বৃথা গেল সাব্বিরের অভিষেক সেঞ্চুরি
অধরা সেঞ্চুরিটা অবশেষে ধরা দিল। বুধবার ক্যারিয়ারের ৫৮তম ম্যাচে এসে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম শতকের দেখা পেলেন সাব্বির রহমান। তার সেঞ্চুরিটা অবশ্য বৃথা গেছে। ডুনেডিনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশ পরাজিত হয়েছে ৮৮ রানে। তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে তিনটিতেই হেরে হোয়াইটওয়াশ হল মাশরাফি বিন মর্তুজার দল।
আগে ব্যাট করতে নেমে ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ৩৩০ রান সংগ্রহ করে নিউজিল্যান্ড। জবাবে সাব্বিরের সেঞ্চুরির পরও ১৬ বল বাকি থাকতে ২৪২ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ। ১১০ বলে ১০২ রানে করে শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হন সাব্বির। ১২ চার আর ২ ছক্কায় অভিষেক সেঞ্চুরিটা তুলে নেন তিনি।
প্রথম দুটিতে ব্যাটিং ব্যর্থতায় হেরেছিল বাংলাদেশ। তৃতীয়টিতে আরও বাজে পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয় সফরকারীদের। ৩৩১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দলীয় ২ রানেই ৩ উইকেটে হারিয়ে ফেলে তারা। তামিম ইকবাল আর সৌম্য সরকার ফেরেন টিম সাউদির করা ইনিংসের প্রথম ওভারেই। শূন্য মেরেছেন দুজনই। নিজের দ্বিতীয় ওভারে এসে লিটন দাসকেও (১) তুলে নেন সাউদি। এরপর কিছুক্ষণ লড়ে ট্রেন্ট বোল্টের বলে আউট হন মুশফিক। তিনি করেন ১৭ রান।
বিপর্যয় সামাল দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন মাহমদুউল্লাহ। ওয়ানডে ম্যাচে খেলছিলেন টেস্ট ক্রিকেট। কিন্তু তিনিও টিকে থাকতে পারেননি। ৩৬ বলে ১৬ রান করে ডি গ্র্যান্ডহোমের বলে ক্যাচ দিয়েছেন কলিন মুনরোর হাতে। ১৫ ওভার শেষে টাইগারদের দলীয় রান দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ৬১। সেখান থেকে সাইফউদ্দিনের সঙ্গে ১০১ রানের জুটি গড়েন সাব্বির। ব্যক্তিগত ৪৪ রানে বোল্টের বলে আউটন হন সাইফ। এরপর দ্রুতই ফেরেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা।
অষ্টম উইকেটে মিরাজকে নিয়ে ৬৭ রানের জুটি গড়েন সাব্বির। দলীয় ২৩৭ রানে রানে মিরাজ (৩৭) আউট হওয়ার পর আর মাত্র ৫ রান যোগ করে বাকি দু্টি উইকেট হারায় বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের পক্ষে টিম সাউদি একাই নেন ৬ উইকেট। ট্রেন্ট বোল্ট ২টি আর কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম নেন ১টি উইকেট।
এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ৩৩০ রান সংগ্রহ করে নিউজিল্যান্ড। দলীয় ২১ রানে আউট হন কলিন মুনরো। তার উইকেটটি নেন মাশরাফি। চলতি সিরিজে এটি তার প্রথম ও শেষ উইকেট শিকার। এরপর ৫৯ রানে আরেক ওপেনার মার্টিন গাপটিলকে ফেরান সাইফউদ্দিন। টানা দুই ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি হাঁকানো গাপটিল করেন ২৯ রান।
তৃতীয় উইকেটে ৯২ রানের জুটি গড়েন হেনরি নিকোলস-রস টেলর। নিকোলসকে তামিম ইকবালের হাতে ক্যাচ বানিয়ে এ জুটি ভাঙেন মেহেদী মিরাজ। ৭৪ বলে ৭ চারে ৬৪ রান করেন নিকোলস। এরপর টম ল্যাথামকে নিয়ে এগিয়ে যেতে থাকেন টেলর। ফিফটি তুলে নিয়ে ব্যক্তিগত ৬৯ রানের মাথায় রুবেল হোসেনের বলে আউট হন তিনি। নিউজিল্যান্ডের দলীয় রান তখন ৩৮.২ ওভারে ২০৬।
টেলরের পর উইকেটে এসেই বোলারদের ওপর চড়াও হন জিমি নিশাম। ল্যাথামের সঙ্গে ৪১ বলে ৬৫ রানের জুটি গড়েন নিশাম। ৪৫তম ওভারে মোস্তাফিজের বলে বোল্ড হওয়ার আগে ২৪ বলে ৩৭ রানের ঝড়ে ইনিংস খেলেন এ অলরাউন্ডার । ৪৭তম ওভারে বল হাতে নিয়ে ল্যাথামকেও সাজঘর দেখান মোস্তাফিজ। উইলিয়ামসনের অনুপস্থিতিতে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করা ল্যাথাম ৫১ বলে ২ চার ও ৩ ছক্কায় করেন ৫৯ রান।
এরপর শেষ ২১ বল থেকে কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম আর মিচেল স্যান্টনার স্কোরবোর্ডে যোগ করেন ৪৬ রান। এর মধ্যে ডি গ্র্যান্ডহোমের ব্যাট থেকেই এসেছে ৩৭ রান। স্যান্টনার অপরাজিত ছিলেন ১৬ রানে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
নিউজিল্যান্ড: ৫০ ওভারে ৩৩০/৬ (গাপটিল ২৯, নিকোলস ৬৪, টেলর ৬৯, লাথাম ৫৯, নিশাম ৩৭, ডি গ্র্যান্ডহোম ৩৭*, স্যান্টনার ১৬*; মোস্তাফিজ ২/৯৩, মাশরাফি ১/৫১, রুবেল ১/৬৪, সাইফউদ্দিন ১/৪৮, মিরাজ ১/৪৩)।
বাংলাদেশ: ৪৭.২ ওভারে ২৪২/১০ (সাব্বির রহমান ১০২, সাইফউদ্দিন ৪৪, মিরাজ ৩৭; সাউদি ৬/৬৫, বোল্ট ২/৩৭, ডি গ্র্যান্ডহোম ১/১৮)
ফল: নিউজিল্যান্ড ৮৮ রানে জয়ী।
সিরিজ: নিউজিল্যান্ড ৩-০ ব্যবধানে জয়ী।
(ঢাকাটাইমস/২০ ফেব্রুয়ারি/ এবিএ)