খাবার গ্রহণে অনীহার কারণ হতে পারে অটিজম
অটিজমের কারণে খাবারের প্রতি অনীহা সৃষ্টি হতে পারে। সম্প্রতি এক গবেষণার পর এমনটি জানিয়েছে যুক্তরাজ্যের দাতব্য প্রতিষ্ঠান অটিস্টিকা। সংস্থাটি জানিয়েছে, এনারক্সিয়া বা ক্ষুধামন্দা রোগ নিয়ে যারা হাসপাতালে ভর্তি হয় তাদের মধ্যে প্রতি পাঁচজনের একজনের অটিস্টিক সমস্যা রয়েছে।
ক্ষুধামন্দায় আক্রান্ত এক নারী জানান, অটিজমের কারণেই তিনি খাবার গ্রহণের ব্যাপারে অবসেসড বা ভীষণ রকম খুঁতখুঁতে মেজাজের হয়ে পড়েন যদিও ওজন কমানোর বিষয়ে তিনি আগ্রহী ছিলেন না। কিন্তু এরপরেও খাদ্য গ্রহণের বেলায় তিনি কতোটুকু ক্যালরি নিচ্ছেন সব হিসেব রাখতেন। খবর বিবিসির।
এমন প্রেক্ষাপটে ক্ষুধামন্দার সঙ্গে অটিজমের সম্পর্ক কতটা গভীর- তা জানতে এই নিয়ে আরও ব্যাপক গবেষণার দরকার বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। যুক্তরাজ্য ভিত্তিক স্বাস্থ্য বিষয়ক প্রতিষ্ঠান নাইস বলছে, ক্ষুধামন্দা ও অটিজমের সম্পর্ক জানতে আরও গবেষণা হওয়া প্রয়োজন।
২৪ বছর বয়সী সোফী ম্যাকক্লেন্স বলেন, তার ক্ষুধামন্দার পেছনেও অটিজমই মূলত দায়ী ছিল। তিনি খাদ্য গ্রহণ করতে চাইলেও অনেক ক্ষেত্রেই হত না। কারণ মনের মধ্যে সারাক্ষণ ক্যালোরির হিসেব ঘুরঘুর করত। সেই ১৯ বছর বয়স থেকেই তার এই ক্ষুধামন্দার শুরু। তবে, তার অটিজম তখনো নির্ণয় করা যায়নি।
একটি পর্যায়ে হাসপাতালে ভর্তি হতে বাধ্য হন ম্যাকক্লেন্স। তার শরীর শুকিয়ে এতটাই ভঙ্গুর হয়ে গিয়েছিল যে হাসপাতালে তাকে হুইলচেয়ারে করে চলাফেরা করতে হত। কিন্তু এতকিছুর পরও তখনো তার অটিজম ধরা পড়েনি। অটিজম ধরা পড়েছে গতবছর। সোফি ম্যাকক্লেন্স মনে করেন, যদি তার অটিজমের সমস্যা আগে ধরা পড়ত তাহলে তিনি আরও আগেই সুস্থ হয়ে উঠতে পারতেন।
অটিস্টিকার বিজ্ঞান বিষয়ক পরিচালক ড. জেমস কুসাক বলেন, যুক্তরাজ্যের জাতীয় প্রতিষ্ঠান নাইস এর পক্ষ থেকে একটি দিক-নির্দেশনা থাকা দরকার। ২০১৫ থেকে ২০১৭ এর মধ্যে সম্পন্ন হওয়া তিনটি গবেষণার কথা উল্লেখ করে কুসাক বলেন, এনারক্সিয়া বা ক্ষুধামন্দায় আক্রান্ত নারীদের মধ্যে শতকরা অন্তত ১৫ ভাগ নারীই অটিজমে আক্রান্ত।
যুক্তরাজ্যের একটি প্রণিধানযোগ্য ক্লিনিক দি সাউথ লন্ডন এন্ড মডস্লেই এনএইচ ট্রাস্টস ইটিং ডিসঅর্ডার সার্ভিস জানিয়েছে, তাদের কাছে আসা রোগীদের মধ্যে অন্তত ৩৫ শতাংশেরই অটিজম রয়েছে।
ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের একজন গবেষক উইল মেন্ডি বলেন, কারো অটিজম আছে কি-না তা যতক্ষণ না জানা যায়, তার সঠিক চিকিৎসাই শুরু করা যাবে না।
দি সাউথ লন্ডন এন্ড মডস্লেই এনএইচ ট্রাস্টস ইটিং ডিসঅর্ডার সার্ভিসের ক্যারোলাইন নর্টন বলেন, তাদের কাছে যে রোগীরা আসেন তার মধ্যে অটিজমে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে অনেক ক্ষেত্রেই সময় নিয়ে একা কথা বলতে হয়। আর এর ভেতর দিয়েই পুষ্টিবিদদের সহায়তায় রোগীদের জন্য খাদ্য তালিকাও ঠিক হয়।
ঢাকা টাইমস/২৮ফেব্রুয়ারি/একে