শাজাহান খানের নেতৃত্ব কমিটি হাস্যকর: রিজভী

প্রকাশ | ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৬:২২ | আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৬:৫৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

সম্প্রতি সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে সড়ক পরিবহন ও দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খানকে আহ্বায়ক করে যে কমিটি গঠন করা হয়েছে তা রীতিমতো ‘হাস্যকর’বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ।

মঙ্গলবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী একথা বলেন।

রিজভী বলেন, ‘এই শ্রমিক নেতার কারণেই সড়কে যত প্রাণহানি ও বিশৃঙ্খলা ঘটেছে। যখনই সড়কের অব্যবস্থাপনা ও বিশৃঙ্খলা নিয়ে আন্দোলন হয়েছে তখনই এই শাজাহান খানরাই বাধা সৃষ্টি করেছেন। মূলত সড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানির জন্য এই নেতাই অনেকাংশে দায়ী। কাজেই তাকে আহ্বায়ক করে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার নামে যে কমিটি গঠিত হয়েছে তা জাতির সঙ্গে তামাশামাত্র।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সড়কে বিশৃঙ্খলা এবং মর্মান্তিক দুর্ঘটনার কত যে পুনরাবৃত্তি হবে তা বলাই বাহুল্য।’ তিনি বলেন, ‘জনগণের নিকট যখন জবাবদিহিতা থাকে না তখন জনদুর্ভোগ সষ্টিকারীরাই সর্বত্রই বেআইনি কর্তৃত্ব করে। তাদের দ্বারা জনগণ ক্রমাগত প্রতারিত হতে থাকে। মিডনাইট নির্বাচনের পর এটি (শাজাহান খানকে আহ্বায়ক করে সড়ক পরিবহন ও দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ জাতীয় কমিটি গঠন) জনগণের সঙ্গে আরেকটি শ্রেষ্ঠ প্রহসন।’

সম্প্রতি তিনটি ব্যাংক অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এ অনুমোদনের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘বর্তমান অবৈধ সরকার দেশে আরও তিনটি ব্যাংকের অনুমোদন দিয়েছে। সবচেয়ে হাস্যকর বিষয় হলো স্বয়ং অর্থমন্ত্রী বলেছেন তিনি এই তিনটি ব্যাংক অনুমোদনের বিষয়টি জানেন না। ব্যাংক লুটের কারণে দেশের ব্যাংকগুলোর যখন ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা তখন আবারও নতুন করে তিনটি ব্যাংকের অনুমোদন ব্যাংক লুটের পথকে আরও প্রসারিত করল।’

রিজভী বলেন, ‘বর্তমানে অনুমোদনকৃত তিনটি ব্যাংকসহ দেশের অধিকাংশ ব্যাংকের মালিকানায় রয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা কিংবা তাদের স্বজনরা। যখন পূর্বের ঢালাওভাবে অনুমোদিত ব্যাংকগুলো ধসে পড়েছে তখন আবারও তিনটি ব্যাংকের অনুমোদনে এটি সুস্পষ্ট যে, জনগণের সর্বশেষ সঞ্চয়টুকু শোষণ করতেই মিডনাইট সরকারের খয়ের খাঁ-দের নতুন তিনটি ব্যাংক দিয়ে পুরস্কৃত করা হয়েছে।’

‘জনস্বার্থ, রাষ্ট্রীয় অর্থনীতি ধ্বংস করে নিশীথ রাতের ভোটে সৃষ্টি আওয়ামী সরকার নিজের আখের গোছাতেই এখন রীতিমতো ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। আওয়ামী সরকার নিজেদের স্বার্থে সবকিছুই বিকিয়ে দিতে পারে-সেটি স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বই হোক কিংবা জাতীয় অর্থনীতিই হোক। আওয়ামী লীগ একদলীয় একনায়কতন্ত্রের অভিনব উৎস রূপেই বারবার পুনরাবিষ্কৃত হয়েছে।’

বিকল্প ব্যবস্থা না রেখে রাজধানীতে গ্যাস বন্ধের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘আজ ঢাকা মহানগরীতে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ আছে। বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না করে ঢাকা মহানগরীতে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ ঘোষণা নিষ্ঠুর কর্তৃত্ববাদী শাসনেরই প্রতিফলন। নাৎসি দুঃশাসনের তামসিক প্রভাব খাটিয়ে আকস্মিকভাবে প্রায়দিনই গ্যাস সরবরাহ বন্ধের ঘোষণা ঢাকাবাসীকে মহাদুর্ভোগের মধ্যে ফেলেছে। নিত্যদিনের এই ঘটনায় জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে।’

রিজভী বলেন, ‘ঢাকা মহানগরীতে চুলা জ্বালানোর অন্য কোনো উপায় নেই, সরকার এদিকে দৃষ্টি না দিয়ে ফাঁপা উন্নয়নের ছবি দেখানোর জন্য জনগণের জীবনযাপনের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলোর সরবরাহকেও বাধা দিতে কুণ্ঠিত হচ্ছে না। এক ব্যক্তির হুকুমের শাসন জারি আছে বলেই জনগণের চাহিদাগুলোকে পদদলিত করা হচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

(ঢাকাটাইমস/১৯ফেব্রুয়ারি/বিইউ/জেবি)