শিল্পমন্ত্রীর বক্তব্য ‘নাকচ করল’ ফায়ার সার্ভিস

প্রকাশ | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১২:১৫ | আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৭:২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

চকবাজারে আগুনে পোড়া ওয়াহেদ ম্যানসনে রাসায়নিকের গুদাম ছিল না- শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুনের এমন বক্তব্য নাকচ করেছে ফায়ার সার্ভিস। তারা জানিয়েছে, ভবনটিতে নানা দাহ্য পদার্থ ছিল। এর মধ্যে রাসায়নিকও ছিল।

দুর্ঘটনার দ্বিতীয় দিন সকালে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটির সামনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন অগ্নি নির্বাপনের দায়িত্বে থাকা বাহিনীটির পরিচালক লে. কর্নেল এস এম জুলফিকার। তিনি বলেন, ‘ভবনের ভেতরে গ্যাস লাইটার রিফিলের পদার্থ ছিলো। এটা নিজেই একটা দাহ্য পদার্থ। এছাড়া আরো অন্যান্য ক্যামিকেল ছিল। প্রত্যেকটা জিনিসই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে দিতে সহায়তা করেছে। পারফিউমের বোতলে রিফিল করা হতো এখানে। সেই বোতলগুলো ব্লাস্ট হয়ে বোমের মতো কাজ করেছে।’

বুধবার রাতে চকবাজারের চুরিহাট্টায় ভয়াবহ আগুন সরকারি হিসেবে কেড়ে নিয়েছে ৬৭ জনের প্রাণ। আরো বহুজন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা এই দুর্ঘটনার সূত্রপাত হিসেবে গাড়ির সিলিন্ডার বিস্ফোরণকে দায়ী করেছেন। পরে একের পর এক গাড়ির ও খাবার হোটেলে রান্নার জন্য রাখা সিলিন্ডার বিস্ফোরণ ঘটে। এরপর তা ওয়াহেদ ম্যানসনে ছড়ায়। সেখানে নানা দাহ্য পদার্থ ছিল।

যদিও তাৎক্ষণিকভাবে এই দুর্ঘটনার জন্য রাসায়নিকে আগুন লাগার কথা ছড়িয়েছিল। তবে পরদিন বিকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে শিল্পমন্ত্রী জানান, ওই ভবনে রাসায়নিকের গুদাম ছিল না। আর আগুনের সূত্রপাত হয় সিলিন্ডার বিস্ফোরণ থেকে। পরে শিল্প মন্ত্রণালয়ের তদন্ত কমিটিও একই ধরনের বক্তব্য দেয়।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে দমকল বাহিনীর কর্মকর্তা জুলফিকার বলেন, ‘যা যা ছিল, সেগুলো এক ধরনের ক্যামিকেল। তিনি এমন বক্তব্য কোন প্রেক্ষিতে দিয়েছেন তা জানা নেই। ক্যামিকেলের জন্যই আগুন নিয়ন্ত্রণে সময় লেগেছে বেশি।’

ওয়াহিদ ম্যানশনের দ্বিতীয় তলার পুরোটাতেই গুদাম ছিল। এটি বেশ বড় ভবন হওয়া স্বত্ত্বেও অগ্নি নির্বাচনের সরঞ্জাম ছিল না। পর্যাপ্ত সিঁড়িও দেখা যায়নি। ভবনগুলো বিল্ডিং কোড মেনে তৈরি হয়নি।

পুরান ঢাকার চকবাজারে ভয়াবহ আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনগুলো রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউকের) অনুমোদিত কিনা, তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি রাজউকের অথরাইজড অফিসার নুরুজ্জামান জহির।

সরকারি ছুটির কারণে কাগজপত্র দেখা সম্ভব হয়নি উল্লেখ করে রাজউকের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনো খোঁজ খবর নেওয়া সম্ভব হয়নি।’

ঢাকাটাইমস/২২ফেব্রুয়ারি/এসপি/ডব্লিউবি