ভার্চুয়াল ভালোবাসা!

প্রকাশ | ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০৮:৪৪ | আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১০:২৫

হাবিবুল্লাহ ফাহাদ

উনিশ শতকের আগেও বাঙালি নারীরা ছিলেন কেবল অন্তঃপুরে। স্বামী আর সংসার বৃত্তেই ছিল তাদের পৃথিবী। পরিবর্তন এলো ধীরে ধীরে। খোলস ছেড়ে বেরিয়ে এলো নারী। রামমোহন রায়, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের পৃষ্ঠপোষকতায় ইয়ং বেঙ্গলের নেতৃত্বে খুলে গেল নারী শিক্ষার বন্ধ দুয়ার। বাঙালির অন্তঃপুরে বইল নতুন চেতনার জোয়ার।

পণ্ডিতজন নীরদচন্দ্র চৌধুরী লিখেছেন, ‘...নূতন চক্ষে নূতনভাবে দেখিতে শিখিলামÑযেমন ঈশ^র, নরনারীর দৈহিক সৌন্দর্য, নরনারীর বিশিষ্ট ব্যক্তিগত সম্পর্ক।’

সৃষ্টির গোড়া থেকেই প্রেম-ভালোবাসা শব্দ দুটো জড়িয়ে আছে আমাদের জীবনের সঙ্গে। এই পৃথিবীর দীর্ঘপথ পরিক্রমা, তা-ও এই দুটো শব্দে ভর করেই। আদি মানব-মানবীর প্রেমেই আজকের এই বিপুলা পৃথিবী।

একটা সময় ছিল যখন প্রেম বলতেই ছিল অন্তঃপুরের বিষয়। কাউকে ভালোবাসি বলাটাও ছিল পাপ। ‘হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল’মন দহনে দহনে অঙ্গার হতো। বুক ফাটলেও মুখ ফুটতো না। জীবন প্রদীপ নিভে গেলেও প্রেম ছিল নিঃশেষিত। প্রেমের জন্য এমন কত আত্মদানের নজির, সাহিত্যে অনুষঙ্গ।

ভালোবাসার মানুষের জন্য বেদনা আর রক্তের অক্ষরে লেখা হতো চিঠি। রাত জেগে। পরচোখের আড়ালে। হৃদয় নিংড়ানো শব্দ ঝাঁপি খুলতো সন্তর্পণে। তারপর সেই চিঠি কাঙ্ক্ষিত মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া ছিল আরেক দুঃসাহসিক অভিযাত্রা। এটা যে খুব বেশি আগের কথা তা নয়। দেড় দশক আগেও প্রণয় এতটা দুঃসাহসিক হতে উঠতে পারেনি। ভাঙতে পারেনি সামাজিকতার দেয়াল।

পার্বতীর জন্য দেবদাসের দীর্ঘ অপেক্ষার যুগ শেষ। শিরি-ফরহাদের মতো অতৃপ্ত ভালোবাসার ইতিহাসও আর লেখা হবে না। প্রণয়-সঙ্গ এখন খুবই সহজ। চাইলেই প্রেম হয়। না চাইলেও হয়।

এই সময়ে প্রেম বা প্রণয় সম্পর্ক গড়া সহজ হলেও ভিত নড়বড়ে। বন্ধনও অতটা পোক্ত নয়। তাসের ঘরের মতো সম্পর্ক। এই আছে। এই নেই।

সহজ প্রেমের এই সুযোগ এনে দিয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি। বিজ্ঞানের কল্যাণে আরও অনেক কিছুর মতো এই সম্পর্কটাও হাতের কাছে এসেছে। মাধ্যম হয়েছে ফেসবুক, টুইটার, লিংকড ইন, ম্যাসেঞ্জার, হোয়াটসআপ, ভাইবার, ইমো, স্নাপচ্যাট, জি-প্লাস, ইনস্ট্রাগ্রাম ইত্যাদি কত কিছু।

প্রতিদিনই যোগাযোগের এই মাধ্যমগুলো সহজ থেকে সহজতর হচ্ছে। নিত্যনতুন সুবিধাজুড়ে দেওয়া হচ্ছে ব্যবহারকারীদের আকৃষ্ট করতে। ইন্টারনেট থাকলে তাই আর কিছুই প্রয়োজন হয় না। আপনি চাইলে যে কারো সঙ্গে, যেকোনো সময় কথা বলতে পারেন। পৌঁছে দিতে পারেন মনের কথা।

তরঙ্গের হাওয়ায় ভাসিয়ে মনের কথা পৌঁছে দেওয়া সহজ হলেও এটি বড় ধরনের অপরাধের পথও তৈরি করেছে। বাড়ছে প্রতারণা। জন্ম নিচ্ছে অবিশ্বাস। আলগা হচ্ছে পারিবারিক বন্ধন। দূরত্ব বাড়ছে নিকটজনের সঙ্গে। নষ্ট হচ্ছে সময়। তৈরি হচ্ছে সামাজিক অবক্ষয়। আত্মহত্যা, খুনের মতো ঘটনাও ঘটছে অহরহ।

ভার্চুয়াল এই প্রণয় জগৎ ঠুনকো করে দিচ্ছে অ্যাকচুয়াল সম্পর্ক। চাকচিক্য প্রিয় মানুষ, সুন্দরের পুজারি মানুষ বিশ্বাস হারাচ্ছে অন্তর্জালিক প্রতারণায়, যা বড় ধরনের বিপদও ডেকে আনছে সময়ে সময়ে।

যোগাযোগ সহজ হওয়ায় মানুষের মনের টানও কমে আসছে। আগে প্রিয়তমা বা প্রিয়তমর দেখা পাওয়ার জন্য যে উত্তেজনা বা হৃদয়ের টান অনুভূত হতো মানবহৃদয়ে তা এখন নেই বললেই চলে। কারণ চাইলেই মুহূর্তে ভিডিও কলে দেখে নিতে পারেন একে অন্যের মুখ।

ভার্চুয়াল এই সাক্ষাতে কিছু ক্ষেত্রে প্রিয়জনকে কাছে টানা গেলেও আত্মিক বন্ধনে ভাটা তৈরি করেছে। একটা উদাহরণ দিলে তা কিছুটা স্পষ্ট হবে। ধরুন আমরা যখন কারো সঙ্গে সামনাসামনি কথা বলি, তখন দুজনই দুজনের প্রতি মনোযোগী হই। তখন কথাবার্তা বা চিন্তাভাবনায় তৃতীয় কেউ আসতে পারে না। কিন্তু আমরা যখন ম্যাসেঞ্জার বা হোয়াটসঅ্যাপে কথা বলি, তখন একই সময়ে একাধিক জনের সঙ্গে আলাপ হয়। তখন আর মনোযোগ একমুখী থাকে না। একই সময়ে চিন্তাশক্তি এবং মনোযোগও ভাগ হয়ে যায়। এতে আলাপের গুরুত্বও অনেক ক্ষেত্রে কমে আসে বা আলাপে যতটুকু সম্পর্ক ঝালিয়ে নেওয়ার ইচ্ছে থাকে, তা আর হয়ে ওঠে না। এই ধরনের ভার্চুয়াল সম্পর্ক খুব বেশি দৃঢ় হয় না। দীর্ঘদিন একসঙ্গে পথচলাও সম্ভব হয় না।

ভার্চুয়াল এই জগতে সবচেয়ে বেশি উচ্চারিত শব্দ ‘ভালোবাসা’। তরুণ-তরুণীদের একটি বড় অংশ এই মোহে আবিষ্ট হয়ে আছে। তাদের কাছে মানব-মানবীর সম্পর্কে ভালোবাসা বা প্রেমই গুরুত্বপূর্ণ। এর বাইরেও যে কত রকম সম্পর্ক থাকতে পারে বা আছে, তা নিয়ে ভাবনা-চিন্তার সময় খুব একটা নেই কারো কাছে। বিজ্ঞানের উৎকর্ষের এই সময়ে নর-নারীর মধ্যকার প্রণয়ঘটিত উষ্ণতাই তরুণ মনকে বেশি স্পর্শ করতে পারে। দাগ কাটতে পারে গহিনে। আর তাই স্কুলজীবন থেকে প্রেম-প্রেম খেলা এখন খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্কুলপড়–য়া ছেলেমেয়েদের একসঙ্গে দেখলে অবাক হওয়ার মতো অনুভূতিও ভোঁতা হয়ে গেছে। যেন এটাই স্বাভাবিক।

বাল্যপ্রেম যে অতীতে ছিল না, তা নয়। তবে এখনকার বাল্যপ্রেমের সঙ্গে অতীতের তফাত বিস্তর। সংজ্ঞাটাও পাল্টেছে। এখন বাল্যপ্রেম বা অপরিণত বয়সের ভালোবাসা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিপদ ডেকে আনে। দাঁড় করিয়ে দেয় সামাজিক মূল্যবোধের বিরুদ্ধে। পত্র-পত্রিকায় এমন অসংখ্য ঘটনা আমাদের চোখ এড়ায় না।

ভার্চুয়াল এই যুগে চেহারায় গোঁফের রেখা জেগে ওঠার আগেই একাধিক সম্পর্কে জড়ানোর অভিজ্ঞতা অনেক বালকের আছে। আবার বালিকারাও এক্ষেত্রে কম যায় না। বাল্য বয়সে প্রেম বা ভালোবাসা নামক বন্ধন অনেকের জীবনে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতের জন্ম দেয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা এগিয়ে যাওয়ার পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়।

বাল্য বয়সের বাইরে প্রাপ্ত বয়স্করাও কি ভার্চুয়াল ভালোবাসার যুগে সঠিক সিদ্ধান্তটি নিতে পারেন? এ ক্ষেত্রে অনেক ব্যক্তিত্ববানের আচরণেও বালখিল্যতার প্রকাশ পায়। নষ্ট হয় তার সামাজিক অবস্থান। ভেঙে পড়ে পারিবারিক ও বন্ধুত্বের সেতু। অনেকে এই বেদনার ভার সইতে না পেরে জীবন থেকে পালিয়ে যান।

বিয়ের আগে এরকম সম্পর্ক যতটা না জীবনে ক্ষত তৈরি করে, বিয়ের পর তা হয় ভয়ংকর বিধ্বংসী। কারণ বিয়ের পর স্ত্রী রেখে পর-প্রমিলায় আসক্তি নিষিদ্ধ প্রেমেরই অংশ। ফরাসি সাহিত্যিক এমিল জোলার ‘তেরেসা’ উপন্যাসের চিত্রনে এমন একটি নিষিদ্ধ প্রেমের কাহিনিই ফুটে উঠেছে। স্বামী ক্যামিলাসের চোখ ফাঁকি দিয়ে লঁরার সঙ্গে তেরেসার প্রেম-সংসর্গ অন্যরকম এক অভিজ্ঞতায় পাঠককে হৃদ্ধ করে।

এই সমাজেও তেরেসার মতো এমন অনেক সম্পর্ক অন্তরালের যত্নে টিকে আছে। কোনোটা আবার প্রকাশ্যেও এসেছে। গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। এ ধরনের অসামঞ্জস্য ও ‘নিষিদ্ধ’ সম্পর্ক জীবন থেকে জীবন কেড়ে নিচ্ছে। তছনছ করে দিচ্ছে একটি পরিবারকে। অবক্ষয় ডাকছে সমাজে। তৈরি হচ্ছে অপরাধ প্রবণতা।

সম্প্রতি আলোচিত ঘটনা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক মোস্তফা মোরশেদ আকাশের আত্মহত্যা। অভিযোগ, স্ত্রী তানজিলা হক চৌধুরী মিতুর ‘পরকীয়া’ মেনে নিতে না পারায় আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন আকাশ। আত্মহত্যার আগে স্ত্রী মিতুর ‘বিয়ে বহির্ভূত’ অনেক সম্পর্কের খবর ফেসবুকের দেয়ালে লিখেছেন আকাশ। অনেকের সঙ্গে ‘অন্তরঙ্গ বন্ধুত্বের’ কয়েকটি ছবিও পোস্ট করেছেন তিনি, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ গণমাধ্যমেও বেশ আলোচনার খোরাক হয়েছে।

চিকিৎসকের আত্মহত্যার পেছনে এখন পর্যন্ত স্ত্রীর পরকীয়াই কারণ বলে মনে করা হচ্ছে। স্বামীর অভিযোগ ছিল, তার স্ত্রী বিয়ের পরও বিভিন্নজনের সঙ্গে প্রণয় সম্পর্ক রেখে চলছিলেন। এই থেকে তাদের পারিবারিক কলহ তৈরি হয়, যা শেষ পর্যন্ত করুণ পরিণতির দিকে পা বাড়ায়।

ভার্চুয়াল ভালোবাসার এই যুগে এ ধরনের অহরহ সম্পর্কের খবর আমাদের কানে আসে। চোখে পড়ে। এটি আসলে সম্ভব হয়েছে ভার্চুয়াল সহজলভ্যতার কারণে। মানুষ একা থাকতে পারে না, কথাটা যেমন সত্যি; তেমনি ভার্চুয়ালের এই সুবর্ণ সময়ে একা থাকাও কঠিন। একা মানুষের সঙ্গ দেওয়ার জন্য অনেকে বা অনেক মাধ্যমই খোলা আছে। যে কেউ চাইলেই বেছে নিতে পারে পছন্দের জন বা মাধ্যমকে।

এসব কারণে পারিবারিক ও দাম্পত্যজীবনে সন্দেহপ্রবণতাও জন্ম নেয়। সন্দেহ নামক এই ব্যাধি মানুষের জীবনে একবার ঢুকে গেলে তা ভয়াবহতায় রূপ নেয়, যা ক্যানসারের চেয়েও কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভয়াবহ।

ভার্চুয়াল যুগের ছেলেমেয়েরাও এসব সম্পর্কের ব্যাপারে উদাসীন। তারা প্রণয়কে জীবনযাত্রার অংশ বলেই মনে করে। এটি যে একেবারেই একান্ত বিষয়, তা আর ভাবনায় থাকে না। রাকঢাক না রেখেই নিজের এসব সম্পর্কের কথা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারেও পিছপা হয় না তারা। সময় বদলের সঙ্গে সঙ্গে সঙ্গীও বদল হয় তাদের। এটি যেন খুবই মামুলি ব্যাপার।

ভার্চুয়াল সম্পর্কে জড়িয়ে প্রতারিত হওয়ার ভূরিভূরি উদাহরণ আমাদের সামনে আছে। সম্প্রতি আলোচনায় আসা একটি ঘটনার কথা বলা যায়। ছেলেটির বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার নান্দাইল উপজেলার রাজাপুর গ্রামে। নাম আল আমিন। র‌্যাব তাকে গ্রেপ্তার করেছে প্রতারণার অভিযোগে। ফেসবুকে বিভিন্ন তরুণীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তাদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। মেয়েদের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে বিয়ের প্রলোভন দেখাতেন। নিজেকে মুঠোফোন অপারেটর প্রতিষ্ঠানের বড় কর্তা বলে পরিচয় দিতেন। প্রতারণার ফাঁদে ফেলে এমন অনেক মেয়ের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন তিনি। সবশেষে একটি মেয়ের কাছ থেকে প্রায় আট লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তারের পর উন্মোচিত হয় তার প্রতারক জীবন।

আল-আমিনের মতো এমন অনেক প্রতারক এই ভার্চুয়াল সম্পর্ককে পুঁজি করে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে। অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। হৃদয় ভাঙছে। নষ্ট করছে পারিবারিক বন্ধন।

ভালোবাসার অনুভূতি শুধু পাওয়ার মধ্যেই নয়, না পাওয়ার মধ্যেও জন্ম নিতে পারে। না দেখেও প্রেমে পড়া যায়। ভালোবাসা যায়। এমন একটি ঘটনা শোনা যাক। বাংলা সাহিত্যের উল্লেখযোগ্য কবি নবীনচন্দ্র সেনের বিয়ের জন্য মেয়ে ঠিক করা হলো। নাম লক্ষ্মী। উঠতে বসতে লক্ষ্মীর গল্প, তাকে দেখার আগেই তার প্রেমে পড়ে যান নবীন। সেই সময়ের কথা পড়ে লিখেছেন তিনি-“শুনিতে শুনিতে আমার ‘মনের কপাট’ খিল কব্জা ভাঙিয়া খুলিয়া গেল। Love at first sightÑ ‘প্রথম দর্শনে প্রেম’ তাহা তো শুনিয়াছ? কিন্তু Love at no sightÑ ‘অদর্শনে প্রেম’ কি কেহ শুনিয়াছ?... আমার পড়াশোনা একেবারে বন্ধ হইয়া গেল। ...দিনরাত্রি একই ভাবনা ‘কেমনে পাইব সই তারে?’

প্রিয়জন বা মনের মানুষের কাছে রাত জেগে লম্বা চিঠি লেখার দিন হয়তো আর কখনো ফিরে আসবে না। কিন্তু ভালোবাসা বা ভালোবাসার মানুষের জন্য অকৃত্রিম আবেগ কি একেবারেই ফুরিয়ে যাবে? ভার্চুয়াল জগতেও ফিরে আসুক নিখাদ ভালোবাসা। বন্ধ হোক প্রতারণা। প্রতারকদের হৃদয়ে জন্ম নিন প্রকৃত ভালোবাসা। ভালোবাসার জয় হোক।

লেখক : গল্পকার ও সাংবাদিক