কটাক্ষকারীরাই আমার প্রেরণা: পারভেজ

আরিফ হাসান
| আপডেট : ০৬ মার্চ ২০১৯, ১৯:৪৭ | প্রকাশিত : ০৬ মার্চ ২০১৯, ১২:৪১
‘ফুল এইচডি’ নাটকের একটি দৃশ্যে অভিনেতা পারভেজ সুমন

বাংলা নাট্য জগতের একজন প্রচারবিমূখ অভিনেতা পারভেজ সুমন। দীর্ঘদিন ধরে অভিনয়ের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও প্রচারবিমূখ হওয়ায় এতদিনেও লাইমলাইটে আসতে পারেননি। তবে অভিনয় করে যাচ্ছেন নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে। কেরিয়ারের শুরু থেকে বর্তমানের নানা বিষয় নিয়ে বুধবার এই অভিনেতা কথা বলেন ঢাকাটাইমসের সঙ্গে।

কবে, কীভাবে অভিনয়ে আসলেন?

অভিনয়ের ইচ্ছা ছোটবেলা থেকে। ২০০৫ সালে দশম শ্রেণিতে পড়াকালীন বিটিভিতে প্রচারিত অঞ্চলভিত্তিক একটি নাটকে প্রথম অভিনয় করেছিলাম। সেখান থেকে শুরু। এরপর দীর্ঘদিন থিয়েটারে অভিনয় করেছি। ২০১৪ সাল থেকে পেশাদার অভিনেতা হিসেবে কাজ শুরু।

পেশাদার অভিনেতা হিসেবে প্রথম কাজ কোনটি?

‘অলসপুর’। আল হাজেন পরিচালিত তারকাবহুল এই নাটকের শুটিং শুরু হয় ২০১০ সালের ১১ নভেম্বর। টিভিতে প্রচার হয় ২০১১-এর এপ্রিল থেকে। এই নাটকের সঙ্গে আমি যুক্ত হই ২০১৫ সালের শেষ দিকে। গত বছর এটির প্রচার শেষ হয়েছে। বাংলা নাটকের সবচেয়ে দীর্ঘতম ধারাবাহিক ‘অলসপুর’। নাটকে আমি এলাকার চেয়ারম্যানের চ্যালার ভূমিকায় ছিলাম।

কখনো কোনো নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পেয়েছেন?

আমি আসলে ধারাবাহিক নাটকে বেশি অভিনয় করি। এ পর্যন্ত আমার অভিনীত প্রায় ৬০০ নাটক টিভিতে প্রচার হয়েছে। ধারাবাহিক নাটকে সাধারণত একক কোনো কেন্দ্রীয় চরিত্র খুব একটা থাকে না। তবে এনটিভিতে প্রচারিত ‘উদ্দীপন’ নামে ২০ মিনিটের একটি নাটিকায় প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছিলাম। পাশাপাশি গত বছর ‘শুকনো পাতার নুপূর’ নামে একটি ধারাবাহিকেও প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছি।

অভিনয়ে আসার ক্ষেত্রে পরিবারের সমর্থন কতটুকু?

শুরু থেকেই আমার পরিবার আমাকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে, আমার বাবা এবং মা দুজনেই সব সময় আমাকে উৎসাহ ও সাহস দেন। এখনও দিয়ে যাচ্ছেন। আমার কোনো নাটক টিভিতে প্রচার হলে তারা দেখার চেষ্টা করেন। যদিও সব নাটক দেখা হয় না।

অভিনয় জগতে কাকে অনুপ্রেরণা মনে করেন?

হুমায়ূন ফরিদী স্যার। চলচ্চিত্রে তিনি ভিলেন চরিত্রে অভিনয় করলেও নায়কদের থেকে তার অভিনয় আমাকে বেশি মুগ্ধ করতো। বেশ কিছু চলচ্চিত্র ও নাটকে তিনি পজিটিভ রোলে অভিনয় করেছেন। আমি এখনও সেই নাটক ও সিনেমাগুলো দেখি। শেখার চেষ্টা করি।

অভিনয় জগতে এসে কোনো বাধার মুখে পড়েছেন?

শুরু থেকেই। গ্রাজুয়েশন শেষ করে অভিনয়ে আসি। ইন্ডাস্ট্রির সিনিয়র ভাইয়েরা সে সময় আমার চেহারা নিয়ে কটাক্ষ করতেন। নিরুৎসাহিত করতেন। বলতেন, তোমাকে দিয়ে অভিনয় হবে না, তোমার যে চেহারা। টাকা পয়সা কত আছে? এটা গ্লামার ওয়ার্ল্ড। টাকা পয়সা না থাকলে এই জগতে টেকা যায় না। সেই কটাক্ষকারীরাই আমার প্রেরণা। তাদের কটাক্ষকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছিলাম। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এখন তারাই আমাকে কাছে ডাকেন, সমীহ করেন।

ভবিষ্যতে নিজেকে কোথায় দেখতে চান?

ভবিষ্যত নিয়ে আমি খুব একটা ভাবি না। শুধু ভালো অভিনয় করে যেতে চাই, যাতে দর্শকরা আমাকে অন্তত একটু মনে রাখেন। অভিনয় করি দর্শকদের জন্য। তারা ভালোবেসে আমাকে যে স্থানে রাখবেন, আমি সেখানেই থাকতে রাজি। বড় সুপারস্টার হতে হবে এমনটা কখনও মনে করি না।

বর্তমানে কোন কোন নাটকের কাজ করছেন?

মাছরাঙা টেলিভিশনে ‘ফুল এইচডি’ নামে একটি ধারাবাহিক চলছে। সপ্তাহের রবি, সোম, মঙ্গল ও বুধবার এটি প্রচার হয়। অরণ্য আনোয়ার পরিচালিত এই ধারাবাহিকটি আমার কেরিয়ারের একটা টার্নিং পয়েন্ট বলতে পারেন। এখানে আমি গণেশ চরিত্রে আছি। যিনি একজন ঠান্ডা মাথার কিলার। পাশাপাশি বাংলাভিশনে ‘চাটাম ঘর’, বৈশাখীতে সকাল আহমেদের ‘শান্তিপুরীতে অশান্তি’ ধারাবাহিক দুটি প্রচার হচ্ছে।

পাইপলাইনে কোনো কাজ আছে?

হ্যা, তিনটি ধারাবাহিকের কাজ হাতে আছে। সেগুলো হলো- আল হাজেন পরিচালিত ‘ছায়া ছবি’, হিরণ জামানের ‘টিপু সুলতান’ এবং ইমরান হাওলাদারের ‘ভিলেজ হট্টগোল’। কমেডি ঘরানার তিনটি নাটকের গল্পই বেশ চমৎকার।

সিনেমায় অভিনয় করার ইচ্ছা আছে?

এটাকে আসলে ইচ্ছা না বলে স্বপ্ন বলা ভালো। আর এই স্বপ্নটা সব অভিনয়শিল্পীরই থাকে। আমারও আছে। সুযোগ পেলে সিনেমায় বুঝে-শুনে কাজ করতে চাই। নেগেটিভ চরিত্রের প্রতি বেশি আগ্রহ আছে।

ঢাকাটাইমসকে সময় দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।

আপনাকে এবং ঢাকাটাইমসকেও ধন্যবাদ

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিনোদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :