এবার পিডিবি নিজেই গাড়ি দিয়ে গেল দুদকে

সিবিএ সভাপতি জহিরুল ইসলাম চৌধুরী গাড়িটি অবৈধভাবে ব্যবহার করছিলেন

এবার বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) নিজ উদ্যোগে দুদকে জমা দিয়ে গেল অবৈধভাবে ব্যবহৃত একটি পাজেরো জিপ। পিডিবির অবসরপ্রাপ্ত সহকারী হিসাবরক্ষক ও সিবিএ সভাপতি জহিরুল ইসলাম চৌধুরী গাড়িটি অবৈধভাবে ব্যবহার করছিলেন।

মঙ্গলবার সকালে পিডিবির কর্মকর্তারা সিলেট মেট্রো-ঘ-০২-০০৩৩ নম্বরের পাজেরো গাড়িটি দুদকের প্রধান কার্যালয়ে দিয়ে যান। গাড়িটি দুদকে চালিয়ে নিয়ে যান চালক ফিরোজ।

দুদকের মহাপরিচালক মোহাম্মদ মুনীর চৌধুরী ঢাকাটাইমসকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

এর আগে গতকাল সোমবার পিডিবির অবসরপ্রাপ্ত স্টেনো টাইপিস্ট ও সিবিএর সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন মিয়ার প্রায় ১০ বছর ধরে ব্যবহৃত সরকারি একটি পাজেরো গাড়ি রাজধানীর মতিঝিল এলাকা থেকে উদ্ধার করে দুদকের অ্যানফোর্সমেন্ট দল।

তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী হয়েও জহিরুল ইসলাম ও আলাউদ্দিন মিয়া ১০ বছর ধরে ব্যবহার করে আসছিলেন গাড়িগুলো। এমনকি অবসরে যাওয়ার পরও গাড়িগুলো দখলে রাখেন তারা।

দুদক জানায়, এই গাড়িগুলোর তেল ও রক্ষণাবেক্ষণ খরচ বহন করছে পিডিবি।

জাতীয় বিদ্যুৎ শ্রমিক লীগের (বি-১৯০২) বর্তমান সভাপতি জহিরুল ইসলাম চৌধুরী ২০১৮ সালের ৬ জুন অবসরে যান। তখন তিনি পিডিবির অডিট পরিদপ্তরের সহকারী হিসাবরক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে পিডিবির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী খালেদ মাহমুদের কাছে লিখিত অভিযোগ করলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে।

প্রায় দেড় বছর আগে ২০১৭ সালের আগস্টে অবসরে যান সাবেক স্টেনো টাইপিস্ট ও সিবিএর সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন মিয়া। তিনি তখন পিডিবির নকশা ও পরিদর্শন পরিদপ্তরের স্টেনো টাইপিস্ট পদে ছিলেন। গত বছরের আগস্টে তার অবসরোত্তর ছুটির (পিআরএল) সময়সীমাও শেষ হয়।

দুদকের মহাপরিচালক মোহাম্মদ মুনীর চৌধুরী সাংবাদিকদের জানান, একটি অভিযোগের ভিত্তিতে আলাউদ্দিন মিয়ার দখলে থাকা গাড়িটি উদ্ধার করা হয়। গাড়ি উদ্ধারের সময় এর চালক ছাড়া কেউ ছিলেন না। চালকের বক্তব্য রেকর্ড করে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।

গাড়িটি পিডিবির নামে বরাদ্দ থাকলেও ওই কর্মচারী কোনোভাবেই ব্যবহার করতে পারেন না বলে জানান দুদক মহাপরিচালক। তার পরও তিনি ২০১৭ সালে অবসরে গেছেন। গাড়িটির পেছনে প্রতি মাসে ৪৫০ লিটার তেল ব্যবহার হয়েছে; নয় বছরে তেল বাবদ ৩৫ লাখ টাকার বেশি অর্থ ব্যয় হয়েছে। এ ছাড়া এই সময়ে ৩৭ লাখ টাকা বেতন বাবদ ব্যয় হয়েছে গাড়ির চালকের পেছনে।

তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারীর নামে কীভাবে গাড়ি বরাদ্দ দেওয়া হলো, এর সঙ্গে পিডিবি বা অন্য কোনো অফিসের যারা জড়িত তা অনুসন্ধানের মাধ্যমে বেরিয়ে আসবে। সেই অনুসন্ধানের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান মুনীর চৌধুরী।

দুদকের সচিব দিলোওয়ার বখত সাংবাদিকদের বলেন, আলাউদ্দিন মিয়ার ব্যবহার করা গাড়িটি পিডিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গাড়িটি যেন যথাযথ ব্যবহার করা হয় সেই বিষয়ে তাদের বলা হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে দুদক সচিব বলেন, নিয়ম বহির্ভূতভাবে আরও যারা সরকারি গাড়ি ব্যবহার করছেন সে বিষয়ে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(ঢাকাটাইমস/১২ফেব্রুয়ারি/এসপি/মোআ)