অর্থ আত্মসাতে ইসলামী ব্যাংক কর্মকর্তার যাবজ্জীবন

প্রকাশ | ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৪:২৬ | আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৪:২৯

ফরিদপুর প্রতিবেদক

অর্থ আত্মসাতের দায়ে করা মামলায় ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের এক কর্মকর্তার যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে ফরিদপুরের বিশেষ জজ আদালত। এছাড়া তার অর্থদণ্ডও করা হয়।

দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম শামসুর রহমান। তিনি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলা শাখায় সহকারী কর্মকর্তা কাম ক্যাশ পদে কর্মরত ছিলেন।

বুধবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে ফরিদপুর বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. মতিয়ার রহমান এই আদেশ দেন। রায় ঘোষণার সময় দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন না।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ২০ মার্চ দুপুরে নামাজ পড়ার কথা বলে ব্যাংক থেকে বের হয়ে যান মতিয়ার রহমান। এরপর তিনি আর ব্যাংকে ফেরেননি। ওইদিন বিকালে ব্যাংকটির ব্যবস্থাপক মুন্সী রেজাউল রশিদ ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সহায়তায় অতিরিক্ত (ডুপ্লিকেট) চাবি দিয়ে ক্যাশ খুলে ক্যাশে ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা কম দেখতে পান।

এ ঘটনায় ওইদিনই ব্যাংকের ব্যবস্থাপক রেজাউল রশিদ শামসুর রহমানকে আসামি করে ডামুড্যা থানায় একটি মামলা করেন। পরবর্তীতে ২০১২ সালের ৩১ অক্টোবর মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব নেন দুর্নীতি দমন সমন্বিত ফরিদপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ সহকারী পরিচালক কমল চন্দ্র পাল।

তদন্তে দেখা যায় শামসুর রহমান ব্যাংকের সঞ্চয়ী হিসাব গ্রহীতা নূরজাহানের ৩০ হাজার টাকা, মতি ফকিরের ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা ও চাঁন মিয়ার ৩২ হাজার টাকাসহ মোট ২ লাখ ৩২ হাজার টাকা জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন।

২০১৩ সালের ৩১ জুলাই দুদকের উপসহকারী পরিচালক কমল চন্দ্র পাল গ্রাহক ও ব্যাংকের মোট ৪ লাখ ২ হাজার টাকা আত্মসাতের দায়ে ব্যাংকের সহকারী কর্মকর্তা (ক্যাশ) শামসুর রহমানকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র জমা দেন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. মজিবুর রহমান জানান, বুধবার আদালত দুটি ধারায় শামসুর রহমানকে দোষী সাব্যস্ত করে কারাদণ্ড ও আর্থিক দণ্ড দেন। এর মধ্যে ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে শামসুর রহমানকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৪ লাখ ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে তাকে আরও ৬ মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।

এছাড়া ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করে পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।

পিপি আরও জানান, শামসুর রহমানকে দুটি সাজা একইসঙ্গে ভোগ করতে হবে। তবে শামসুর রহমান ২০১২ সালের ২০ মার্চ থেকে পলাতক রয়েছেন। মামলা করার দিনই তাকে ব্যাংকের কর্মকর্তার পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়।

ঢাকা টাইমস/১৩ ফেব্রুয়ারি/প্রতিনিধি/এমআর