তারকা অভিনেত্রী ববিতা

আমার আদর্শ পুরুষ মানবিক বোধসম্পন্ন

প্রকাশ | ০৮ মার্চ ২০১৯, ১৬:৩০ | আপডেট: ০৮ মার্চ ২০১৯, ২২:৪১

রুদ্র রুদ্রাক্ষ

বাংলাদেশের চলচ্চিত্রজগতের একজন সফল নারী ববিতা। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে কাজ করেছেন দুই শর বেশি সিনেমায়। পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ অসংখ্য সম্মাাননা। চলচ্চিত্রে এখন আর তেমন সক্রিয় নন, কিন্তু আছেন সমান জনপ্রিয়। কেমন ছিল ববিতার সিনেযাত্রার শুরুর দিকটা? এখনকার নারীদের নিয়েই বা কী ভাবনা এই তারকা নায়িকার। ঢাকাটাইমসের সঙ্গে আলাপচারিতায় জানালেন সেসব কথা। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন রুদ্র রুদ্রাক্ষ।

কেমন আছেন?

প্রচণ্ড ব্যস্ততার মধ্যে আছি। কাল নিউইয়র্ক যাত্রা করব। ওখান থেকে কানাডা। প্রায় এক মাসের সফর। অনেক গোছগাছ বাকি এখনো।

আজ নারী দিবস। আপনি কীভাবে দেখেন?

বিশেষ করে আমাদের মতো দেশে নারী দিবস অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটা উপলক্ষ। এখন অবশ্য সমাজবাস্তবতা অনেক বদলেছে। নারীরা ঘরের বাইরে বের হতে পারছে প্রায় বিনা বাধায়। কিন্তু আমাদের দেশের অবস্থা এ রকম ছিল না আগে। নারীকে ঘরের বাইরে বের হতে হাজারটা কৈফিয়ত দিতে হতো। এখন চাকরিক্ষেত্রেও নারীরা অনেক এগিয়েছে। অনেক প্রতিষ্ঠান তো অর্ধেক নারী অর্ধেক পুরুষ নিয়োগ দেয় বলেও জানি। এত সবকিছুর উন্নতির পরও কিন্তু নারীরা এখনো নির্যাতিত হচ্ছে ঘরে-বাইরে। এ কারণেই দিবসটার প্রয়োজন আছে। আমাদের মেয়েরা বুঝতে শিখুক তাদের একটা স্বাধীন সত্তা রয়েছে। প্রতিবাদ করার ভাষা তাদেরও আছে।

আপনার সিনেযাত্রার শুরুর সময়টা নিয়ে একটু বলুন।

নারী হিসেবে শুরুতে আমি অবমূল্যায়িত হয়েছি। শুরুর দিকে অনেক আত্মীয়স্বজন বলত 'মেয়ে মানুষ সিনেমায় যাচ্ছে'। যারা বলতেন তারা পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা থেকেই বলতেন। এরপর যখন আমি ববিতা হয়ে উঠলাম, খ্যাতি ¯পর্শ করলাম, তখন তারাই আবার সাধুবাদ জানানো শুরু করল। এই হচ্ছে আমাদের সামাজিক বাস্তবতা। এই জায়গায় দাঁড়িয়ে আমি বলব, ‘শোনো মেয়ে, তুমি তোমার লক্ষ্যে এগিয়ে যাও। কে কী বলল কে কী ভাবল এসব গায়ে না মেখে এগোও। সফল হও। দেখবে একদিন এই পিছে কথা বলা মানুষগুলোই তোমার সামনে দাঁড়িয়ে সাধুবাদ জানাচ্ছে।’

বাংলাদেশের মেয়েরা এখন কতটুকু স্বাধীন?

বাংলাদেশের মেয়েরা অনেকটা স্বাধীন। আমাদের সময়ের চেয়ে অবস্থান অনেক বেশি বদলেছে। তবে পথটা কঠিন তো। নারীদের পাবলিক বাস থেকে শুরু করে বাসায় ফেরা পর্যন্ত অনেক প্রতিকূলতা পেরোতে হয়। পাবলিক বাসের কথাই ধরুন। সেখানে নারী, শিশু ও প্রতিবন্ধীদের জন্য মাত্র ৯টা আসন। আমি এটা বদলের পক্ষে। এ ক্ষেত্রে সমতা দরকার। অর্ধেক-অর্ধেক হওয়া দরকার। এরপর রাস্তায়, অফিসে নানারকম কটু কথার শিকার হতে হয় তাদের। এসব সমস্যার সমাধান খুব কঠিন, তা কিন্তু নয়। দরকার মানবিক মূল্যবোধ। একজন মানবিক মূল্যবোধস¤পন্ন পুরুষ কখনো কোনো নারীকে অশ্রদ্ধা করে না।

এই মূল্যবোধ তৈরির উপায় কী?

এটা তৈরি করবে মূলত পরিবার। পরিবার গড়ে দেবে মূল ভিতটা। এই চর্চাটা ইতিমধ্যে শুরু হয়েও গেছে। আমরা সুফলও পাওয়া শুরু করেছি। কিন্তু এটা নিয়ে প্রচুর কথা হওয়া দরকার বলে আমি মনে করি।

একজন নারী হিসেবে আপনার আদর্শ পুরুষ কেমন?

যে নারীকে নারী হিসেবে নয় মানুষ হিসেবে শ্রদ্ধা করবে। রাস্তাঘাটে, বাসে, ট্রেনে কোনো নারীর প্রতি অপ্রীতিকর মন্তব্য ছুড়ে দেবে না। বাসায় ফিরে কোনো কারণে স্ত্রীর গায়ে হাত তুলবে না। সর্বোপরি পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা থেকে বের হয়ে একজন মানবিক বোধস¤পন্ন মানুষ হবে সে।

(ঢাকাটাইমস/৮মার্চ/মোআ)