নির্বাচনে বিরোধী দলগুলো সিরিয়াস ছিল না: শেখ হাসিনা
একাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিরোধী দলগুলো ‘সিরিয়াস’ ছিল না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আরব আমিরাত সফরকালে দেশটির দৈনিক গালফ নিউজকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি একথা বলেন।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে তিনশ আসনের মধ্যে ২৮৮ আসনে ভূমিধস জয় পায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। অন্যদিকে দশম সংসদ নির্বাচন বর্জন করা বিএনপি ও তাদের নির্বাচনী জোট ঐক্যফ্রন্ট একাদশ সংসদ নির্বাচনে ‘ভোট ডাকাতির’ অভিযোগ করে আসছে।
গালফ নিউজের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক বিনসাল আবদুল কাদের ও নিজস্ব প্রতিবেদক সামিহা জামান এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
তিনি বলেন, ‘তারা (বিরোধী দল) দুবাই প্রবাসী একজনকে মনোনয়ন দিয়েছিলেন। তিনি আবুধাবিতে বাংলাদেশের দূতাবাসে গিয়েছিলেন মনোয়নের কাগজপত্র জমা দিতে। দূতাবাস কর্তৃপক্ষ তাকে বলেছিল, আমরা আপনার কাগজপত্র গ্রহণ করতে পারব না। আপনি বাংলাদেশে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে কাগজপত্র জমা দেন।’
দূতাবাসের কর্মকর্তারা বিষয়টি বাংলাদেশের নির্বাচন কমিশনকে জানায় উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ওই ভদ্রলোক (দুবাই প্রবাসী) এক পর্যায়ে খুব হতাশ হয়ে বলেন, আমি প্রচুর টাকা লন্ডনে পাঠিয়েছি। তারা বলেছিল (বিরোধী দল) সংযুক্ত আরব আমিরাতে আমি মনোয়নপত্রের কাগজপত্র জমা দিতে পারব।’
এই ঘটনা বিরোধী দলের অদক্ষতার একটি উদাহরণ মাত্র মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এভাবেই তারা নির্বাচন (কৌশল বা প্রচার) পরিচালনা করেছে।’
‘তারা (বিরোধী দল) প্রায় নয়শ জনকে মনোয়ন দিয়েছিল। প্রতিটি আসনের বিপরীতে দুই থেকে তিনজন প্রার্থী দিয়েছিল তারা। কিভাবে তারা নির্বাচনে জয়ে পাবেন?’
নির্বাচনে অনিয়ম ও জালিয়াতির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে বিরোধী দলগুলো সিরিয়াস ছিল না।’
শেখ হাসিনা অভিযোগ করেন, ২০০১ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও তাদের জোট ক্ষমতায় আসে। সমাজের সর্বস্তরে তারা দুঃশাসন কায়েম করে, ফলে পরবর্তীতে দেশে জরুরি অবস্থা জারি হয়।
সাক্ষাতকারে রোহিঙ্গা ইস্যুটিও উঠে আসে। রোহিঙ্গাদের নিরাপদে মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে ‘চমৎকার সম্পর্কের’ কথা উল্লেখ করে রোহিঙ্গাদের নিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে টানাপোড়েনের কথাও বলেন তিনি।
২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্বিচারে হত্যা-ধর্ষণ ও দমন-পীড়নর শিকার হয়ে দেশটির রাখাইন থেকে প্রাণ বাঁচাতে আট লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে চলে আসে। কক্সবাজারের বিভিন্ন শরণার্থী ক্যাম্পে তাদের ঠাঁই হয়েছে। আগে থেকে বাংলাদেশে থাকা রোহিঙ্গাদের মিলিয়ে এ সংখ্যা ১১ লাখ ছাড়িয়ে গেছে।
শেখ হাসিন বলেন, ‘মানবিক দিক বিবেচনা করেই রোহিঙ্গাদের জন্য সীমান্ত খুলে দেয় বাংলাদেশ। রোহিঙ্গাদের বিষয়ে আমাদের অবস্থান শুরু থেকে একই আছে। মিয়ানমারকে অবশ্যই রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে হবে।’
ঢাকাটাইমস/২০ফেব্রুয়ারি/এসআই/ডিএম