ঘরের পেছনে রাস্তাবিহীন ১৬ লাখ টাকার সেতু!

শওকত আলী, চাঁদপুর
| আপডেট : ০৭ মার্চ ২০১৯, ১৫:০৭ | প্রকাশিত : ০৭ মার্চ ২০১৯, ০৮:৪০

বসতঘরের পেছনে ছোট্ট নালা। সেই নালায় ঘরের পেছনের বেড়া সামনে রেখে নির্মাণ করা হয়েছে ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে পাকা সেতু। ওপার থেকে মনে হয় বেড়া দিয়ে সেতুর মুখ আটকা। আদতেই আটকা। সেতুর মুখে রাস্তার বদলে কেবল আছে ওই ঘরটি। ওপারে আর কোনো বসতিও নেই, দুটি পরিবারের বাড়ি ছাড়া।

চাঁদপুর সদর উপজেলার ৯ নম্বর বালিয়া ইউনিয়নের তালুকদারবাড়ির পেছনে এই সেতু নির্মাণ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এলাকায়। এ সেতু দিয়ে কারও যাতায়াত নেই। যাতায়াতের মানুষও নেই। অপ্রয়োজনীয় এই সেতু ঠিকাদারের স্বার্থরক্ষার জন্য বানানো হয় বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।

এলাকাবাসী বলেন, হাজার হাজার মানুষের দাবি আর চাহিদার পরও যেখানে সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে না, সেখানে একটি বাড়ির ভেতরে রাষ্ট্রের ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে বিনা প্রয়োজনে সেতু নির্মাণ করা জনগণের সঙ্গে পরিহাস করর শামিল।

নিয়ে জানা গেছে, ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। এ ঘটনায় বালিয়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বর ইসমাইল হোসেন তপন বাদী হয়ে ১০টি ভুয়া প্রকল্পের মাধ্যমে অর্ধ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ওমর ফারুক তালুকদারের বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে একটি অভিযোগ করেন।

চাঁদপুর সদর উপজেলা অফিস সূত্র জানায়, ফরিদগঞ্জ পৌর কাউন্সিলর মজিবুর রহমানের মিনহা এন্টারপ্রাইজকে বালিয়া তালুকদারবাড়ির সেতুর কাজ দরপত্রের মাধ্যমে দেওয়া হয়েছিল। পরে বালিয়ার তালুকদারবাড়ির ওমর ফারুক তালুকদার সেতুর কাজ ঠিকাদারের কাছ থেকে সাব-ঠিকাদার নিয়ে নিজেই কাজ সম্পন্ন করেন। জনবহুল রাস্তায় সেতু না করে বাড়ির ভেতরে ব্যক্তিস্বার্থে সেতু করার আগে বালিয়া ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. তাজুল ইসলাম কাজটি না করার জন্য উপজেলা পিআইও রফিকুল ইসলামের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। তার পরও সেতুটি নির্মাণ করা হয়। রাস্তা ছাড়া বাড়ির ভেতরে সেতু বানানোয় জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, বাড়ির পেছনে পানি নিষ্কাশনের জন্য ছোট একটি নালার ওপর সেতুটি বানানো হয়েছে। এর দুই পাড়ে কোনো রাস্তা নেই। সেতুর এপার-ওপারে প্রবেশমুখে রয়েছে চৌচালা টিনের ঘর। ব্রিজের পূর্ব পাড়ে রয়েছে বিশাল কৃষিজমি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ওমর ফারুক তালুকদার মোবাইল ফোনে জানান, বাড়ির ভেতর সেতুটি পৌর কাউন্সিলর মুজিবুর রহমানের লাইসেন্সে করা হয়েছে। রাস্তা না থাকলেও পরবর্তী সময়ে করা হবে। তালুকদারবাড়ির মানুষ ভবিষ্যতে সেতুটি ব্যবহার করবে।

উপজেলার পিআইও রফিকুল ইসলাম জানান, ‘এ সেতুটি আমি দায়িত্ব নেওয়ার আগে অনুমোদন হয়েছে। আমি আসার পরে বাস্তবায়ন হয়েছে। বাড়ির ভেতরে সেতুলেও আশপাশে ঘরবাড়ি রয়েছে। সেতু অনুমোদন দেওয়ার কোনো ক্ষমতা নেই আমার, আমি শুধু কাজের তদারক করে থাকি।’

(ঢাকাটাইমস/৭মার্চ/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :