ভিক্ষার চালে চলে লক্ষ্মীর সংসার

প্রকাশ | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ২২:৪৮

কোরবান আলী, ঝিনাইদহ

এক সময় ছিল সোনার সংসার। স্বামী, দুই ছেলে আর এক মেয়েকে নিয়ে সুখেই দিন কাটছিল। হঠাৎ স্ট্রোকে অচল হয়ে যায় শরীরের একপাশ। নষ্ট হয়ে যায় দৃষ্টিশক্তি। এরপর থেকেই নেমে আসে চরম দুর্ভোগ। ছাড়তে হয় স্বামীর সংসার। স্বামীর ভাগ নিয়েছেন সতীন। এখন মাটির তৈরি কুড়ে ঘরে ঠাঁই হয়েছে লক্ষ্মী দাসের।

৭৫ বছর বয়সী মা কাঞ্চন দাসের ভিক্ষার চালে চলে লক্ষ্মীর পেট। বলছিলাম শহরের ষাটবাড়ীয়া এলাকার বস্তা ব্যবসায়ী মুকুল দাসের স্ত্রী লক্ষ্মী দাসের কথা। বর্তমানে তিনি সদর উপজেলার নেবুতলা গ্রামের দাসপাড়ায় মায়ের বাড়িতে আছেন।

গত মঙ্গলবার নেবুতলা গ্রামের দাসপাড়ায় গিয়ে দেখা যায়, মাটির তৈরি ঘরের বারান্দায় শুয়ে আছেন লক্ষ্মী দাস। হাতের অসহ্য ব্যথায় কাতরাচ্ছেন। নেই ওষুধ কেনার টাকা। চাল আর আনাচপাতি না থাকায় রান্না হয়নি সকালে। ৭৫ বছর বয়সী মা কাঞ্চন দাস বেরিয়েছেন ভিক্ষা করতে। দুপুরে ফিরলে তবেই খাওয়া হবে।

লক্ষ্মী দাস জানান, ছয় বছর আগে ষাটবাড়িয়ায় স্বামীর বাড়িতে থাকা অবস্থায় স্ট্রোক হয় তার। স্ট্রোকে বাম হাত ও বাম পা অচল হয়ে যায়। সেই সাথে অন্ধ হয়ে যান তিনি। ঝিনাইদহ, যশোর, কুষ্টিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে চোখের চিকিৎসা করালেও ফেরেনি চোখের আলো। টাকা না থাকায় বড় কোন হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে পারেননি। অন্ধ হওয়ার বছর দুই যেতে না যেতেই স্বামী আবারো বিয়ে করেন। অচল হওয়ায় সতীনের সংসারে মেলেনি স্থান। বড় ছেলে বিয়ে করে অন্যত্র ঘর বেঁধেছেন। আর মেয়েকে বিয়ে দেয়ায় তিনি রয়েছেন স্বামীর বাড়িতে। ছোট ছেলে থাকে বাবার কাছে।

গ্রামের মানুষ বিভিন্ন সময় সাহায্য করলেও এখন আর কেউ সাহায্য করেন না। মায়ের ভিক্ষার চালে চলে মা ও মেয়ের পেট।

অসহায় লক্ষ্মীর চিকিৎসা বা সংসার চালানোর জন্য সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন তার প্রতিবেশীরা।

(ঢাকাটাইমস/২৫ফেব্রুয়ারি/এলএ)