্টেম্বর বিকালে ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈলের কুলিক নদীর ধারে পাওয়া যায় একটি প্রাণী। একে জবাই করে মাংস খাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল স্থানীয়রা। খবর পেয়ে স্থানীয় প্রশাসন প্রাণিটিকে উদ্ধারের পর হস্তান্তর করে দিনাজপুর সামাজিক বন বিভাগ কর্তৃপক্ষের।

প্রাণীটির গর্ভে বাচ্চা ছিল। ধরার সময় ধাওয়ায় প্রাণীটি আঘাতও পায়। আঘাতজনিত কারণে মুখ ও শরীরের বেশকিছু স্থানে ক্ষতের সৃষ্টি হয় প্রাণিটি। এতে গর্ভের বাচ্চাটি জীবিত প্রসব হলেও কিছুক্ষণ পর মারা যায়।

চিকিৎসা, যত্ম আর প্রয়োজনীয় নিয়মিত খাবার দেওয়ায় প্রাণীটি এখন সুস্থ সবল। আর বিলুপ্ত প্রজাতির প্রাণীটিকে দেখতে প্রতিদিন দর্শনার্থীরা ভিড় করছে প্রতিদিন।

এর মধ্যে ভারত থেকে একটি নীল ষাড় এনে এর বংশ বিস্তারের উদ্যোগ নিয়েছিল দিনাজপুর সামাজিক বন বিভাগ কর্তৃপক্ষ। জানিয়েছিলেন রামসাগর জাতীয় উদ্যানের তত্ত্বাবধায় রোটারিয়ার এ কে এম আব্দুস সালাম তুহিন।

এর মধ্যে কাকতালীয়ভাবেই গত ২২ জানুয়ারি পুরুষ প্রজাতির নীলগাইটি উদ্ধার হয় নওগাঁর মান্দা উপজেলায়। পরে দুটি প্রাণীকে একসঙ্গে রাখার সিদ্ধান্ত হয়।

শুক্রবার বিকালে রাজশাহী বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা জিল্লুর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে নীলগাইটি দিনাজপুর বন্য প্রাণি ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবদুর রহমান ও রামসাগর জাতীয় উদ্যানের তত্ত্বাবধায় রোটারিয়ার এ কে এম আব্দুস সালাম তুহিনের কাছে হস্তান্তর করেন।

রাজশাহী চিড়িয়াখানার ভেটেরিনারি সার্জন ফরহাদ উদ্দিন জানিয়েছেন, উদ্ধারের সময় পায়ে, পেটে ও রানের কাছে আঘাত পেয়েছিল নীলগাইটি। এতে শরীরের ওই স্থানগুলোতে ক্ষতের সৃষ্টি হয়। অ্যান্টিবায়োটিকসহ বেশ কয়েকটি ওষুধ প্রয়োগ পর সুস্থ হয়ে ওঠে প্রাণীটি।

দিনাজপুর বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আবদুর রহমান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘দুটি প্রাণীই প্রাপ্তবয়স্ক। তাই তাদের একসঙ্গে রাখা হয়েছে। স্বাভাবিক নিয়মেই প্রজননের মাধ্যমে বংশবিস্তার ঘটবে। ফলে বিলুপ্তপ্রায় এই বন্য প্রাণীর সংখ্যা দেশে আবার বাড়ানো যাবে।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :