যশোরে যাত্রাবিরতি করবে ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’

প্রকাশ | ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ২১:৫৩

যশোর প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস

এখন থেকে যশোরে যাত্রাবিরতি করবে কলকাতা-খুলনা ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’ ট্রেন৷  যশোর রেলওয়ে জংশনে আগামী ৭ মার্চ থেকে যাত্রী ওঠা-নামার জন্য ট্রেনটি তিন মিনিটের জন্য থামবে।

১ মার্চ থেকে সরাসরি স্টেশনে যেয়ে অথবা টেলিফোনে-মোবাইলে টিকিট সংগ্রহ করা যাবে। যশোর স্টেশনে ৭৫টি আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে আন্তর্জাতিক ট্রেনটির৷
বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চলের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত চিঠি বৃহস্পতিবার যশোর রেলওয়ে জংশনের স্টেশনমাস্টার পুষ্পল কুমার চক্রবর্তীর কাছে পাঠানো হয়েছে।

বেনাপোল রেলস্টেশন সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ১৬ নভেম্বর কলকাতা-খুলনা রুটে ৪৫৬ আসনের ‘বন্ধন এক্সপ্রেস’ আন্তর্জাতিক ট্রেনটি চালু হয়। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এ ট্রেনে কেবিনে সিট ভাড়া দেড় হাজার টাকা ও চেয়ার কোচের ভাড়া এক হাজার টাকা। সঙ্গে ৫০০ টাকা ভ্রমণকর দিতে হবে।

যাত্রীরা এ ট্রেনে সরাসরি খুলনা-কলকাতা যাতায়াত করতে পারেন। বেনাপোলে যাত্রীর পাসপোর্ট, ভিসাসহ ইমিগ্রেশনের যাবতীয় কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করা হয়। সপ্তাহের প্রতি বৃহস্পতিবার সকালে ট্রেনটি কলকাতা থেকে ছেড়ে আসে। আবার বিকালে খুলনা থেকে কলকাতার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। 

বেনাপোল স্টেশনমাস্টার মো. সাইদুজ্জামান বলেন, শুরু থেকে গত জানুয়ারি মাস পর্যন্ত এক বছর দুই মাসে এ ট্রেনে করে দুই দেশের মধ্যে যাতায়াত করেছেন ১৫ হাজার ৫৭৯ জন যাত্রী। এর মধ্যে কলকাতা থেকে এসেছেন ৬ হাজার ৭৪৫ এবং খুলনা থেকে কলকাতায় গেছেন ৮ হাজার ৮৩৪ জন। গতকাল এ ট্রেনে করে কলকাতা থেকে খুলনায় এসেছেন মাত্র ৭৯ জন যাত্রী। 

স্টেশনের কর্মকর্তারা জানান, এ ট্রেনে করে গড়ে ১০০ জনের বেশি যাত্রী দুই দেশের মধ্যে যাতায়াত করেন না। প্রতিবারই ট্রেনের আসন ফাঁকা পড়ে থাকে। অথচ গত এক বছরে বেনাপোল চেকপোস্ট (তল্লাশিচৌকি) দিয়ে ১০ লাখেরও বেশি যাত্রী দুই দেশের মধ্যে যাতায়াত করেছেন। 

কলকাতা-খুলনা ট্রেনে যাত্রী সংখ্যা এত কম কেন, প্রশ্নে রেল উন্নয়ন ও সংস্কার আন্দোলন যশোরের আহ্বায়ক ইকবাল কবির জাহিদ বলেন, এর একটি কারণ হলো, যশোরে কোনো স্টপেজ না থাকা। অথচ যশোর অঞ্চলের মানুষ কলকাতায় বেশি যাতায়াত করেন। যশোরে স্টপেজের দাবিতে রাজপথে সভা-সমাবেশ, মানববন্ধনসহ রেলমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘শুনেছি, যশোরে স্টপেজ করা হচ্ছে। এ জন্য সরকারকে স্বাগত জানাই। তবে আরও কিছু দাবি আমাদের রয়েছে। এর মধ্যে আছে, কলকাতা-খুলনা ট্রেনের ভাড়া একটু কমানো এবং সপ্তাহে অন্তত দুটি ট্রেন চালু রাখা। কারণ, ট্রেনে করে কলকাতায় গিয়ে কাজ সেরে ট্রেনে ফেরার জন্য পরের সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। কাজের রুটিনের সঙ্গে ট্রেনের শিডিউল মেলে না। এ কারণে যাত্রী কম হচ্ছে। এ ছাড়া, বেনাপোল থেকে ঢাকা পর্যন্ত একটি ট্রেন চালু হলে যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে। 

যশোর রেলওয়ে জংশনের স্টেশনমাস্টার পুষ্পল কুমার চক্রবর্তী বলেন, কলকাতা-খুলনা ট্রেন ৭ মার্চ থেকে যশোর স্টেশনে তিন মিনিটের জন্য দাঁড়াবে। পাসপোর্ট, ভিসা ও টিকিট দেখে যাত্রীদের ট্রেনে ওঠানো হবে। বেনাপোল স্টেশনে নিয়ে ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। যশোরের জন্য ৭৫টি আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। খুলনার ভাড়া দিয়েই ১ মার্চ থেকে যশোর থেকে টিকিট সংগ্রহ করা যাবে। টিকিটের দাম কমানো হবে কি না, সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

(ঢাকাটাইমস/২১ফেব্রুয়ারি/প্রতিবেদক/এআর)