শুভ জন্মদিন পপগুরু

বিনোদন প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১২:৫৫ | প্রকাশিত : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১২:৪৯

আজম খান। পুরো নাম মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম খান। বলা হয়ে থাকে, তার মাধ্যমেই বাংলা সংগীত জগতে ব্যান্ড গানের যাত্রা শুরু হয়েছিল। এ জন্য তাকে বাংলা ব্যান্ড সংগীতের গুরু বলা হয়। জীবদ্দশায় বেশ কিছু হিট গান উপহার দিয়ে গেছেন এই শিল্পী। তার ব্যতিক্রমী ঢঙের গায়কীতে মুগ্ধ হতেন এ দেশের ব্যান্ড সংগীতপ্রিয় মানুষ। দেশের গানেও কণ্ঠ দিয়েছিলেন পপগুরু।

সেই আজম খানের আজ জন্মদিন। ১৯৫০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি তার জন্ম হয়েছিল ঢাকার আজিমপুরে। তবে ছয় বছর বয়স থেকে তিনি পরিবারের সঙ্গে কমলাপুর থাকতেন। বেঁচে থাকলে আজ তার বয়স হতো ৬৯। কিন্তু দীর্ঘদিন ক্যান্সারে ভোগার পর ২০১১ সালের ৫ জুন ঢাকাস্থ সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।

সংগীত শিল্পী আজম খান

আজম খানের কর্মজীবন শুরু মূলত ষাটের দশকের শুরুতে। ১৯৭১ সালে তার ব্যান্ড ‘উচ্চারণ’ দেশব্যাপী ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। বন্ধু নিলু ও মনসুরকে গিটারে, সাদেক ড্রামে এবং নিজেকে প্রধান ভোকাল করে শুরু করেন সংগীত জীবন। ওই সময় বিটিভিতে তার গাওয়া ‘এতো সুন্দর দুনিয়ায় কিছুই রবে না রে ‘ এবং ‘চার কালেমা সাক্ষী দেবে’ গান দুটি প্রচার হয়। দুটিই বেশ প্রশংসা পায়। ১৯৭৫ সালে দেশত্ববোধক ব্যান্ড গান ‘রেল লাইনের ওই বস্তিতে’ দিয়ে হৈ চৈ ফেলে দেন আজম খান।

অন্যান্য চরিত্রে আজম খান

১৯৯১-২০০০ সালে তিনি গোপীবাগ ফ্রেন্ডস ক্লাবের পক্ষ হয়ে প্রথম বিভাগ ক্রিকেট খেলতেন। এছাড়া তিনি ‘গডফাদার’ নামে একটি বাংলা সিনেমায় ভিলেনের ভূমিকায় অভিনয় করেন। সেই ছবির নায়ক ছিলেন অ্যাকশন হিরো রুবেল। পাশাপাশি বেশ কিছু বিজ্ঞাপন চিত্রেও তিনি মডেল হিসেবে কাজ করেন।

মুক্তিযোদ্ধা আজম খান

১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের সময়ে আজম খান পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। তখন তিনি ক্রান্তি শিল্পী গোষ্ঠীর সক্রিয় সদস্য ছিলেন এবং পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর শোষণের বিরুদ্ধে গণসঙ্গীত প্রচার করেন। ১৯৭১ সালে আজম খানের বাবা আফতাব উদ্দিন খান সচিবালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছিলেন। বাবার অণুপ্রেরণায় তিনি যুদ্ধে যাওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন। ২১ বছর বয়সে যুদ্ধে যান শিল্পী।

আজম খানের গাওয়া গান প্রশিক্ষণ শিবিরে মুক্তিযোদ্ধাদের প্রেরণ যোগাতো। তিনি যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন ভারতের মেলাঘরের শিবিরে। এরপর তিনি কুমিল্লায় পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে সমুখ সমরে অংশ নেয়া শুরু করেন। কিছুদিন পর তিনি আবার আগরতলায় ফিরে আসেন।

এরপর তাকে পাঠানো হয় ঢাকায় গেরিলা যুদ্ধে। আজম খান ছিলেন দুই নম্বর সেক্টরের একটা সেকশনের ইনচার্জ। আজম খান মূলত যাত্রাবাড়ি-গুলশান এলাকার গেরিলা অপারেশনগুলো পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন।

গবেষণা, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সংগীতসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রাখায় চলতি বছরে ২১ গুণী ব্যক্তিত্বকে রাষ্ট্রের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘একুশে পদক’ দেয়া হয়। সেই তালিকায় নাম ছিল আজম খানেরও। সংগীতে বিশেষ অবদান রাখায় তাকে এ পুরস্কার দেয় বাংলাদেশ সরকার। গত ২০ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রয়াত এই শিল্পীর পক্ষে পদক গ্রহণ করেন তার মেঝো ভাই প্রখ্যাত সুরকার আলম খান।

ঢাকাটাইমস/২৮ ফেব্রুয়ারি/এএইচ

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিনোদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বিনোদন এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :