লেসথোতে বাংলাদেশ পোয়েট্রি কর্নার

হাসান মাসুম, লেসথো
 | প্রকাশিত : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৯:৪৯

ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি। ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সালাম, রফিক, বরকত, জব্বারসহ আরো অনেক শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা বাংলা ভাষায় কথা বলার অধিকার লাভ করি। এরই সূত্র ধরে উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান এবং ১৯৭১ সালের নয়মাস রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি জাতি স্বাধীনতা অর্জন করে।

১৯৯৯ সালের নভেম্বর মাসে ইউনেস্কো ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে। সেই থেকে সারাবিশ্বে ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হয়।

এই ভাষার মাসে ১৬ ফেব্রুয়ারি আফ্রিকা মহাদেশের দক্ষিণে অবস্থানকারী লেসথোতে স্টেট লাইব্রেরি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল বাংলাদেশ পোয়েট্রি কর্নার-এর উদ্বোধন। দক্ষিণ আফ্রিকায় অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনের হাইকমিশনার শাব্বির আহমেদ চৌধুরীর উপস্থিতিতে বাংলাদেশ পোয়েট্রি কর্নার-এর উদ্বোধন ঘোষণা করেন লেসথো সরকারের সংস্কৃতিমন্ত্রী জোয়াং মোলাপো।

লেসথোর মন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ সবুজের দেশ , বাংলাদেশ নদীর দেশ, বাংলাদেশের মানুষের সাথে লেসথোর মানুষের কবিতার মধ্যদিয়ে যোগাযোগের মাধ্যমে পরস্পরকে সমৃদ্ধ করতে পারবেন।

তিনি বলেন, এটি লেসথো ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক।

বাংলদেশের হাইকমিশনার শাব্বির আহমেদ চৌধুরী বলেন, লেসথো ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে বাংলাদেশ পোয়েট্রি কর্নার উদ্বোধনের মাধ্যমে যে ঐতিহাসিক বন্ধুত্বের শুভ সূচনা হলো ভবিষ্যতে তা অব্যাহত থাকবে। এই অনুষ্ঠান এর আয়োজনে উল্লেখযোগ্য ভূমাইকা রাখার জন্য তিনি লেসথো পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রথম সচিব নাকা রামরোকানেকে ধন্যবাদ জানান।

এরপরে তিনি লেসথোর মন্ত্রীর হাতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা উপহার তুলে দেন।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইউনেস্কোর সংস্কৃতিবিষয়ক পরিচালক মে মাটসুয়ানা, ইউএনএফপিএ-এর কান্ট্রিডিরেক্টর নুজাত এহসান এবং বাংলাদেশ কমিউনিটির পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা বক্তব্য প্রদান করেন ডা. মো. মিরাজুর রহমান।

বাংলাদশ পোয়েট্রি কর্নারের সমন্বয়ক ডা. হাসান মোবাশশার তার বক্তব্যে লেসথো সরকারকে ধন্যবাদ জানান- দুই দেশের মধ্যে কবিতার মাধ্যমে সরকারি পর্যায়ে আলোচনার সুযোগ করে দেয়ার জন্য।

তিনি বলেন, কবিতা ও সাহিত্যের মাধ্যমে দু’দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক এর সূচনা হলো, ভবিষ্যতে লেসথোর কবিবৃন্দ বাংলাদেশ সফর করবেন এবং ফিরতি সফরে বাংলাদেশের কবিবৃন্দ লেসথো আসবেন এবং লেসথোর সংস্কৃতি নিয়ে গবেষণা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

এরপরে লিমা শারমিন-এর পরিচালনায় পরিবেশিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এ অনুষ্ঠানের একটি বিশেষ দিক ছিল কঙ্গো, লেসথো ও নাইজেরিয়ার শিল্পীদের কণ্ঠে বাংলা ভাষায় আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি গানটির চমৎকার পরিবেশনা। সাংস্কৃতিক পর্বের অন্যতম আকর্ষণ ছিল বাংলাদেশের হাইকমিশনার শাব্বির আহমেদ চৌধুরীর বংশীবাদন, তিনি আড় বাঁশিতে ‘গ্রাম ছাড়া ওই রাঙ্গা মাটির পথ’ গানের সুর বাজিয়ে মন্ত্রীসহ সকল দর্শক শ্রোতাকে বিমোহিত করেন। অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে ছিল বাংলদেশি আপ্যায়ন।

লেসথো স্টেট লাইব্রেরিতে বাংলাদেশ পোয়েট্রি কর্নার উদ্বোধনের মাধ্যমে লেসথো ও বাংলাদেশ এই দু’দেশের মধ্যে সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে ভাষার গান পরিবেশন করেন মিলন, লিমা ও মাসুম। কারিগরি নির্দেশনায় ছিলেন নাফিসা আইমান রোজা।

(ঢাকাটাইমস/২১ফেব্রুয়ারি/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

প্রবাসের খবর বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :