‘ভাষা দিবসে ঢাকায় নিরাপত্তায় ১৬ হাজার পুলিশ’

প্রকাশ | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৩:৩২ | আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৩:৪৬

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের নিরাপত্তায় ছয় হাজারসহ ঢাকা মহানগরীতে মোট ১৬ হাজার পুলিশ মোতায়েন থাকবে।

মঙ্গলবার শহীদ মিনারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সামনে এ কথা বলেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিতে শহীদ মিনারে প্রবেশের আশপাশ এলাকার তল্লাশি চৌকি স্থাপন করা হবে। শহীদ দিবসের আগের দিন গোটা এলাকা সুইপিং করবে ডগ স্কোয়াড। এছাড়া একুশে ফেব্রুয়ারির দিন ডগ স্কোয়াড, মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ, সোয়াট এবং বোম্ব ডিস্বোজাল ইউনিট প্রস্তুত রাখা হবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, একুশে ফেব্রুয়ারিকে ঘিরে কোনো জঙ্গি হামলার আশঙ্কা নেই। শহীদ মিনারের নিরাপত্তা নিয়ে ঢাবি, ডিএমপি ও সিটি করপোরেশনে একাধিকবার সমন্বয় সভা করেছি। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ঘিরে চারস্তরের নিরাপত্তা বলয় থাকবে। সিসিটিভির আওতায় থাকবে পুরো এলাকা। বুধবার রাতে রাষ্ট্রপতি-প্রধানমন্ত্রী, বিদেশি কূটনৈতিক ও ভিআইপিদের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাধারণদের জন্য উন্মুক্ত করা হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। তবে সাধারণ নাগরিকদের সবাইকে পলাশী হয়ে শহীদ মিনারের প্রবেশ করতে হবে। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে দোয়েল চত্ত্বর ও চানখাঁরপুল হয়ে বেরিয়ে যাবেন।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, ২০ ফেব্রুয়ারি রাত আটটা থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি প্রথম প্রহরে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুস্পস্তবক অর্পণপূর্বক ফিরে না যাওয়া পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্ডধারী শিক্ষক, ছাত্র, কর্মচারী ছাড়া কোনো বাইরের লোক প্রবেশ করতে পারবেন না। ২০ ফেব্রুয়ারি রাত আটটা থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি, অপরাহ্ন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যত্রতত্র অনুপ্রবেশ বন্ধের জন্য নীলক্ষেত, পলাশী, ফুলার রোড, বকশিবাজার, চানখারপুল, শহীদুল্লাহ হল, দোয়েল চত্ত্বর, জিমনেশিয়াম, রোমানা চত্ত্বর, হাইকোর্ট, টিএসসি, শাহবাগ ইন্টারসেকশন সমূহে রোড ব্লক দিয়ে গাড়ি ডাইভারশন ব্যবস্থা কার্যকর করা হবে।

তিনি বলেন, ১৯ ফেব্রুয়ারি রাত আটটা থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি ভোর ছয়টা পর্যন্ত রাস্তায় আলপনা অংকনের জন্য কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনের রাস্তা বন্ধ থাকবে। এলক্ষ্যে শিববাড়ী, জগন্নাথ হল ও রোমানা চত্ত্বর ক্রসিংগুলো থেকে ওইসময় গাড়ি ডাইভারশন দেয়া হবে। একুশের প্রথম প্রহরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে জিমনেশিয়াম মাঠে ভিআইপি গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা থাকবে। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী এবং ভিআইপিগণের একুশের প্রথম প্রহরে শ্রদ্ধা নিবেদনের পরে সর্বসাধারণ শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য পলাশী, জগন্নাথ হল হয়ে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আসবেন। সর্বসাধারণ নীলক্ষেত-পলাশী, পলাশী- ঢাকেশ্বরী সড়কসমূহে তাদের গাড়ি পার্ক করতে পারবেন।

আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, পলাশী থেকে শহীদ মিনার পর্যন্ত পায়ে হেঁটে যাওয়ার সময় জগন্নাথ হলের সামনে আর্চওয়ে দিয়ে চেক করে প্রবেশ করানো হবে। আগতদের প্রত্যেককে মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে তল্লাশি চৌকি পেরিয়ে প্রবেশ করতে হবে। পোষাকধারীর পাশাপাশি সাদা পোষাকে গোয়েন্দা পুলিশ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। সবাইকে অনুরোধ করছি কেউ ফুল দিতে আসার সময় কোনো ধরনের ব্যাগ, ছুরি-কাঁচি, চাকু, দাহ্য পদার্থ আনবেন না। কারণ তল্লাশি চৌকিকে কাউকেই এগুলো নিয়ে ঢুকতে দেয়া হবে না।

শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রচারকৃত মাইকের দিকনির্দেশনা সকলে মেনে চলার আহ্বান জানানো হয়েছে ডিএমপির পক্ষ থেকে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সহযোগিতায় ভাসমান দোকান, হকার উচ্ছেদ করা হবে। কোনো সংস্থা বা কাউকে শহীদ মিনার কেন্দ্রীক কাউকে বাণিজ্যিকীকরণ কর্মকাণ্ড করতে দেওয়া হবে না। বাণিজ্যিকীকরণের উদ্দেশে কাউকে কোনো ধরনের ব্যানার ফেস্টুন ব্যবহার করতে দেয়া হবে না বলেও জানিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার।

ঢাকাটাইমস/১৯ফেব্রুয়ারি/এএ/ওআর/এমআর