বাংলাদেশে ‘গণতন্ত্র রক্ষায়’ ট্রাম্পের কাছে আবেদন
বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে রক্ষার জন্য ট্রাম্প প্রশাসনকে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে মার্কিন কংগ্রেসের ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটি।
দেশটির গণতন্ত্রের 'নেতিবাচক গতি' নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে গত ১১ ফেব্রুয়ারি ঐ কমিটির সদস্যরা মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও এর কাছে এ বিষয়ে একটি চিঠি লিখেছেন। খবর বিবিসি বাংলার।
এই চিঠিতে ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগগুলোকে কংগ্রেসের সদস্যরা 'গণতন্ত্রের জন্য হুমকি' বলেও অভিহিত করেছেন।
কংগ্রেসের ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির প্রধান, এশিয়া ও প্যাসিফিক সাব কমিটির নেতৃবৃন্দসহ মোট ছয়জন কংগ্রেসম্যান ওই চিঠিতে সই করেন। এতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে গণতন্ত্রের নেতিবাচক গতি নিয়ে আমরা খুবই উদ্বিগ্ন। বিশেষ করে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতার অভাব রয়েছে বলে অভিযোগ আছে।’
‘গণতন্ত্রের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের যে আস্থা ও ধারাবাহিক সমর্থন তা বজায় রাখতে, বাংলাদেশে নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগের সমাধান জরুরি।’
গত ৩০ ডিসেম্বরের ভোটে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট যে ব্যবধানে জয় পেয়েছে তা রীতিমতো চমক জাগানিয়া। বিএনপির জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সাড়ে ১৩ শতাংশ ভোট আর আটটি আসন নিয়ে একেবারে তলানীতে অবস্থান করেছে।
যদিও ঐক্যফ্রন্ট এই ফলাফল মানছে না। তাদের অভিযোগ, আগের রাতে ভোট দিয়ে ব্যালট বাক্স ভর্তির পাশাপাশি ভোটের দিন ভোটারদের কেন্দ্রে ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়েছে। আর এই অভিযোগ এনে ঐক্যফ্রন্টের বিজয়ীরা সংসদে যোগ দেননি, এমনকি শপথও নেননি।
বিরোধীদের এমন অভিযোগের মধ্যেও বিশ্বের বহু দেশ থেকে বিজয়ী জোট মহাজোটের নেত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন জানিয়ে তার সরকারের সঙ্গে কাজ করার প্রত্যাশার কথা বলা হয়েছে। যারা অভিনন্দন জানিয়েছেন, তাদের মধ্যে ট্রাম্পও আছেন।
মার্কিন কংগ্রেসের ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘ইন্দো-প্রশান্ত অঞ্চলে গণতন্ত্র, আইনের শাসন এবং মানবাধিকার নিশ্চিত করা মার্কিন স্বার্থেই জরুরি এবং বাংলাদেশে নির্বাচনে অনিয়মের যে অভিযোগ আসছে, তা ওইসব স্বার্থের জন্য বিরাট হুমকি।’
চিঠিতে বাংলাদেশে গণতন্ত্র চর্চার দীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে উল্লেখ করে নির্বাচনের সময় ‘সংঘর্ষ, গণ গ্রেপ্তার এবং বাক-স্বাধীনতার ওপরে হামলার’ ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্র হতাশা প্রকাশ করেছে।
নির্বাচনের ফলাফল তুলে ধরে চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘সরকার দ্বারা নিয়োগকৃত নির্বাচন কমিশন সংসদ নির্বাচনকে বৈধ ঘোষণা করলেও আমরা (মার্কিন কংগ্রেস) বিশ্বাস করি অনিয়মের যেসব অভিযোগ উঠেছে তা গুরুত্বের সঙ্গে দেখা প্রয়োজন।’
সংবাদ মাধ্যমের রিপোর্টের বরাত দিয়ে ভোট গ্রহণ শুরুর আগেই কিছু জায়গায় ব্যালট বাক্স পূর্ণ দেখতে পাওয়ার ঘটনা, আওয়ামী লীগের ভোটকেন্দ্র দখলসহ বেশ কিছু অভিযোগের কথা উল্লেখ করা হয়েছে চিঠিতে।
বলা হয়েছে, ‘এমনকি নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য বাংলাদেশ সরকার বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়ন রয়েছে এমন পর্যবেক্ষকদের ভিসা দেয়নি।’
ঢাকাটাইমস/১৩ফেব্রুয়ারি/ডব্লিউবি