দেশসেরায় হ্যাটট্রিক: রাজশাহী কলেজে আনন্দ
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় টানা তৃতীয়বার ‘দেশসেরা’ হিসেবে প্রথম স্থান ধরে রাখায় রাজশাহী কলেজে এখন বইছে আনন্দের জোয়ার।
সোমবার এ র্যাংকিং ঘোষণার পর মঙ্গলবার ক্যাম্পাসে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা যায়। এই অর্জন আনুষ্ঠানকিভাবে উদযাপনেরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ।
সোমবার দুপুরে গাজীপুরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. হারুন-অর-রশিদ সংবাদ সম্মেলন করে ২০১৭ সালের র্যাংকিং ঘোষণা করেন। এতে ৩১টি সূচকে এবার মোট ৭২ দশমিক ৯৬ পয়েন্ট পেয়ে দেশসেরার খেতাব ধরে রাখে পদ্মাপাড়ের ঐতিহ্যবাহী রাজশাহী কলেজ। এর আগে ২০১৫ এবং ২০১৬ সালের র্যাংকিংয়েও রাজশাহী কলেজ ছিল প্রথম স্থানে।
এদিকে র্যাংকিং ঘোষণার প্রচলন শুরু হওয়ার পর থেকেই রাজশাহী কলেজ প্রথম স্থান ধরে রাখায় উচ্ছ্বসিত কলেজটির শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। র্যাংকিংয়ের খবর পাওয়ার পর থেকেই তারা নানাভাবে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন। এর অবদান কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর হবিবুর রহমানকে দিয়ে তাকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন অনেকেই। তবে অধ্যক্ষ বলেছেন, এই অর্জন সম্মিলিত প্রচাষ্টার ফল।
তিনি বলেন, তারা গতানুগতিক শিক্ষার চেয়ে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষার প্রতি বেশি জোর দিয়েছেন। এ জন্য তারা প্রতিটি শ্রেণিকক্ষ মাল্টিমিডিয়া করেছেন। শিক্ষার্থীদের তথ্য-প্রযুক্তির শিক্ষা দেয়া হচ্ছে। এছাড়া সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা ও সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের সুনজর থাকায় কলেজটিতে নানা বিষয়ের উন্নয়ন করা গেছে। সহায়তা করেছে কলেজের ছাত্রসংগঠন গুলোও। আর তিনি গড়ে তুলেছেন সবুজ এক পরিচ্ছন্ন ক্যাম্পাস। তাই টানা তিনবারের মতো এই স্থান ধরে রাখা গেছে। অধ্যক্ষ বলেন, এই অর্জন আমরা অবশ্যই উদযাপন করব। বুধবার আনন্দ র্যালি বের করা হবে।
১৮৭৩ সালের ১ এপ্রিল মাত্র ৬ জন ছাত্র নিয়ে পদ্মা নদী পাড়ের ৩৫ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয় রাজশাহী কলেজ। পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু, খ্যাতিমান চলচ্চিত্র পরিচালক ঋত্বিক ঘটক, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য স্যার যদুনাথ সরকার, বৈজ্ঞানিক প্রথায় ইতিহাস চর্চার পথিকৃত অক্ষয় কুমার মৈত্র, সাবেক প্রধান বিচারপতি হাবিবুর রহমান, পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ আলী মিয়া, শিক্ষানুরাগী মাদার বখশ, জাতীয় চার নেতার একজন এএইচএম কামারুজ্জামানের মতো বরেণ্য ব্যক্তিত্ব এ কলেজের ছাত্র ছিলেন।
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় ২০১৩ ও ২০১৪ সালে রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডে প্রথম স্থান অর্জন করে রাজশাহী কলেজ। ২০১৪ সালে কলেজটি সারাদেশের সরকারি কলেজের মধ্যে শ্রেষ্ঠ স্থান অর্জন করে। ২০১৫ সাল থেকে এখন সরকারি-বেসরকারি সব র্যাংকিংয়েই সেরা স্থান ধরে রেখেছে রাজশাহী কলেজ। বর্তমানে এ কলেজে ১৯টি বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পড়ানো হয়। বর্তমানে উচ্চ মাধ্যমিক থেকে স্নাতক পর্যন্ত এ কলেজের শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার।
ঢাকাটাইমস/২৬ফেব্রুয়ারি/ ইএস