ভাইবোনের পরিচয়ে বাসা ভাড়া, ‘চেতনানাশক খাইয়ে’ হত্যা

প্রকাশ | ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ২১:৪০ | আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:২৫

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
নিহত শিক্ষার্থী ইয়োগেন (বাঁয়ে) ও সখিনা বেগম সবিতা।

রাজধানীর সবুজবাগে কলেজশিক্ষার্থী ইয়োগেনকে চেতনানাশক খাইয়ে পরে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ হত্যার ঘটনায় আটক শিক্ষানবিশ আইনজীবী সখিনা বেগম সবিতাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের তথ্যের ভিত্তিতে একথা জানিয়েছে র‌্যাব।

শনিবার দিবাগত রাতে রাজধানীর মুগদা  থেকে সবিতাকে আটক করে র‌্যাব-৩। সখিনা ইয়োগেন হত্যার পরিকল্পনা ও দায় স্বীকার করেছেন বলে র‌্যাবের ভাষ্য।

রবিবার বিকালে র‌্যাব-৩ এর অধিনায়ক (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল এমরানুল হাসান র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন এসব তথ্য জানান।

নটরডেম কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ইয়োগেন গোনসালভেসের বাড়ি কোতোয়ালি থানার পাথরঘাটা এলাকার ম্যাকলিন গোনসালভেজের ছেলে। আর আটক সবিতার বাড়ি গাজীপুরের পূবাইলে। তারা ‘পুওর পিপলস হেল্প ফাউন্ডেশন’ নামে একটি সংগঠনে যুক্ত ছিলেন। ওই সংগঠনের আরেক সদস্য আইনজীবী জাফর উল্লাহ রাসেলও তাদের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে র‌্যাব কর্মকর্তা এমরানুল জানান।

র‌্যাবের ভাষ্য, যে বাসায় ইয়োগেনকে হত্যা করা হয়, সেটি সবিতা ও ইয়োগেন ভাই-বোনের পরিচয় দিয়ে একসঙ্গে ভাড়া করেছিলেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সবিতা জানায়, দীর্ঘদিনের জমানো ক্ষোভ ও  মাদক সেবনের জন্য টাকা চেয়ে দফায় দফায় বিরক্ত করায় ১২ ফেব্রুয়ারি  রাগান্বিত হয়ে একপর্যায়ে জুসে চেতনানাশক মিশিয়ে, হাত-পা বেঁধে বটি দিয়ে কুপিয়ে ও জখম করে ইয়োগেনকে হত্যা করা হয়।

এমরানুল হাসান বলেন, জাফর ও সবিতা স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএলবি পাস করে আইন পেশায় যান। সবিতা ঢাকা জজ কোর্টে শিক্ষানবিশ আইনজীবী হিসেবে কাজ করছেন।

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের সিনিয়র জাফরের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালে শাহবাগ থানায় একটি মামলা করেছিলেন সবিতা। ওই মামলায় সাক্ষী হয়েছিলেন ইয়োগেন। আর এর সূত্র ধরে ইয়োগেন বারবার সবিতার কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেওয়ায় তিনি ক্ষুব্ধ ছিলেন বলে জানান র‌্যাব কর্মকর্তা এমরানুল।

বাসার সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, বাসায় প্রবেশের পর পিপাসা পাওয়ায় ইয়োগেন জুস কিনতে বাইরে যায়। এরই মধ্যে সবিতা প্রাণের লাচ্ছি জুসের সাথে চেতনানাশক ওষুধ মিশিয়ে তাকে লাচ্ছি খাওয়ায়। খাওয়ানোর দৃশ্যগুলো ইয়োগেনের মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে পরে সেই ভিডিওগুলো চারটি ইউটিউব চ্যানেলে আপলোড করে।

এরপর ইয়োগেনে অচেতন হলে তার হাত পা আও মুখ কাপড় দিয়ে বেধে বটি দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপায়। কোপানোর এক পর্যায়ে ইয়োগেন চিত হয়ে উল্টিয়ে পড়লে সবিতা পিঠেও এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে। পরে সবিতাকে সালোয়ার কামিজ ও ওড়না পরে খালি পায়ে বাসা থেকে বের হয়ে যেতে দেখা যায়।

ঢাকাটাইমস/১৭ফেব্রুয়ারি/এসএস/ডিএম