এক সার্টিফিকেটেই মিলছে পর্তুগিজ নাগরিকত্ব

প্রকাশ | ১০ মার্চ ২০১৯, ১৩:০৭

রনি মোহাম্মদ, (লিসবন ,পর্তুগাল), ঢাকাটাইমস

দক্ষিণ-পশ্চিম ইউরোপের দেশ পর্তুগাল। আটলান্টিক মহাসাগরের দীর্ঘ উপকূল জুড়ে পর্তুগালের অবস্থান। তাই দেশটিকে ‘সাগর কন্যার দেশও’ বলা হয়ে থাকে। উষ্ণ আবহাওয়ার কারণে পর্তুগালে দর্শনার্থীদের ব্যাপক আগমন ঘটে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যরূপে যেমন সাবলীল তেমনি পর্তুগালকে ইউরোপে অভিবাসীদের ‘স্বর্গরাজ্য’ হিসেবেও আখ্যায়িত করা হয়।

ইউরোপের অন্যান্য দেশে যেখানে অভিবাসীদের বিষয়ে কঠোর নীতি অনুসরণ করা হয়। সেখানে পর্তুগাল বৈধ পন্থায় প্রবেশকারী অভিবাসীদের জন্য সহজশর্তে রেসিডেন্স (থাকার অনুমতি) প্রদান প্রক্রিয়া চালু রেখেছে।

বন্ধুসুলভ মানুষ, চমৎকার আবহাওয়া, ইতিহাস, ঐতিহ্য আর বহুবিচিত্র সাংস্কৃতির পাঠশালা পর্তুগাল মাত্র পাঁচ বছর যে কেউ বৈধভাবে বসবাস করলেই পাবেন পর্তুগিজ নাগরিকত্ব।

এই নাগরিকত্ব আবেদনের অন্যতম প্রধান শর্ত হচ্ছে পর্তুগিজ ভাষা দক্ষতার প্রমাণ বা সার্টিফিকেট প্রদান করতে হয়। যা আগে অত্যন্ত দুরূহ ব্যাপার ছিল কারণ বছরে মাত্র দুই একটি কোর্স চালু হতো সরকারিভাবে।

আর এই কোর্সের জন্য মানুষকে অপেক্ষা করতে হতো বছরের পর বছর। অনেকেই আছেন নাগরিকত্ব আবেদনের সময় অতিবাহিত হয়ে গেছে কিন্তু এই সার্টিফিকেট না থাকার ফলে আবেদন করতে পারছেন না।

বাংলাদেশী কমিউনিটি দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে বসবাস করে আসছে দেশটিতে। দীর্ঘ দিন ধরে বসবাসের ফলে অত্যন্ত সুনামের সাথে এদেশে বিভিন্ন খাতে ব্যবসা বাণিজ্য প্রসার ঘটাতে সক্ষম হয়েছে এখনকার প্রবাসী বাংলাদেশীরা।

যেমনটি, পর্তুগালে সুবিনিয়র বাজার বর্তমানে বাংলাদেশী উদ্যোক্তাদের দখলে। এছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে দেশটির রাজধানী লিসবনে প্রবাসী বাংলাদেশীগণ ‘ইন্ডিয়ান কারী’ শিল্পের ব্যাপক উন্নতি ও চাহিদা তৈরি করেছে।
এমন টির ধারাবাহিকতায় লিসবনের প্রবাসী বাংলাদেশী তিন তরুণ উদ্যোক্তা মোহাম্মদ সম্রাট, রাসেল আহমেদ এবং শওকত আজিজ উদ্যোগে, সুপরিসর ক্যম্পাস নিয়ে গড়ে উঠেছে ‘পর্তুগাল মাল্টিকালচ্যারাল একাডেমি’।

যেখানে মাত্র দুই মাসের কোর্স সম্পূর্ণ করে সহজে অর্জন করছে পর্তুগিজ ভাষা শিক্ষা সার্টিফিকেট।
পর্তুগালে বর্তমানে ৯০ টির ও বেশী দেশের অভিবাসী বসবাস করছে। পর্তুগিজ সরকার অনুমোদিত এই কোর্সটি যেকোনো দেশের অভিবাসী দিনের ভিন্ন ভিন্ন সময়ে নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী সম্পূর্ণ করছে এই কোর্সটি। ফলে পর্তুগালে অবস্থানরত বিশ্বের ৯০ টির ও বেশী দেশে অভিবাসীদের কাছে বাংলাদেশিদের এখন ভিন্ন পরিচয়।

এই স্কুলের একজন পর্তুগিজ শিক্ষিকা তেরেসা'র সঙ্গে আলাপকালে উঠে আসে নানান খুঁটি নাটি বিষয়। অভিবাসী হিসেবে সেই দেশের ভাষা শিক্ষার গুরুত্বারোপ করেন তিনি। ভালো ভাষা আয়ত্ব থাকলে এই দেশেই কাজের ব্যবস্থাসহ ভিন্ন দেশে বা পরিবেশে সহজে নিজেদের মানিয়ে নেয়া যায়। তাছাড়া বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের ভাষা শিক্ষার আগ্রহে তিনি অত্যন্ত মুগ্ধ হয়েছেন।

পাশাপাশি এমন সুন্দর শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করার জন্য কতৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

লিসবনে বাংলাদেশী উদ্যোক্তাদের এমন সময়োপযোগী পদক্ষেপে বাংলাদেশ কমিউনিটির বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ এটিকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন। এমন উদ্যোগে পর্তুগালে বাংলাদেশ কমিউনিটির ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে এমনটা প্রত্যাশা করছেন পর্তুগাল প্রবাসীরা।

ঢাকাটাইমস/১০মার্চ/ওআর