আরসিবিসির মামলায় সমস্যা হবে না: গভর্নর

প্রকাশ | ১৩ মার্চ ২০১৯, ১৮:৫৩ | আপডেট: ১৩ মার্চ ২০১৯, ১৯:৫৯

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস

রিজার্ভ চুরির ঘটনায় নাম জড়ানোয় বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে ফিলিপাইনের রিজল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশন (আরসিবিসি)  যে মামলা করেছে তাতে টাকা ফেরত আনতে কোনো সমস্যা হবে না বলে জানিয়েছেন গভর্নর ফজলে কবির।

বুধবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গভর্নর এই কথা জানান। এর আগে রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে জনতা ব্যাংকের বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দেন গভর্নর।

তিন বছর আগে হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে নিউ ইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরি যাওয়া অর্থ উদ্ধারে যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে গত জানুয়ারিতে আরসিবিসির বিরুদ্ধে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

৬ মার্চ ফিলিপিন্সের সিভিল কোর্টে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিরুদ্ধে মানহানির অভিযোগ এনে আরসিবিসি একটি মামলা করে বলে মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়।

এ মামলা প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গভর্নর ফজলে কবির বলেন, ‘গতকাল আমি এ বিষয়টি পত্রিকার মাধ্যমে জেনেছি। এতে কোনো অসুবিধা নেই, মানহানি মামলা তারা করেছে।’

গভর্নর বলেন, ‘তারা (আরসিবিসি) বেকায়দা অবস্থায় আছে আমাদের নিউ ইয়র্কের মামলার জন্য।’

এ পাল্টা মামলা কি না-এমন প্রশ্নে গভর্নর বলেন, ‘তারা একটি মানহানি মামলা করেছে, মূল মামলা না।’

২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ ব্যাংকের সিস্টেম হ্যাকড করে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ অ্যাকাউন্ট থেকে ৮১ মিলিয়ন ডলার অর্থ চুরি করা হয়। হ্যাকাররা সেই অর্থ ফিলিপাইনের আরসিবিসি ব্যাংকের জুপিটার স্ট্রিট শাখার চারটি অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর করে। সেখান থেকে ওই অর্থ ফিলিপিনো পেসোতে রূপান্তরের পর দুটি ক্যাসিনোতে চলে যায়।

এ ঘটনায় দায়ী করে গত ১০ জানুয়ারি রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনের (আরসিবিসি) সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক মায়া সান্তোস দেগুইতোকে কারাদণ্ড দেয় দেশটির আদালত। চুরি যাওয়া রিজার্ভ উদ্ধারের আশায় গত ২ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে আরসিবিসির বিরুদ্ধে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক।

‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল থেকে এখন বেশি প্রয়োজন এসএমই লোন’

এদিকে জনতা ব্যাংকের সম্মেলনে গভর্নর ফজলে কবির বলেন, ‘বড় ইন্ডাস্ট্রিয়াল লোন থেকে এখন বেশি প্রয়োজন এসএমই লোন। এতে কর্মসংস্থানের বিশেষ ব্যবস্থা হবে।’

গভর্নর বলেন, ‘ব্যাংকাররা সঠিক জায়গায় ঋণ দেবেন। আমি আপনাদের বলবো এই অ্যাফোর্ট ( প্রচেষ্টা) বড় ঋণের চেয়ে ক্ষুদ্র মাঝারি ঋণ দিয়ে যাবেন। এটি হলো আপনাদের আসল কাজ। আমাদের দেশের অর্থনীতিতে এটি এখন অন্যতম প্রয়োজনীয় ব্যাপার। কটেজ-মাইক্রো-ক্ষুদ্র ও মাঝারি প্রতিষ্ঠানের জন্য লোন দেয়া বেশি প্রয়োজন। বড় ইন্ডাস্ট্রিয়াল লোন থেকে আমাদের এটি বড় দরকার। এতে আমাদের কর্মসংস্থানের বিশেষ ব্যবস্থা হবে।’

‘আর যে উদ্যোক্তা এ ঋণ পাবেন দেখা যায় তার অধীনে ২০ থেকে ৩০০ জনের মতো কাজ করে। এরা কিন্তু ভবিষ্যতে নিজেরা উদ্যোক্তা হবেন। এভাবে আমাদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারবো।’

ফজলে কবির বলেন, ‘আমাদের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন করপোরেট সুশাসন। সকল ব্যাংকের জন্য এটা প্রযোজ্য। করপোরেট গভর্নেন্স গুরুত্বপূর্ণ। এটি ব্যাংকের প্রতিটি স্থরে থাকতে হবে ‘

জনতা ব্যাংকের চেয়ারম্যান লুনা শামসুদ্দোহার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন  অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, অর্থমন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম।

(ঢাকাটাইমস/১৩মার্চ/জেআর/জেবি)