‘মুহূর্তেই এলাকাটি মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়’

প্রকাশ | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৬:৫৩ | আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৭:২২

সাখাওয়াত প্রিন্স, ঢাকা টাইমস

‘রাত দশটা পনেরো মিনিট। প্রতিদিনের মতো পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টার চার রাস্তার মোড়ে ভিড় ছিল কিছুটা বেশি। বেচাকেনা শেষে রাতে দোকানের মালামাল গোছাচ্ছি। এর মধ্যে হঠাৎ বিকট শব্দ। রাস্তার দিকে তাকিয়ে দেখি দাউদাউ করে জ্বলছে আগুন। মুহূর্তের মধ্যে আগুনের লেলিহান শিখা চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে। আতঙ্কিত মানুষ এদিক সেদিন দৌড়াদৌড়ি করছেন। আমিও দোকান বন্ধ করে দৌড় দেই।’

রাজধানীর চকবাজারের চুড়িহাট্টায় বুধবার লাগা ভয়াবহ আগুনের এভাবেই বর্ণনা দেন সেখানকার ব্যবসায়ী মিন্টু। চুড়িহাট্টা শাহী মসজিদের দক্ষিণ পাশে মুদি দোকান আছে তার।

সরকারি হিসেবে বুধবার রাতে লাগা এই আগুন কেড়ে নিয়েছে ৬৭ জনের প্রাণ।

সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে মিন্টু বলেন, ‘আমি কী করব ভেবে কুল পাচ্ছিলাম না। আগুন আগুন চিৎকার শুনে আমার হাত-পা অবশ হয়ে আসে। আগুন থেকে নিজেকে বাঁচাতে হবে সেদিকটা ভুলে গেছিলাম। এখনো আমি সেই স্মৃতি ভুলতে পারছি না। আমার কানে এখনো আগুন আগুন শব্দ আসছে।’

মিন্টু বলেন, ‘দোকান থেকে বেরিয়ে দূর গিয়ে দেখি একটা প্রাইভেটকার, একটি মাইক্রো, কয়েকটি রিকশার মধ্যে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। সেখানে থাকা মানুষগুলো এক চুল পরিমাণও নড়তে পারেনি। মুহূর্তের মধ্যে তারা আগুনে ঝলসে যান। মূহূর্তের মধ্যেই এলাকাটি মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়।’

‘যখন বিকট শব্দটি হয় তখন মনে হয়েছিল যেন গ্রেনেড বিস্ফোরণ হয়েছে। বিকট শব্দের সঙ্গে সঙ্গে যখন চোখ ফিরে তাকালাম দেখি একটি মাইক্রোবাস প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাত উপরে উঠে গেছে এবং তা নিচে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে চতুর্দিকে আগুনের শিখা ছড়িয়ে পড়ছে।’ যোগ করেন ব্যবসায়ী মিন্টু।

তার পাশে থাকা সঙ্গীতও সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দেন। সঙ্গীত বলেন, ‘হঠাৎ বিকট আওয়াজ শুনে দেখি একটা মাইক্রো অনেক উপরে উঠে আবার নিচে পড়ে গেছে। সঙ্গে সঙ্গে তার ভেতর থেকে আগুনের শিখা চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাস্থলে যারা ছিল তাদের অধিকাংশই নিরাপদ জায়গায় যেতে পারেননি।’

সঙ্গীতের বাবা ১৬ নম্বর বাসার মালিক মাইনুদ্দিন দুর্ঘটনার জন্য কেমিক্যাল ব্যবসায়ীদের দায়ী করেন।

ঢাকা টাইমস/২২ফেব্রুয়ারি/এসপি/এমআর