দুই ইউনিয়ন পুরুষশূন্য

মাদারীপুরে দুই সপ্তাহে তিন খুন

মাদারীপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৩ মার্চ ২০১৯, ০৯:২৫ | প্রকাশিত : ১৩ মার্চ ২০১৯, ০৮:৪৪

মাদারীপুর সদর ও শিবচরে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ত্রিপল মার্ডারের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ওই সব এলাকায় কয়েক দিন ধরে হামলা, পাল্টা হামলা, বাড়িঘর ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। গ্রেপ্তারের ভয়ে দুই ইউনিয়ন এখনো পুরুষশূন্য।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শিবচর উপজেলার দ্বিতীয়াখন্ড ইউনিয়নের মৃধা কান্দি গ্রামের আলেম মৃধার সঙ্গে একই বাড়ির জলিল মৃধাদের দীর্ঘদিন ধরে জমিজমা নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। গত রবিবার সকাল ১০টার দিকে দুই পক্ষের নারী-পুরুষের মধ্যে কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে ধ্বস্তাধ্বস্তির সময় আলেম মৃধার স্ত্রী সর্ব বেগম গাছের শিকড়ের ওপর আছড়ে পড়েন। তাকে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

মাদারীপুর সদর উপজেলা ভূমি অফিসের নাজির মোয়াজ্জেম মোল্ল¬া শনিবার রাত ১০টার দিকে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে ঝাউদি এলাকায় দুর্বৃত্তরা তাকে মোটরসাইকেল থেকে নামিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে গুরুতর জখম করে। তার চিৎকার শুনে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। পথে রাত সাড়ে ১২টার দিকে তিনি মারা যান।

মোয়াজ্জেম মোল্ল¬া হত্যার জেরে রবিবার কুলপদ্মী এলাকায় প্রতিপক্ষের বাড়িঘরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ সময় বিক্ষুব্ধ জনতা এলাকার প্রায় ২০-২৫ বাড়িতে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর, লুটপাট ও একাধিক বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

অন্য খুনটি হয় মাদারীপুর সদর উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা সাহেব আলী ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইউপি চেয়ারম্যান এজাজুর রহমান আকনের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি সকালে মাদারীপুর শহরে আসার পথে বাংলাবাজার এলাকায় সাহেব আলীকে (৫৫) কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে সাহেব আলীর অবস্থার অবনতি হলে বিকেলে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর তিনি মারা যান।

এ ঘটনার পর থেকে এলাকায় প্রতিপক্ষের অর্ধশত বাড়িতে দফায় দফায় হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। সাহেব আলী হত্যাকা-ের প্রতিবাদে গত কয়েক দিন বিক্ষোভ মিছিল, প্রতিবাদ সমাবেশ ও মানববন্ধনে উত্তাল হয়ে ওঠে পুরো শহর। মামলার পরে গ্রেপ্তার আতঙ্কে দুই ইউনিয়নের সহস্রাধিক পুরুষ মানুষ এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

মাদারীপুর সদর থানার ওসি কামরুল হাসান জানান, এখন পর্যন্ত কালিকাপুরের মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/১৩মার্চ/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :