রাসায়নিকের গুদাম: ব্যর্থতা স্বীকার করছেন না মেয়র খোকন

প্রকাশ | ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৬:৪২ | আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ২১:৩১

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

নিমতলীর পর চকবাজার, মর্মান্তিক দুটি দুর্ঘটনার পর আবার সামনে পুরান ঢাকার রাসায়নিকের গুদাম। নয় বছর আগেই যে গুদাম সরানোর ঘোষণা ও পরে সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেটাই আবার নতুন করে দিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন।

বুধবার রাতে দুই গাড়ির মধ্যে সংঘর্ষের পর আশেপাশের বিভিন্ন গাড়ি এবং হোটেলের গ্যাসের সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর একটি ভবনের নিচতলায় আগুন লাগে। সব মিলিয়ে নিহত হয়েছে অন্তত ৭৮ জন। আরও বহুজন হাসপাতালে ভর্তি।

যে ভবনটিতে আগুন লেগেছিল, তার নিচতলায় প্লাস্টিক এবং পারফিউমের মজুদ ছিল। প্রচার হয়, রাসায়নিকের গুদামের কারণে আগুন ছড়িয়েছে। আর এ কারণে ২০১০ সালে নিমতলীর স্মৃতি ফিরে এসেছে। ওই বছর শতাধিক মানুষের মৃত্যুর পর পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিকের গুদাম সরানোর সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু সেটি কার্যকর হয়নি।

এই পরিস্থিতিতে সংবাদ সম্মেলন করে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, ‘পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিকের কেমিক্যাল গোডাউন উচ্ছেদ অভিযান অব্যাহত থাকবে, কোনোভাবেই আর এখানে কেমিক্যাল গোডাউন রাখতে দেব না।’

‘পুরান ঢাকায় দাহ্য পদার্থের গোডাউন থাকতে দেব না। এজন্য কঠোর থেকে কঠোরতম পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

এই ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি করা হবে জানিয়ে মেয়র বলেন, ‘এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পাওয়ার পর দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

নিমতলীতে আগুনের পরও বলা হয়েছিল রাসায়নিকের গোদাম থাকবে না- এই বিষয়টি স্মরণ করালে মেয়র বলেন, ‘এসব গোডাউন ও কারখানা উচ্ছেদে অভিযান চলবে।’

-এ অভিযান কতদিন চলবে?  

-আমরা অভিযান শুরু করেছি, অভিযান চলবে।

-দুর্ঘটনা রোধ করতে মেয়র হিসেবে ব্যর্থ কি না?

-আগুন লাগার খবর পাওয়ার পর থেকেই আমি এখানে উপস্থিত ছিলাম। সব ধরনের কার্যক্রম আমরা পরিচালনা করেছি। আর ব্যর্থতা-সফলতা জনগণ দেখবে, জনগণ মূল্যায়ন করবে।

এ ঘটনায় যারা প্রাণ হারিয়েছেন তাদের জুরাইন কবরস্থানে দাফন করা যাবে বলেও জানান মেয়র। বলেন, ‘যারা হতাহত হয়েছে, তাদের সবার তালিকা করে ক্ষতিপূরণও দেওয়া হবে।’

হতাহতদের তথ্য জানানোর জন্য ডিএসসিসির পক্ষ থেকে একটি হটলাইন খোলা হয়েছে। স্বজনদেরকে ৯৫৫৬০১৪ নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। তিনটি টিম এখানে সার্বক্ষণিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে। কোনোভাবে যেন আগুন আবার না লাগে বা ছড়িয়ে পড়তে না পারে, সেদিকে লক্ষ্য রাখা হবে।

সাঈদ খোকন বলেন, ‘আমরা সোমবার থেকেই পুরান ঢাকার আবাসিক এলাকা থেকে সব ধরনের কেমিক্যাল গোডাউন উচ্ছেদের জন্য অভিযান শুরু করেছি। এর মধ্যেই এই ঘটনা ঘটল। আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। এখান থেকে কোনোভাবেই কেমিক্যাল গোডাউন থাকতে দেওয়া হবে না।’

আগুন পুরোপুরি নেভানো হলেও ঘটনাস্থলে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট থাকবে বলেও জানান মেয়র। বলেন, ‘যাতে যে কোনো ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবেলা করা যায়। সেজন্য সার্বক্ষণিক মনিটরিং করা হবে।’

ঢাকাটাইমস/২১ফেব্রুয়ারি/জিএম/ডব্লিউবি