বইমেলার মূল মঞ্চের আলোচনা টানে না পাঠকদের
অমর একুশে গ্রন্থমেলায় একাডেমি চত্বরে যে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা অনুষ্ঠান মন টানে না মেলায় আসা মানুষের। তবে একই মঞ্চে অনুষ্ঠিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে দর্শকের অভাব হয় না।
প্রতিদিন বিকালে বাংলা একাডেমি চত্বরের মূল মঞ্চে আয়োজিত হয় আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে আলোচিত বিষয়ের ওপর বক্তব্য দিতে আসেন বিশেষজ্ঞরা। আয়োজনও হয় পরিপাটি আর সুচারু। কিন্তু প্রতিদিনই দেখা যায় মঞ্চের সামনের দর্শনার্থী চেয়ারগুলোর বেশির ভাগ খালি পড়ে থাকে।
বিকালে আলোচনা অনুষ্ঠান শেষ হলে একই মঞ্চে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। তখন সব কটি চেয়ার পূর্ণ হয়ে পড়ে। অনেক দর্শক দাঁড়িয়েও অনষ্ঠান উপভোগ করেন।
কথা হয় মেলায় ঘুরতে আসা মোহাম্মদপুর সেন্ট জোসেফ স্কুলের দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী নাফিসের সঙ্গে। নাফিস জানেই না বইমেলার এমন আয়োজন সম্পর্কে। যদিও এমন আলোচনা বসে শোনার সময় বা ইচ্ছে তার নেই।
তবে সবাই নাফিসের মতো নয়। কেউ কেউ এই অনুষ্ঠানে নিয়ম করে আসেন। শোনেন আলোচকদের বক্তব্য। সেই সংখ্যাটা নেহাত হাতে গোনা। এমনই একজন রজত সেন। বয়স তার ৭০-এর কোঠায়। তিনি বলেন, ‘বইমেলায় প্রতিবছরই আসা হয়। এবারও কয়েকবার এসেছি। নতুন বই ঘুরে-ফিরে দেখে এখানে এসে খানিকটা আলোচনা শুনি। এখানে যেসব বিষয়ে আলোচনা হয় সেগুলো সমসাময়িক। তবে আলোচনা শুনতে তরুণদের কারোরই মন নেই। অথচ এসব আলোচনা তরুণদের শোনা উচিত।’
কিন্তু মূল মঞ্চোর আলোচনা অনুষ্ঠানে তরুণ-তরুণীদের উপস্থিতি খুব একটা দেখা যায় না। তাদের বেশির ভাগ পুকুড় পাড়ে আর নানা জায়গায় আড্ডায় বসে।
তরুণী আফরোজা বলেন, ‘এবারের মেলায় কয়েকবার এসেছি। দেখেছি এখানে আলোচনা হয়। কিন্তু কখনো শোনা হয়নি।’
এই বিষয়ে কথা হয় মেলা কমিটির সদস্যসচিব ড. জালাল আহমেদের সঙ্গে। তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘প্রতিবছর বইমেলায় আলোচনা অনুষ্ঠানে দর্শক-শ্রোতাদের আকর্ষণে আমাদের চেষ্টা থাকে। তথ্যকেন্দ্র থেকে অনুষ্ঠান সম্পর্কে জানিয়ে মেলায় আগত দর্শনার্থীদের মনোযোগ আকর্ষণ করা হয়। তারপরও আলোচনা অনুষ্ঠানে দর্শক কম হয়।’
বিষয়ভিত্তিক আলোচনা কিংবা প্রবন্ধ পাঠের অনুষ্ঠানে বরাবরই দর্শক-শ্রোতার উপস্থিতি কম হয় বলে জানান ড. জালাল। মূলত বইমেলায় যারা আসেন তাদের বেশির ভাগ বিশেষ একটা উপলক্ষ আর প্রয়োজনে আসেন। অনেকে অবশ্য বিভিন্ন গবেষণা বা তথ্য সংগ্রহের উদ্দেশ্যেও আসেন। তাদের একটা অংশ আলোচনা অনুষ্ঠানে যোগ দেন।’
(ঢাকাটাইমস/১৪ফেব্রুয়ারি/এজেড/মোআ)