রাসায়নিকের গুদাম না সরা দুঃখজনক: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ | ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১২:৫০ | আপডেট: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৭:৩৩

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

উদ্যোগ নেওয়ার পরও পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিকের গুদাম না সরাকে দুঃখজনক বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর যেন এই গুদাম না থাকে, সেটা নিশ্চিত করতেও বলেছেন তিনি।

শনিবার সকালে চকবাজারের চুড়িহাট্টা আগুনে আহতদেরকে দেখতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে যান প্রধানমন্ত্রী। বেলা ১১টার দিকে বেরিয়ে যান তিনি। এ সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন।

গত বুধবার রাতে চুড়িহাট্টা মোড়ে ব্যাপক বিস্ফোরণের পর ওয়াহিদ ম্যানসন নামে একটি বাড়িতে আগুন ধরে যায়। পুড়ে যায় একটি খাবার হোটেলও। এই দুর্ঘটনায় সরকারি হিসাবে ৬৭ জনের মরহেদ উদ্ধার হয়েছে। আরো ৪১ জন হাসপাতালে ভর্তি, যাদের মধ্যে নয় জন বার্ন ইউনিটে।

এই দুর্ঘটনার শুরু গাড়ির গ্যাসের সিলিন্ডার থেকে বলেই জানাচ্ছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। পরে ওয়াহেদ ম্যানসনে থাকা দাহ্য পদার্থের কারণে বাড়িটি পুড়েছে ১০ ঘণ্টার মতো। এই বাড়ির নিচ তলায় শুক্রবার রাসায়নিকের গুদামও পাওয়া যায়।

২০১০ সালেও পুরান ঢাকার চকবাজার এলাকায় একটি আবাসিক ভবনে আগুনে শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়। ওই বাড়ির নিচতলাতেও রাসায়নিকের মজুদ ছিল।

ওই দুর্ঘটনার পর আবাসিক ভবনে রাসায়নিকের মজুদ থাকবে না বলে সিদ্ধান্ত হয়। কেরানিগঞ্জে রাসায়নিক পল্লী গড়ার প্রকল্পও নেওয়া হয়। কিন্তু সেই প্রকল্প আর আগায়নি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পুরান ঢাকা থেকে রাসায়নিকের গুদাম না সরানো দুঃখজনক। সরানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু বাস্তবে কিছু দিন কাজ হওয়ার পর আর হয়নি।’

আবাসিক ভবনে রাসায়নিকের মজুদ যেন না থাকে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানিয়ে এ বিষয়ে সবার সহযোগিতাও চান প্রধানমন্ত্রী।

চকবাজার আগুনে আরো একটি বিষয় আবার সামনে এসেছে। সেটা হলো ঢাকার পুরনো অংশের ঘিঞ্জি পরিবেশ। সরু রাস্তা ও অলিগলিতে দমকলের গাড়ি ঢুকতে পারে না।

শহরের এই এলাকাটিকে নতুন ভাবে গড়ে তোলার কথাও জানান প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘এই অলিগলি রাস্তা- এগুলো আমাদের নতুন ভাবে গড়ে তুলতে হবে। যাতে করে ফায়ার সার্ভিসের লোক ঢুকতে পারে।’

আগুনের বিষয়ে দেশবাসীকে সর্তক থাকার আহ্বানও জানান শেখ হাসিনা। জলাধারগুলো ভরাটের ফলে রাজধানীবাসীর বিপদ বাড়ার কথা তুলে ধরেন তিনি। বলেন, ‘ঢাকায় অনেক পুকুর ছিল। ধোলাই খাল থেকে শুরু করে অনেক খাল ছিল, শান্তিনগর খাল, সেগুনবাগিচা খাল, দুর্ভাগ্য হলো সেগুলো হয় বক্স কালভার্ট করা হয়েছে অথবা বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। পুকুরগুলো ভরাট একে একে ভরাট করা হয়েছে।’

চকবাজারে আগুন নেভাতে পানির অভাবে ভোগার বিষয়টিও জানান শেখ হাসিনা। বলেন, ‘পানি পাওয়া এটা ছিল কষ্টকর। পুরোনো জেলখানার পুকুর থেকে পানি আনা হয়েছে। সমস্ত বাড়িঘর থেকে পানি আনা হয়েছে, রিজার্ভ ট্যাংক থেকে পানি দিয়েছে, ওয়াসা সহযোগিতা করেছে।’

এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন ‘শেখ হাসিনা ন্যাশনাল বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট’এর প্রকল্প পরিচালক আবুল কালাম। তিনি জানান, চিকিৎসাধীনদের সংক্রামণ বা চিকিৎসায় ব্যাঘাত ঘটবে চিন্তা করে কক্ষের ভেতরে ঢোকেননি প্রধানমন্ত্রী। তিনি বাইরে অপেক্ষমান স্বজনদের সঙ্গে কথা বলেন।

স্বজনদের প্রধানমন্ত্রী চিকিৎসার ব্যয় নিয়ে না ভাবার পরামর্শ দিয়ে বলেন, ‘চিকিৎসার ব্যয়ভার সরকার দেখছে। রোগীরা সুস্থ হলে তাদের পুনর্বাসনের চিন্তাও করছে সরকার।’

ঢাকাটাইমস/২৩ফেব্রুয়ারি/টিএ/ডব্লিউবি