মেহেরপুরে ব্লাস্টের আক্রমণের মধ্যেই বাড়ছে গম চাষ

প্রকাশ | ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৮:৪৮

মেহেরপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস

দূর থেকে দেখে মনে হবে জমিতে গম পেকে গেছে। আসলে একটি গমের শিষেও দানা নেই। শিষের সঙ্গে শুকিয়ে যাচ্ছে গাছও। গমগাছের এই অবস্থা ব্লাস্ট রোগের আক্রমণে। মেহেরপুরে এবারও গমের খেতে ব্লাস্ট শনাক্ত হয়েছে।

এবার নিয়ে টানা চার বছর ব্লাস্ট আক্রান্ত হলো মেহেরপুরের গমখেত। কৃষি বিভাগের তৎপরতার পরও থামানো যায়নি এই রোগ। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষক। তবে গমের চাষ কমেনি। গতবারের চেয়ে দুই হাজার হেক্টর বেশি জমিতে এবার চাষ হয়েছে গম।

কৃষি বিভাগের তৎপরতার মধ্যেই চলতি মৌসুমে ব্লাস্টের আক্রমণ হলো। দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে পুরো খেতে। বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক প্রয়োগ করেও প্রতিকার মিলছে না।

গত চার বছর ক্ষতির মুখে পড়ায় অনেক কৃষককে গম চাষে নিরুৎসাহিত করছে কৃষি বিভাগ।

তবে প্রয়োজনের তাগিদে প্রতি বছর গম চাষ করছেন কৃষকরা। অনেক কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কেউ কেউ ভালো ফলন পাচ্ছেন। গম চাষের আগে বিভিন্নভাবে ব্লাস্ট প্রতিরোধে কৃষকদের পরার্মশ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ। সরবরাহ করা হয়েছে লিফলেটও।

চলতি মৌসুমে জেলায় প্রায় ৮ হাজার হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়েছে, যা গত বছরের চেয়ে দুই হাজার হেক্টর বেশি।

গাংনী উপজেলার বাঁশবাড়িয়া গ্রামের কৃষক হযরত আলীর সব জমিতে ব্লাস্ট রোগ ছড়িয়েছে। তিনি বলেন, ‘গম চাষের জন্য সার-বিষ সব দিয়েছি। গমও খুব ভালো হয়েছিল। শিষ বেরোনোর শুরুতে একটি দুটি থেকে সব জমিতে ছড়িয়ে গেছে ব্লাস্ট। এখন আর কিছুই করার নেই।’

একই গ্রামের কৃষক মন্টু মিয়া কয়েক বছর ধরে গমে ব্লাস্ট রোগের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এবার প্রথম দিকে তার গমখেতে কোনো রোগ ছিল না। ব্লাস্ট হওয়ার আগেই ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করা হয়েছিল। কিন্তুু তাতেও কাজ হয়নি। এখন ব্লাস্ট লেগে গেছে। তিনি বলেন, ‘শুধু আমার না, অনেকের জমিতে এই রোগ দেখা দিয়েছে।’

তবে শিষ বের হওয়ার সময় যারা জমিতে ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করেছে তাদের ক্ষতি হয়নি বলে জানান জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মো. আখতারুজ্জামান। তিনি জানান, অন্যান্য বছরের মতো এবারও ব্লাস্ট লেগেছে। যারা সময়মতো ছত্রাকনাশক প্রয়োগ করেনি তাদের ক্ষতি হয়েছে।

ফসলের খেতে ব্লাস্ট একধরনের ছত্রাকজাতীয় রোগ। ২০১৬ সালে দেশে প্রথম মেহেরপুরে গমখেতে হুইট ব্লাস্ট রোগ শনাক্ত করে স্থানীয় কৃষি বিভাগ।

(ঢাকাটাইমস/১১ফেব্রুয়ারি/মোআ)