ঠাকুরগাঁওয়ে বিজিবি-গ্রামবাসী সংঘর্ষ

বিজিবির মামলা প্রত্যাহার ও স্বজনদের মামলা নিতে মানববন্ধন

প্রকাশ | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৬:৫৬ | আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ২১:৪৯

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

হরিপুরের বহরমপুর গ্রামে বিজিবি ও গ্রামবাসীর সংঘর্ষে তিনজন নিহত ও ১৫ জন আহত হওয়ার ঘটনায় স্বজনদের লিখিত অভিযোগ গত তিন দিনেও মামলা হিসেবে নথিভুক্ত না করার অভিযোগ করেছে গ্রামবাসী। স্বজনদের মামলা নথিভুক্ত করা এবং বিজিবির দায়েরকৃত মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।

আজ রবিবার দুপুরে হরিপুর প্রেসক্লাবের সামনে স্থানীয় নাগরিক সমাজের ব্যানারে মানববন্দনে বক্তব্য দেন হরিপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জামাল উদ্দীন, আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম আলমগীর, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মিলন প্রমুখ।

বিজিবি-গ্রামবাসী সংঘর্ষের সময় গুলিতে নিহত কোচিং সেন্টারের শিক্ষক নবাব আলীর পিতা নজরুল ইসলাম, কৃষক সাদেক আলীর বড় ভাই আব্দুল বাসেদ এবং শিশু জয়নুলের বাবা নুর ইসলাম বাদী হয়ে গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ৫০ বিজিবির অধিনায়ক ও বেতনা বিওপির সদস্যদের আসামি করে পৃথক তিনটি মামলার লিখিত এজাহার দেন।

তবে হরিপুর থানার ওসি আমিরুজ্জামান গ্রামবাসীদের কোনো অভিযোগ পাননি বলে জানান।

অন্যদিকে ওই ঘটনায় নিহত দুজনসহ ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আর ২৫৯ জনকে আসামি করে গত বৃহস্পতিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে দুটি মামলা করেন বাকুয়া ইউনিয়েনের বেতনা বিজিবি ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার জিয়াউর রহমান।

মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, পুলিশ বিজিবির মামলা নিলেও নিহতদের স্বজনদের লিখিত এজাহার তিন দিনেও মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করেনি। গ্রামবাসীর ওপর যারা গুলি করেছে তাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার, আহতদের গ্রামবাসীদের সুচিকিৎসা, নিহতদের মামলা অবিলম্বে রুজু, বিজিবির মামলা প্রত্যাহার, স্থানীয় চোরাকারবারি ও লাইনম্যানদের গ্রেপ্তারসহ আট দফা দাবি জানানো হয় মানববন্ধনে।

এদিকে গুলিতে আহতদের মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে গ্রামবাসী। আহত সুয়েল রংপুর মেডিকেলে চিকিৎসাধীন। দিনাজপুর মেডিকেলে বাবু ও জয়গুন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে বলে জানান তারা।

গ্রামবাসী জানান, জেলা প্রশাসক ঘটনার দিন গত মঙ্গলবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আহতদের চিকিৎসার সব দায়িত্ব নেয়ার ঘোষণা দিলেও এখন পর্যন্ত গুলিবিদ্ধরা একটি টাকাও পায়নি। আহতদের প্রায় সবাই দরিদ্র দিনমজুর পরিবারের। টাকার অভাবে তারা চিকিৎসা করাতে পারছেন না। তাদের উন্নত চিকিৎসা না দিলে জীবন শঙ্কায় পড়বে।

গত মঙ্গলবার হরিপুর উপজেলার বহররমপুর গ্রামে চোরাই গরু জব্দ করতে গেলে বিজিবির সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় গ্রামবাসীর। বিজিবির দাবি, সংঘবদ্ধ গ্রামবাসীকে প্রতিরোধ করতে গিয়ে গুলিতে তিনজন মারা যায়। আহত হয় আরও অনেকে।

গ্রামবাসীর দাবি, তাদের বৈধ গরু জব্দ করে নিয়ে যেতে চাইলে তারা বাধা দিলে বিজিবি গুলি চালায়।

(ঢাকাটাইমস/১৭ফেব্রুয়ারি/মোআ)