রবিবার কর্ণফুলী টানেলের কাজ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী

চট্টগ্রাম ব্যুরো, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ২০:৪১ | প্রকাশিত : ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৯:৪৩

চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’-এর মূল নির্মাণকাজ রবিবার শুরু হচ্ছে। বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টিবিএম মেশিন দিয়ে এ প্রকল্পের খননকাজের উদ্বোধন করবেন।

‘কন্সট্রাকশন অব মাল্টি লেন রোড টানেল আন্ডার দ্য রিভার কর্ণফুলী’ প্রকল্পের আওতায় নির্মিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু টানেল।

২০১৫ সালের নভেম্বরে টানেল নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে ইতোমধ্যে ৩২ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ২০২২ সালের ডিসেম্বরে কাজ শেষে এ টানেল দিয়ে গাড়ি চলাচল শুরু হওয়ার কথা।

চট্টগ্রাম শহর কর্ণফুলী নদীর মাধ্যমে দুই ভাগে বিভক্ত। মূল শহর ও বন্দর এলাকা কর্ণফুলী নদীর পশ্চিম পাশে এবং ভারি শিল্প এলাকা পূর্ব পাশে অবস্থিত। এখন সচল দুটি ব্রিজের মাধ্যমে ক্রমবর্ধমান যান চলাচল সামাল দিতে বেগ পেতে হচ্ছে। কর্ণফুলী নদীর নিচে পলি জমায় চট্টগ্রাম বন্দরের স্বাভাবিক কাজও ব্যাহত হচ্ছে। পলি জমার সমস্যা সমাধানে কর্ণফুলী নদীতে অন্য কোনো ব্রিজ নির্মাণের পরিবর্তে নদীর নিচ দিয়ে টানেল (সুড়ঙ্গ) নির্মিত হচ্ছে।

চালু দুটি ব্রিজের ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচলের চাপ কমানো এবং চীনের সাংহাইয়ের আদলে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু টানেল। দেশের প্রথম এই টানেলের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থার কেন্দ্রস্থল চট্টগ্রামের ভূমিকা শক্তিশালী হবে। বদলে যাবে চট্টগ্রামের বাস্তব চিত্র এবং পরিবর্তন আসবে অর্থনৈতিক আঙিনায়। বাড়বে চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতাও। প্রতিষ্ঠিত হবে বহুমুখী যোগাযোগ ব্যবস্থা। ফলে চাপ কমবে নগরের ওপরে। এ লক্ষ্যে টানেলের কাজ এগিয়ে নিতে সংশোধিত এডিপিতে বরাদ্দ বাড়ছে।

প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজারের জাতীয় মহাসড়কের যোগাযোগ ব্যবস্থারও উন্নয়ন করা হবে। এখানে দেশের সর্ববৃহৎ ৬০০ মেগাওয়াট করে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াটের দুটি আলট্রাসুপার ক্রিটিক্যাল কোল ফায়ার্ড পাওয়ার প্ল্যান্ট নির্মিত হচ্ছে। সেটিরও সহযোগী হবে বঙ্গবন্ধু টানেল।

টানেলটি নির্মিত হলে কর্ণফুলী নদীর দুই তীরে নতুন ও আধুনিক শিল্পকারখানাও গড়ে উঠবে। তাছাড়া, ভবিষ্যতে সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দরের সঙ্গে ঢাকা-চট্টগ্রাম সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হবে। এটি এশিয়ান হাইওয়ের সঙ্গে যুক্ত হবে।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্র থেকে জানায়, ৩ দশমিক ৩২ কিলোমিটার টানেলের নির্মাণ ব্যয় ৯ হাজার ৮৮০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ঋণ হিসেবে চাইনিজ এক্সিম ব্যাংক দেবে ৫ হাজার ৯১৩ কোটি টাকা। ইতোমধ্যে প্রকল্পে খরচ হয়েছে ১ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা।

টানেল টিউব দৃশ্যমান করতে ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ২ হাজার ১৯০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

কর্ণফুলী টানেল নির্মাণ প্রকল্পের পরিচালক হারুনুর রশিদ চৌধুরী ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘দ্রুতগতিতে প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলেছে। ইতোমধ্যে ৩২ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। চীনের দুটি বড় জাহাজে প্রকল্প এলাকায় আসা নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে কাজ অব্যাহত রয়েছে।’

‘রবিবার টানেল টিউব নির্মাণ কাজ শুরু হবে। প্রধানমন্ত্রী কনস্ট্রাকসন ইয়ার্ড টানেল প্রকল্প এলাকা থেকে এই কাজের উদ্বোধন করবেন। প্রকল্পে অর্থছাড় ঠিকঠাক আছে। ২০২২ সালেই টানেল উন্মুক্ত করা হবে।’

প্রকল্পের আওতায় ১২৯ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ, ৫ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক, ৭৬ হাজার বর্গফুট টোল প্লাজার কাজ এবং ৭২৭ মিটার সেতুসহ সাতটি যানবাহন কেনা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

(ঢাকাটাইমস/২৩ফেব্রুয়ারি/ব্যুরো/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :