সংরক্ষিত নারী আসনেও আ.লীগে রাজনৈতিক বেশি

তানিম আহমেদ
| আপডেট : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৪:০৭ | প্রকাশিত : ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৮:৩৭

সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে এবার রাজনীতিতে অবদানকেই বেশি প্রাধান্য দিয়েছে আওয়ামী লীগ। সরাসরি রাজনীতিকের বাইরে মনোনয়ন পাওয়ার সংখ্যাটি কম। সে ক্ষেত্রেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই বিবেচনায় এসেছে পারিবারিক রাজনৈতিক ভূমিকার বিষয়টি।

৩০ ডিসেম্বরের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ক্ষেত্রেও এমনটি দেখা গেছে। এবার নৌকার মনোনয়ন পাওয়া সিংহভাগই সরাসরি রাজনীতি করে উঠে এসেছেন। ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে রাজনীতিতে এসেছেন কেবল ১৭ জন। ১০ জন আছেন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা। আটজন সাবেক সেনা কর্মকর্তা। ১২ জন চিকিৎসক। ২১ জন আছেন আইনজীবী। চিকিৎসক, অবসরপ্রাপ্ত সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা বা আইনজীবীদের মধ্যেও একটি অংশ ছাত্রজীবনে রাজনীতিতে জড়িত ছিলেন।

জাতীয় সংসদে সরাসরি ভোটের পাশাপাশি নারীদের জন্য ৫০টি আসন সংরক্ষিত রয়েছে। সরাসরি আসনের মতো ভোটের দাবি থাকলেও এখন পর্যন্ত সেটি উপেক্ষা হয়ে আসছে আর সংসদ সদস্যদের ভোটে নির্বাচিত হন সংরক্ষিত আসনের সদস্যরা। আর রাজনৈতিক দলগুলো জাতীয় নির্বাচনে তাদের আসনের অনুপাতে এই আসন পেয়ে থাকে।

একেকটি দল যাদের মনোনয়ন দেয়, তাদের নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত প্রায়। আগামী ৪ মার্চে হতে যাওয়া নির্বাচনে অবশ্য ভোটের প্রয়োজন পড়বে না। কারণ, আওয়ামী লীগ তার ৪৩ জন, জাতীয় পার্টি চারটি আর ওয়ার্কার্স পার্টি ও তিনটি স্বতন্ত্র প্রার্থীর বিপরীতে একজন করে মনোনয়ন জমা পড়েছে। এরই মধ্যে মনোনয়নপত্র জমার সময় শেষ হয়ে গেছে। ফলে এই ৪৯ জনের সবাই সংসদ সদস্য নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন, এটা নিশ্চিত। আর সংসদ সদস্য হিসেবে শপথ না নেওয়া বিএনপি নারী আসনে কাউকে মনোনয়ন দেয়নি।

এবার আওয়ামী লীগের হয়ে মনোনয়ন চেয়েছিলেন এক ঝাঁক চলচ্চিত্র তারকা বা পেশাজীবী বা বিশিষ্টজনদের স্ত্রী। কিন্তু আওয়ামী লীগ এবার বেছে নিয়েছে এমন নারীদের যারা সরাসরি রাজনীতিতে জড়িত।

আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া ৪৩ জনের মধ্যে ৩৩ জন সরাসরি রাজনীতিতে জড়িত। নয়জন সরাসরি রাজনীতি না করলেও তাদের বাবা বা স্বামীর ভূমিকা ছিল দলে। আর দুজন রাজনীতিতে জড়িত নন। এদের একজন সাংস্কৃতিক কর্মী আর একজন ব্যবসায়িক পরিবারের সদস্য।

দলের এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘এবার নারী আসনে সংসদ সদস্য পদে মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছেন। বিশেষ করে আন্দোলন-সংগ্রামে যেসব নারীর অংশগ্রহণ ছিল, তাদের এবার প্রধানমন্ত্রী মূল্যায়ন করেছেন। শুধু তাই নয়, দেশ, জাতি ও মুক্তিযুদ্ধে যেসব পরিবারের অবদান রয়েছে- যারা এতদিন বঞ্চিত ছিলেন, মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।’

রাজনীতিক যারা

দিনাজপুর থেকে মনোনয়ন পাওয়া জাকিয়া তাবাসসুমও তৃণমূল থেকে উঠে এসেছেন। যুব মহিলা দিনাজপুর জেলা শাখার প্রতিষ্ঠাতা যুগ্ম আহ্বায়ক তিনি। এরপর যুব মহিলা লীগের সহ-সভাপতি মনোনীত হন।

নীলফামারী থেকে মনোনীত রাবেয়া আলীম দীর্ঘদিন ধরেই রাজনীতি করে আসছেন। জেলা মহিলা লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি নীলফামারী মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যানের দায়িত্বেও রয়েছেন। তার স্বামী প্রয়াত আলিম উদ্দিন নীলফামারী-৪ আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।

রাজশাহী থেকে মনোনয়ন পাওয়া আদিবা আনজুম মিতা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। বর্তমানে তিনি রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে মনোনয়ন পাওয়া ফেরদৌসী ইসলাম জেসী ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে এসেছেন। ১৯৮৪-১৯৮৫ সালে নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজে বিএসসি পড়াশোনা চলাকালে ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। তার বাবা আ আ ম মেসবাহুল হক মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও ভাষা সৈনিক। তিনি প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য, ১৯৭৩ সালের নির্বাচনে জাতীয় সংসদ সদস্য ছিলেন। তিনি ১৯৭২ সালে প্রথম হস্তলিখিত সংবিধানে স্বাক্ষরকারীদের একজন।

পাবনা থেকে মনোনয়ন পাওয়া নাদিয়া ইয়াসমিন জলি মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি জেলা মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান পদের দায়িত্বেও রয়েছেন।

নাটোর থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন জেলা মহিলা লীগের সভাপতি রতœা আহমেদকে। তিনি সদর উপজেলার সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন।

খুলনা থেকে মনোনয়ন পাওয়া গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে খুলনা-১ (দাকোপ-বটিয়াঘাটা) আসন থেকে আওয়ামী লীগের হয়ে প্রাথমিক মনোনয়ন ফরম কিনেছিলেন। ২০০৪ সালে শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় আহত হন। তিনি আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক উপকমিটির সদস্য ও কৃষক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন।

ঝিনাইদহ থেকে মনোনীত খালেদা খানম ছাত্র রাজনীতি করে উঠে এসছেন। ২০০৫ সাল থেকে তিনি ঝিনাইদহ মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করে আসছেন। সরাসরি আসনে নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন চেয়েও পাননি। খালেদা ছাত্রলীগ ও যুব মহিলা লীগের বিভিন্ন স্তরে রাজনীতি করেছেন।

বরিশাল থেকে মনোনীত সৈয়দা রুবিনা মিরা ছাত্র রাজনীতির মাধ্যমে রাজনীতিতে হাতেখড়ি। তিনি ছাত্রলীগের তৃণমূল থেকে উঠে এসেছেন। তিনি ১৯৮৮ সালে ৪২ নং ওয়ার্ড ছাত্রলীগের মহিলা সম্পাদক ছিলেন। এরপর মোহাম্মদপুর থানা ছাত্রলীগের মহিলা সম্পাদক, ঢাকা মহানগর ছাত্রলীগের মহিলা সম্পাদক ছিলেন। তিনি যুব মহিলা লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন।

পটুয়াখালী থেকে মনোনীত কাজী কানিজ সুলতানা জেলা মহিলা লীগের সভাপতি। তিনি ছাত্র রাজনীতি করে উঠে এসেছেন। পটুয়াখালী সরকারি কলেজের এজিএস ছিলেন।

ময়মনসিংহ থেকে মনোনীত মনিরা সুলতানাও তৃণমূল থেকে উঠে এসেছেন। তিনি মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজের ভিপি ছিলেন। যুব মহিলা লীগ ময়মনসিংহ জেলা শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদকও তিনি। বর্তমানে তিনি জেলা আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক। ছিলেন ভালুকা উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান। তার বাবা প্রয়াত মোস্তফা এম এ মতিনও ছিলেন সংসদ সদস্য।

নেত্রকোনা থেকে মনোনয়ন পাওয়া জাকিয়া পারভীন খানম ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ছিলেন। তার স্বামীও রাজনীতিতে জড়িত। তিনি আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নেত্রকোনা-৫ আসনে মনোনয়ন চেয়েছিলেন। তবে নবম ও দশম সংসদের সদস্য ওয়ারেসাত হোসেন বেলালকেই মনোনয়ন দেওয়া হয়।

একই জেলা থেকে মনোনীত আরেক জন হাবিবা রহমান খান (শেফালী) জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তার গোটা পরিবারই রাজনীতিতে জড়িত। শেফালীর বাবা ফজলুর রহমান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন।

জামালপুর থেকে মনোনীত হোসনে আরা ইসলামপুর উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংস্কৃতিকবিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি কৃষক লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদকও।

ঢাকা থেকে মনোনয়ন পাওয়া শবনম জাহান শীলা সরাসরি রাজনীতিতে জড়িত বহু বছর ধরেই। তিনি বর্তমানে ঢাকা মহানগর উত্তর মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

রাজধানী থেকে মনোনয়ন পাওয়া আরেক নেত্রী জিন্নাতুল বাকিয়াও রাজনীতিতে জড়িত। তিনি মহিলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নির্বাচিত নারী কাউন্সিলর।

গাজীপুর থেকে মনোনীত শামসুন্নাহার ভূঁইয়া মহিলা শ্রমিক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি শ্রমিক সংগঠন করে আসছেন।

মুন্সীগঞ্জের ফজিলাতুন নেসা আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক। তিনি আওয়ামী লীগের টানা তিন মেয়াদেই সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য হতে যাচ্ছেন।

নরসিংদী তামান্না নুসরাত বুবলী জেলা আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক। তার স্বামী প্রয়াত লোকমান হোসেন নরসিংদীর পৌরসভার মেয়র ছিলেন। দলীয় কার্যালয়ে ২০১১ সালে খুন হন তিনি।

টাঙ্গাইল থেকে মনোনয়ন পাওয়া মমতা হেনা লাভলী জানান, তিনি ১৯৮৭ সালে কুমুদিনী সরকারী মহিলা কলেজের জিএস ছিলেন। এ ছাড়াও জেলা ছাত্রলীগের ছাত্রীবিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন্নাহার হল শাখা ছাত্রলীগের ছাত্রীবিষয়ক সম্পদকের দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে তিনি যুব মহিলা লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন।

গোপালগঞ্জ থেকে মনোনীত নার্গিস রহমানও সরাসরি রাজনীতিতে জড়িত। তিনি ঢাকা মহানগর দক্ষিণ মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক।

মাদারীপুরের তাহমিনা বেগম ১৯৭৯ সাল থেকে কালকিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলেন। বর্তমানে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। কালকিনি সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যানও ছিলেন এ নারীনেত্রী।

রাজবাড়ী থেকে মনোনয়ন পাওয়া খোদেজা নাসরীন আক্তার হোসেন যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। ২০১৪ সালে নির্বাচনকালীন দুর্বৃত্তদের পেট্রল বোমায় আহত হয়েছিলেন।

সুনামগঞ্জ থেকে মনোনীত শামীমা আক্তার খানম কৃষক লীগের মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক। এর আগে তিনি জামালগঞ্জ উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

মৌলভীবাজার থেকে মনোনয়ন পাওয়া সৈয়দা জোহরা আলাউদ্দিন জেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক। জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি জেলা মহিলা সংস্থার সাবেক চেয়ারম্যান। ছাত্রলীগের রাজনীতি করতেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে মনোনয়ন পাওয়া উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। তার স্বামী এ কে এম ইকবাল আজাদ ব্রাহ্মবাড়িয়ার জনপ্রিয় নেতা ছিলেন। ২০১২ সালে খুন হন তিনি। এরপর রাজনীতিতে সক্রিয় হন নাজমা। ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল) আসন থেকে। কিন্তু পরে আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয়া হয়। একাদশ সংসদ নির্বাচনেও তিনি দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন।

কুমিল্লা থেকে মনোনীত আঞ্জুম সুলতানা সীমা কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে বিএনপির প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয়েছিলেন। তিনি কুমিল্লার বর্ষিয়ান রাজনীতিক আফজল খানের মেয়ে। তৃণমূল রাজনীতি করে উঠে এসেছেন।

টানা ১৬ বছর কুমিল্লা পৌরসভা ও সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর এবং প্যানেল মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সীমা। কুমিল্লা পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৯ সালে তিনি জেলার আদর্শ সদর উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে জয়লাভ করেন। তিনি কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি।

একই জেলা থেকে মনোনয়ন পাওয়া আরেক জন আরমা দত্ত মানবাধিকার কর্মী ও মুক্তিযোদ্ধা। তিনি নিজের পরিচিয়েই পরিচিত। তার পরিবারেরও অবদান অনেক। তার দাদা ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত পাকিস্তান গণপরিষদে প্রথম বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি তোলেন। ১৯৭১ সালে তিনি পাকিস্তানি বাহিনীর হাতে শহীদ হন।

নোয়াখালী থেকে মনোনয়ন পাওয়া ফরিদা খানম সাকী একজন মুক্তিযোদ্ধা। তাঁর স্বামী মাহমুদুর রহমান বেলায়েত মুজিব বাহিনীর জেলা প্রধান ছিলেনএবং জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন।

চট্টগ্রাম থেকে মনোনয়ন পাওয়া খাদিজাতুল আনোয়ার ২০১৪ সালের নির্বাচনে চট্টগ্রাম-২ আসন থেকে মনোনয়ন পেয়েছিলেন। আসনটি ১৪ দলীয় জোটকে ছেড়ে দেয়ায় তিনি মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেন। তার বাবা প্রয়াত রফিকুল আনোয়ার এই আসনে আওয়ামী লীগের হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

বন্দরনগরী থেকে মনোনয়ন পাওয়া ওয়াসিকা আয়শা খানও রাজনীতিক। তিনি মহিলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। তার বাবা আতাউর রহমান কায়সারও ছিলেন আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা। ওয়াসিফা দশম সংসদেও সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ছিলেন।

কক্সবাজার থেকে মনোনয়ন পাওয়া কানিজ ফাতেমা আহমেদ ১৯৯৭ সাল থেকেই জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন। তাঁর স্বামী খান বাহাদুর মোস্তাক আহমেদ চৌধুরী কক্সবাজার জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান।

খাগড়াছড়ির বাসন্তী চাকমাও রাজনীতিতে জড়িত বহু বছর ধরে। তিনি জেলা মহিলা লীগের সাংগঠিক সম্পাদক এবং মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য।

রাজনৈতিক পরিবারের যারা

কুষ্টিয়া থেকে মনোনীত সৈয়দা রাশিদা বেগম গৃহিণী। তাঁর স্বামী প্রয়াত সৈয়দ নিজাম উদ্দীন মুক্তিযোদ্ধা ও মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।

বরগুনা থেকে মনোনীত সুলতানা নাদিরা বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য প্রয়াত গোলাম সবুর টুলুর স্ত্রী। সবুর টুলু নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে নির্বাচিত হন। ২০১৩ সালে সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি মারা যান।

পিরোজপুর থেকে মনোনীত শেখ এ্যানি রহমান শেখ হাসিনার স্বজন। তার স্বামী শেখ হাফিজুর রহমান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আপন চাচাতো ভাই। অ্যানির বাবা এনায়েত হোসেন খান পিরোজপুর-১ আসনের সাংসদ এবং জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন।

ঢাকা থেকে মনোনীত নাহিদ ইজহার খান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সাব-সেক্টর কমান্ডার নাজমুল হুদার মেয়ে। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর নভেম্বরের অভ্যুত্থান-পাল্টা অভ্যুত্থানে তিনি খালেদ মোশাররফ, এ টি এম হায়দারের সঙ্গে নিহত হন।

ঢাকা থেকে মনোনয়ন পাওয়া শিরীন আহমেদের স্বামী বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের প্রয়াত সভাপতি বজলুর রহমান। বিয়ের আগেই ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের সদস্য ছিলেন বলে জানিয়েছেন। তবে বিয়ের পরে রাজনীতিতে সক্রিয় ভূমিকা না রাখলেও স্বামীকে সহযোগিতা করেছেন বলে জানান ঢাকা টাইমসকে।

গাজীপুর থেকে মনোনীত রুমানা আলী টুসী আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য রহমত আলীর মেয়ে। রহতম আলী ১৯৭৯ সাল থেকেই আওয়ামী লীগের হয়ে নির্বাচন করে আসছেন। তবে বয়সের কারণে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাননি।

টাঙ্গাইল থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন অপরাজিতা হক সাবেক সংসদ সদস্য খন্দকার আসাদুজ্জামানের মেয়ে এবং একাত্তর টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সাংবাদিক মোজাম্মেল বাবুর স্ত্রী। একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি আসাদুজ্জামান। তাঁর ছেলে খোন্দকার মশিউজ্জামান চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।

ফরিদপুর থেকে মনোনীত রুশেমা বেগম রাজনীতি না করলেও তার পরিবার রাজনীতিতে জড়িত। তার প্রয়াত স্বামী ইমাম উদ্দিন আহমাদ ভাষা সৈনিক এবং মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন।

রাজনীতির বাইরে থেকে যারা

ঢাকা থেকে মনোনীত সুবর্ণা মুস্তাফার ক্ষেত্র রাজনীতি নয়। তিনি রূপালী পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী। অভিনয় জগতে বিশেষ অবদান রাখায় এ বছর একুশে পদকও পাচ্ছেন। তার বাবা প্রয়াত গোলাম মুস্তাফাও প্রখ্যাত অভিনেতা ছিলেন।

শরীয়তপুর থেকে মনোনয়ন পাওয়া পারভীন হক সিকদার রাজনীতিতে সক্রিয় নন। তাঁর বাবা সিকদার গ্রুপের জয়নুল হক সিকদার। তিনি আওয়ামী লীগপন্থী ব্যবসায়ী।

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

দেশ গরমে পুড়ছে, সরকার মিথ্যা উন্নয়নের বাঁশি বাজাচ্ছে: এবি পার্টি

বিএনপি নেতাকর্মীদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর প্রতিবাদ সালাম-মজনুর

নেতাকর্মীদের মুক্তির দাবিতে রাজধানীতে রিজভীর নেতৃত্বে মিছিল

মন্দিরে আগুন ও দুই শ্রমিক পিটিয়ে হত্যায় বিএনপির উদ্বেগ, তদন্ত কমিটি গঠন

প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছায় এদেশে আইনের প্রয়োগ হয়: রিজভী

দেশি-বিদেশি চক্র নির্বাচিত সরকারকে হটানোর চক্রান্ত করছে: ওবায়দুল কাদের

প্রতিমা পোড়ানোর মিথ্যা অভিযোগে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শাস্তি দিতে হবে: ছাত্রশিবির সভাপতি

আল্লামা ইকবালের ৮৫তম মৃত্যুবার্ষিকীতে মুসলিম লীগের আলোচনা সভা

সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যার প্রতিবাদ জানাল রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন

ভারতীয় পণ্য বর্জন চলবে: ফারুক

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :