দুই ছাত্রীকে ধর্ষণ-হত্যায় পুলিশ সদস্যসহ ২ জনের ফাঁসি

প্রকাশ | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ২০:০৮ | আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ২০:১৭

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রেমের ফাঁদে ফেলে দুই কলেজছাত্রীকে অপহরণ করে ধর্ষণ পরবর্তী হত্যা মামলায় এক পুলিশ সদস্যসহ দুইজনকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আদালত। ১১ বছর আগে চাঞ্চল্যকর এ মামলায় আরো ছয়জনকে চার বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। তবে দণ্ডপ্রাপ্তরা আদালত থেকে জামিন নিয়ে পলাতক রয়েছে।

রবিবার বিকালে কিশোরগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক কিরন শংকর হালদার এ রায় ঘোষণা করেন। একইসঙ্গে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত দুইজনকে এক লাখ টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলো- কিশোরগঞ্জ পুলিশ লাইনের কনস্টেবল মনিরুজ্জামান ওরফে হলুদ ওরফে সুজন। তিনি নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার হাট ব্যারেঙ্গা গ্রামের আ. ছোবানের ছেলে। আর ঝালকাঠির নলছিটি আমিরাবাদ কাওখিরা গ্রামের ফজলে আলী হাওলাদারের ছেলে শামীম হালদার ওরফে জহির। তারা আদালত থেকে জামিন নিয়ে পলাতক। চার বছর করে দণ্ডপ্রাপ্তরা হলো- দিলবর হোসেন, মো. মোস্তফা মীর ওরফে রানা, আবুল হোসেন, বাবুল মিয়া, জয়নাল আবেদীন ও কবির উদ্দিন।

সুমি ও উর্মির পরিবার রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করলেও আসামিরা পলাতক থাকায় অবিলম্বে তাদের গ্রেপ্তার করে সাজা কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, কিশোরগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী আফরোজা আক্তার সুমির সঙ্গে মোবাইলে প্রেমের সম্পর্ক হয় জেলা পুলিশ লাইনের কনস্টেবল মনিরুজ্জামান হলুদের। সুমি গাইটাল এলাকার আবু বাক্কারের মেয়ে। আর সুমির মাধ্যমে জহিরের প্রেমের ফাঁদে পড়ে সুমির বান্ধবী একই কলেজের শিক্ষার্থী তারপাশা গ্রামের নূরুন্নবীর মেয়ে আফরোজা আক্তার উর্মি।

২০০৮ সালের ১৬ জুলাই জমি লিখে দেয়া ও বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সুমি ও উর্মিকে কিশোরগঞ্জ থেকে অপহরণ করে ঢাকায় নিয়ে যায় কনস্টেবল মনিরুজ্জামান ও জহির। ওই দিন বিকালে কারওয়ান বাজারের ওয়েস্টার্ন গার্ডেন ইন্টারন্যাশনাল আবাসিক হোটেলের দুটি কক্ষে ধর্ষণের পর গলায় ওড়না পেঁচিয়ে কলেজছাত্রী সুমি ও উর্মিকে হত্যা করে মনিরুজ্জামান ও জহির।

পরে হোটেল কক্ষে তালা দিয়ে পালিয়ে যায় মনিরুজ্জামান ও জহির। হোটেলের ছয় কর্মচারী সবজির টুকরিতে করে তাদের মরদেহ কারওয়ান বাজার রেললাইনের কালভার্টের নিচে এবং তেজগাঁও রেলস্টেশনের বাম পাশের ডাস্টবিনে ফেলে দেয়।

এ ঘটনায় ২০০৮ সালের ২১ সেপ্টেম্বর সুমির বাবা আবু বাক্কার বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। মামলার তদন্ত করতে গিয়ে মোবাইলের সূত্র ধরে জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হয়।

তদন্ত কর্মকর্তা কিশোরগঞ্জ জেলা ডিবি পুলিশের ওসি মো. আমজাদ হোসেন তদন্ত শেষে ২০১০ সালের ২৯ এপ্রিল আটজনের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।

ঢাকাটাইমস/১৭ফেব্রুয়ারি/ডিএম