জানাতে হবে অর্থ পাচারকারীর নামও

খেলাপি ঋণের তালিকা চেয়েছে হাইকোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৮:২৬ | প্রকাশিত : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৫:৫৩

ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে যারা ফেরত দেননি এবং যারা বিদেশে অর্থ পাচার করেছে তাদের তালিকা চেয়েছে হাইকোর্ট। গত ২০ বছরের ঋণখেলাপি ও অর্থপাচারের এই তথ্য চেয়েছে উচ্চ আদালত।

এক আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বুধবার বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দিয়েছে।

হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে রিটটি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

শুনানি শেষে বিগত বছরগুলোতে ব্যাংক খাতে কী পরিমাণ অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে, তা নির্ণয়ে একটি শক্তিশালী কমিশন গঠনের জন্য কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চেয়েছেন দুই বিচারপতি।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ সব সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালককে এই জবাব দিতে বলা হয়েছে।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

গত এক দশক ধরেই ব্যাংকে খেলাপি ঋণ, ঋণের নামে অর্থ লোপাটের ঘটনায় তুমুল আলোচনা চলছে। এক দশকে বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রায় সব সূচক ঊর্ধ্বমুখী থাকলেও এই বিষয়টি বিব্রতকর হয়েছে সরকারের জন্য।

বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের সময় দেশে খেলাপি ঋণ ছিল ২২ হাজার কোটি টাকা। এখন সেটি ছাড়িয়েছে ৯৯ হাজার কোটি টাকা। একই সঙ্গে অবলোপন করা ঋণ দাঁড়িয়েছে ৩৭ হাজার কোটি টাকা।

খেলাপি ঋণের পাশাপাশি বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগও উঠেছে। যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেগ্রিটি-জিএফআই জানিয়েছে, গত ১১ বছরে মোট পাচার হয়েছে ৮ হাজার ১৭৫ কোটি ডলার। বর্তমান বাজারদরে এর মূল্যমান ৬ লাখ ৮৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। এই অর্থ পাচার হয়েছে আমদানি-রপ্তানিতে আন্ডার ও ওভার ইনভয়েসিং এর মাধ্যমে।

অর্থপাচার ও খেলাপি ঋণের রিটের শুনানিতে আদালত বলে, ‘সরকারি এবং বেসরকারি ব্যাংকে নিয়ম-নীতি মেনে ঋণ দেওয়ার কথা ছিল। যদি তা না-মানা হয়, যারা যারা ঋণ গ্রহণ ও অর্থপাচার করেছেন, তাদের তালিকা এবং তাদের আত্মসাৎ করা অর্থ উদ্ধার করে একটি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে হবে।’

ওই আত্মসাতের অর্থ দেশ কিংবা বিদেশের যেখানেই থাকুক না কেন, তা ফিরিয়ে আনতে কী কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে, তাও প্রতিবেদনে উল্লেখ করতে হবে।

একজন বিচারক বলেন, ‘সরকারি এবং বেসরকারি ব্যাংকিং খাতে এরইমধ্যে অর্থনৈতিকভাবে একটি নাজুক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এই পরিস্থিতি খুব দ্রুত বন্ধ করতে হবে। অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করে একটি শক্তিশালী জায়গায় নিয়ে আসতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’

‘শিক্ষা যেমন জাতির মেরুদণ্ড, অর্থ তেমনই একটি দেশের মেরুদণ্ড, যার ওপর দেশ দাঁড়িয়ে থাকে।’

গত ২৩ জানুয়ারি ব্যাংকিং খাতে অর্থ আত্মসাৎ, ঋণ অনুমোদনে অনিয়ম, প্রাইভেট ও পাবলিক ব্যাংকগুলোতে ব্যাংকঋণের ওপর সুদ মওকুফের বিষয়ে তদন্ত এবং তা বন্ধে সুপারিশ প্রণয়নের জন্য কমিশন গঠন করার অনুরোধ জানিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ পাঁচটি মন্ত্রণালয়ের সচিবদের একটি আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছিল।

নোটিশে সাত দিনের মধ্যে ব্যাংকিং খাতে অনিয়মের বিষয় তদন্ত ও প্রতিরোধে সুপারিশ প্রণয়নে ১৯৫৩ সালের ইনকোয়ারি কমিশন অ্যাক্টের অধীনে একটি কমিশন গঠনের অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু সেই নোটিশের কোনও সদুত্তর না পেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন মনজিল মোরসেদ।

ঢাকাটাইমস/১৩ফেব্রুয়ারি/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

আদালত বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

আদালত এর সর্বশেষ

সাউথ এশিয়ান ল' ইয়ার্স ফোরাম ন্যাশনাল ও ইন্টারন্যাশনাল চ্যাপ্টারের দায়িত্ব পুনর্বণ্টন

আদেশ প্রতিপালন না হওয়ায় চট্টগ্রামের ডিসি এসপিসহ চার জনকে হাইকোর্টে তলব

১১ মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগের শুনানি ২৯ জুলাই

২৮ দিন পর খুলল সুপ্রিম কোর্ট

ব্যবসায়ী নাসিরের মামলা: পরীমনিকে আদালতে হাজির হতে সমন জারি

বোট ক্লাব কাণ্ড: পরীমনির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন

সেই রাতে ৮৭ হাজার টাকার মদ খেয়েছিলেন পরীমনি, পার্সেল না দেওয়ায় তাণ্ডব

বোট ক্লাব কাণ্ড: প্রতিবেদন দিল পিবিআই, ব্যবসায়ী নাসিরের মামলায় ফেঁসে যাচ্ছেন পরীমনি?

ড. ইউনূসকে স্থায়ী জামিন দেননি শ্রম আপিল ট্রাইব্যুনাল

সদরঘাটে লঞ্চ দুর্ঘটনা: আসামিদের তিনদিনের রিমান্ড

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :