১৬ নদ-নদীর কুড়িগ্রাম এখন মরুভূমি

প্রকাশ | ০২ মার্চ ২০১৯, ১১:০২

মমিনুল ইসলাম বাবু, কুড়িগ্রাম

ছোট-বড় ১৬টি নদ-নদী নিয়ে কুড়িগ্রাম জেলা। এই জেলায় রয়েছে ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, ধরলা, দুধকমারসহ ছোট-বড় ১৬ নদ-নদী। কিন্তু এই বিশাল জলরাশি এখন শুকিয়ে মরুভূমিতে পরিণত হচ্ছে।

বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে বয়ে যাওয়া অধিকাংশ নদ-নদী পানিশূন্য হয়ে পড়ায় মানুষ হেঁটেই চলাচল করছে। যেদিকে তাকানো যায়, শুধু বালু আর বালু। গেল বছর বন্যা না হওয়ায় এবারের শুষ্ক মৌসুমে আগাম পানির স্তর নিচে নেমে গেছে। ফলে কৃষিসহ জীববৈচিত্রে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।

আষাঢ়, শ্রাবণ, ভাদ্র ও আশ্বিন চার মাস নদীগুলোতে পানি থাকে। বছরের বাকি আট মাসের মধ্যে কার্তিক ও অগ্রহায়ণ দু’মাস পানি মাঝামাঝি এসে দাঁড়ায়। কিন্তু পৌষ, মাঘ, ফাল্গুন, চৈত্র, বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ এই ছয় মাস পানি হাঁটু পরিমাণে নেমে আসে।

চিলমারী নৌ-বন্দরের মাঝি মালেক, হাসমত আলীসহ অনেকেই জানান, ব্রহ্মপুত্র ভরাট হওয়ার কারণে নৌ-চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। পানি কম থাকায় নৌকা ঘুরে যেতে তেল ও সময় দুটোই বেশি লাগে। এতে করে মাঝিরা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম রিপন বলেন, মাটিতে রস না থাকায় সেচ দিয়ে আবাদ করতে গুণতে হচ্ছে বাড়তি খরচ। দিন দিন তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় চরের ফলনও কমছে। ফলে ধারদেনা করে আবাদ করলেও লোকসানের মুখে পড়েছে চরাঞ্চলের কৃষক।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ জানান, যেসব নদীর এখনও জীবন আছে সেগুলোর পানির দ্রুত ন্যায্য হিস্যা বাস্তবায়ন না করা গেলে পানির অভাবে এ জেলা মরুভূমিতে পরিণত হবে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান প্রধান জানান, বন্যা আর বৃষ্টিপাত না থাকায় কৃষককে ঝুঁকিতে পড়তে হচ্ছে। দেশের অন্যান্য জায়গার তুলনায় কুড়িগ্রামের আবাদি জমির কম পানি ধারণক্ষমতাকেও খরার জন্য দায়ী করেন এই কর্মকর্তা।

জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন বলেন, দ্রুত পানি শুকিয়ে যাওয়ার কারণে জেলার কৃষি এবং পরিবেশের উপর বিরূপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে।

(ঢাকাটাইমস/২মার্চ/প্রতিনিধি/এলএ)