ভোটে পরাজয়

‘সময় হারিয়ে’ আবার মামলার চিন্তা বিএনপিতে

প্রকাশ | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৮:৪৩

বোরহান উদ্দিন
ফাইল ছবি: বৈঠক করছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা

নির্বাচনী ফলাফলের বিরুদ্ধে ধানের শীষের পরাজিত প্রার্থীরা স্বাভাবিক নিয়মে মামলা করতে পারবেন না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা। কারণ, আইন অনুযায়ী ফলাফলের গেজেট প্রকাশের পর যে সময়ের মধ্যে মামলা করতে হয়, সেই সীমা এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে।

৩০ ডিসেম্বরের ভোটে অস্বাভাবিক রকমের কম ভোট এবং আসন পাওয়া বিএনপি নির্বাচনের পরপর মামলার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কথা হয়েছিল, পরাজিত প্রার্থীরা নিজ নিজ আসনের ফলাফলের বিরুদ্ধে মামলা করবেন।

নির্বাচনের ফলাফলের গেজেট প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে এই মামলার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ৩ জানুয়ারি প্রকাশ হয়েছিল এই গেজেট। গত ২ ফেব্রুয়ারি এই সময় শেষ হয়ে গেছে। তবে শনিবার বিএনপির পরাজিত ৩০ থেকে ৪০ জন প্রার্থীর সঙ্গে স্কাইপ আলাপনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে মামলার কথা বলেন। যদিও গতকাল বিএনপির মুখপাত্র রুহুল কবির রিজভী জানান, এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত নয়।

বিএনপির শরিক ঐক্যফ্রন্টের কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ আর ২০ দলের এলডিপি এরই মধ্যে মামলা না করার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে। আর গণফোরামের সুব্রত চৌধুরী মামলা করলেও তার দলের অন্য কেউ মামলা করেছেন কি না, সেটা জানাতে পারেননি।

মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েও না করার বিষয়ে জোটের নেতারা ঢাকা টাইমসকে বলেছিলেন, পক্ষে রায় পাওয়া যাবে বলে তারা মনে করেন না। আর সে ক্ষেত্রে এই নির্বাচন বৈধতা পেয়ে যাবে।

মামলার সুযোগ কোথায়?

নির্বাচন কমিশনে নির্বাচন পরিচালনা শাখার যুগ্ম সচিব ফরহাদ আহাম্মদ খান জানান, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ভোটে অনিয়মের অভিযোগে নির্বাচন কমিশনের ট্রাইব্যুনালে মামলা করার সুযোগ নেই। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও)-১৯৭২ সংশোধন করে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল গঠনের বিধানটি ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালেই তুলে দেওয়া হয়েছে।

এ ক্ষেত্রে উপায় ছিল হাইকোর্টে যাওয়া। আরপিওর পঞ্চম অধ্যায়ের ৪৯ থেকে ৭২ দফায় বলা হয়েছে, যেকোনো নির্বাচনী অনিয়ম নিয়ে হাইকোর্টের একটি আলাদা বেঞ্চে পিটিশন দায়ের করা যাবে। হাইকোর্ট ছয় মাসের পিটিশন নিষ্পত্তির ‘চেষ্টা’ করবে।

পিটিশন দায়েরকারী হাইকোর্ট থেকে সুবিচার পাননি মনে করলে আদেশের বিরুদ্ধে ৩০ দিনের মধ্যে আপিল বিভাগে আপিল করতে পারবেন। তবে এর আগে লিভ টু আপিলের অনুমতি পেতে হবে।

বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকনও ৩০ দিনের মধ্যে মামলা করার বাধ্যবাধকতার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে তার মতে সুযোগ এখনো রয়ে গেছে। ঢাকা টাইমসকে তিনি বলেন বলেন, ‘এক মাস পার হলেও মামলা ফাইল করতে আমাদের সমস্যা নেই। কারণ, বিলম্ব হলে তখন বিলম্ব মার্জনার একটা বিষয় আছে সেটা উল্লেখ করতে হবে। বাকি সিদ্ধান্ত আদালত দেবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে নোয়াখালী-১ আসন থেকে পরাজিত এই প্রার্থী বলেন, ‘আমরা তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করছি। সময়মতো করা যেত মামলা যদি কাগজপত্র পাওয়া যেত। বিলম্ব মার্জনার জন্য এটাই তো বড় কারণ। কারণ আমাদের কাপজপত্র দেওয়া হয়নি যথাসময়ে।’

জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘এটা সম্পূর্ণ আদালতের বিষয়। কেউ চাইলে নির্বাচনের এক মাসের মধ্যে মামলা করলে স্বাভাবিকভাবেই করতে পারতেন। কিন্তু এখন মামলা করলে তাদের আদালত থেকে অনুমোদন পেতে হবে।’