চকবাজার ট্রাজেডি: ভ্যানেই পুড়ে মরল কুড়িগ্রামের তিন যুবক

প্রকাশ | ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ২১:১৫

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
ফাইল ছবি

ঢাকার চকবাজারের আগুনে পুড়ে মারা গেছেন কুড়িগ্রামের হতভাগ্য তিন যুবক। হতদরিদ্র পরিবারকে সহায়তা করতে এই তারা তিনজন কাজ নেন একটি জুতার দোকানে। ঘটনার দিন বুধবার রাত ১০টার দিকে দোকান থেকে অন্য দোকানে মালামাল ডেলিভারি করতে যান তারা। এসময় ঘটনাস্থলেই অগ্নিদগ্ধ হয়ে ভ্যানেই মারা যান তারা। 

হতভাগ্যরা ওই তিন যুবক হলেন- সদর উপজেলার ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের মাঠেরপাড় শিবেরচর এলাকার আব্দুল কাদেরের ছেলে সজিব (২৩), নাগেশ্বরী উপজেলার হাজিপাড়া গোবর্ধনকুঠি গ্রামের মোজাম্মেলের ছেলে রাজু মিয়া (১৮) ও  একই উপজেলার আবু বক্করের ছেলে খোরশেদ আলম (২২)। 

শুক্রবার সকালে পারিবারিকভাবে তাদের দাফন করা হয়। এই তিন যুবক কিশোর বয়স থেকেই কর্মসংস্থানের জন্য ঢাকার চকবাজারে একটি জুতার দোকানে কাজ নেন। 

কর্মক্ষম এই তিন যুবকের লাশ বাড়িতে আনা হলে পরিবার ও এলাকাবাসীর মধ্যে হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা ঘটে।

একমাত্র ছেলে সজিবের মৃত্যুতে পাগলপ্রায় বাবা আব্দুল কাদের। তিনি প্রলাপ বকছেন আর বলছেন, ‘বাবারে মোর ছওয়াটাক তোমরা আনি দেও। মুই এ্যালা কার ভরসায় বাঁচিম।’

মৃত রাজু মিয়ার ভাই মাসুদ জানান, বাড়িভিটা ছাড়া তাদের আর কিছু নেই। বাবা মারা যাওয়ার পর রাজু ঢাকায় জুতার দোকানে কাজ যোগাড় করে। সে এলাকায় ভ্যান চালাত। দীর্ঘ ৬-৭ বছর ধরে সে ঢাকায় কাজ করছে।

খোরশেদ আলমের মামা নবিউল্লাহ জানান, খোরশেদ আলম বাবার একমাত্র ছেলে। ছয় শতক বাড়িভিটা ছাড়া তাদের কোন জমিজমা নেই। জুতার দোকানে কাজ করে সে দিনমজুর বাবাকে সাহায্য করত। সেই একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে আবু বক্কর সারাক্ষণ ছটফট করছেন আর বলছেন, ‘এ্যালা মুই কাক নিয়া থাকিম।’

নিহতদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, মরদেহ দাফনের জন্য প্রত্যেক পরিবারকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঢাকায় বিশ হাজার টাকা করে দেয়া হয়েছে। 

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন জানান, দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের খোঁজ-খবর নেয়া হচ্ছে। তাদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেয়ার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে।

(ঢাকাটাইমস/২২ফেব্রুয়ারি/এলএ)