প্যাড পড়ে রয়েছে, নেই ডা. কাউসার

শরীফ রুবেল, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৯:১১ | প্রকাশিত : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৭:২৪

বছর দুয়েক আগে চকবাজার চুড়িহাট্টার শাহী মসজিদের পাশে ‘মদিনা ডেন্টাল কেয়ার’ নামে একটা ছোট্ট চিকিৎসা কেন্দ্র খুলেছিলেন দাঁতের চিকিৎসক আলি কাউসার আহম্মেদ। স্বপ্ন ছিল নামি ডেন্টিস্ট হবেন। তারই সুবাদে চলতি বছবের শেষের দিকে পল্টনে আরো বড় পরিসরে চিকিৎসালয় খোলার আশা করছিলেন।

কিন্তু নিয়তি তার সকল আশা উত্তপ্ত আগুনে পুড়িয়ে ছাই করে দিয়েছে। রাত পৌনে নয়টার দিকে প্রচণ্ড দাঁতে ব্যাথা নিয়ে তার ক্লিনিকে এসেছিলেন রোগী হালিমা খাতুন। কাউসার তারই চিকিৎসা করছিলেন। কিন্তু এটাই যে ছিল তার জীবনের শেষ চিকিৎসা, সেটা বুঝে ওঠার আগেই ঘটে যায় এক বীভৎস ঘটনা।

গতকাল রাত সাড়ে দশটার চকবাজারের আগুন কেড়ে নেয় চিকিৎসক কাউসারসহ তার তিন সহযোগীর প্রাণ। কাউসারডেন্টালে বিডিএস ও পিজিটি শেষ করে পার্টনারশিপে ক্লিনিকের ব্যবসা শুরু করেন। বাবার নাম খলিলুর রহমান। কুমিল্লায় বাড়ি। সবাই থাকতেন চকবাজারে।

এলাকাবাসী জানান, গতকাল সাড়ে ১০টার দিকে হঠাৎ চুড়িহাট্টা তিন রাস্তার মোড়ে বিকট শব্দ হয়। একটি প্রাইভেট কার ও একটি পিকআপ ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। বিস্ফোরণ হয় পিকাপভ্যানে থাকা গ্যাস সিলিন্ডারে। আর মুহূর্তের মধ্যেই পাল্টে যায় সকল কিছু। বিস্ফোরিত সিলিন্ডারের আগুন ছড়িয়ে পড়ে চারপাশে এবং আগুনে পুড়ে মারা যায় প্রায় ৭০ জন মানুষ এদের মধ্যে ছিলেন কাউসারও।

মদিনা ডেন্টাল কেয়ারে গিয়ে পাওয়া যায় তার সহকারী তানভির হাসান কাঁদছেন। অশ্রুভেজা চোখে তিনি আগুনে পোড়া চিকিৎসালয়ে পোড়া কাগজের মাঝে কিছু একটা খুঁজছিলেন।

তানভির বলেন, ‘আগুনের সময় ক্লিনিকের ভবনের গেট বন্ধ ছিল। খোলা থাকলে হয়ত স্যারকে ফিরে পেতাম।

‘মাত্র দশ মিনিট সময়ের জন্য প্রানে বেচেঁ গিয়েছি আমি। আর বিস্ফোরিত আগুন দুই মিনিট সময়ও দেয়নি, যদি দুই মিনিট সময় পেত তাহলে হয়তো স্যার বেরিয়ে আসতে পারতেন।’

‘অসম্ভব ভাল মানুষ ছিলেন তিনি। বিশ্বাস হচ্ছে না স্যার নেই।’

স্ত্রী রুবাইয়াসহ ফুটফুটে যমজ সন্তান নিয়ে সংসার কাউসারের। রয়েছেন মা, বাবা, ভাইসহ আত্মীয়স্বজনও। তারা সবাই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসেছিলেন মরদেহ শনাক্তের আসায়। সেখানে তার ছোট্ট দুই সন্তানকে দেখে মনের অজান্তেই অনেকের চোখের কোনে পানি দেখা যায়।

ঢাকাটাইমস/২১ফেব্রুয়ারি /এসআর/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :