নিউজিল্যান্ডে মসজিদে সন্ত্রাসী হামলা, অল্পে রক্ষা পেল টাইগাররা

প্রকাশ | ১৫ মার্চ ২০১৯, ০৮:১৮ | আপডেট: ১৫ মার্চ ২০১৯, ১০:০৭

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে একটি মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে কতজন হতাহত হয়েছেন তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন তামিম ইকবাল, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলামসহ বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়।

দেশটির স্থানীয় সময় বেলা দেড়টার দিকে ক্রাইস্টচার্চের হেগলি ওভাল মাঠের খুব কাছে অবস্থিত আল নূর মসজিদে এই হামলার ঘটনা ঘটে।

লিটন দাস ও নাইম হাসান ছাড়া বাংলাদেশ দলের সবাই মাঠে অনুশীলনে ছিলেন। অনুশীলন শেষে তারা ওই মসজিদটিতে জুম্মার নামাজ পড়তে যান। তাদের সঙ্গ দিতে সৌম্য সরকার, দলের স্ট্রেন্থ ও কন্ডিশনিং কোচ মারিও ভিল্লাভারায়ন, দলের ডাটা অ্যানালিস্ট শ্রিনিবাসসহ বেশ কয়েকজন তাদের সঙ্গেই ছিলেন।

জানা গেছে, শুক্রবার জুমার নামাজ আদায়ের জন্য ৩০০ জনের মতো মুসল্লি মসজিদটিতে যান। অনুশীলন শেষে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের বেশ কয়েকজন খেলোয়াড়রাও মসজিদটিতে যাচ্ছিলেন। বাংলাদেশি খেলোয়াড়রা মসজিদে প্রবেশ করতে গেলে স্থানীয় একজন তাদের মসজিদে ঢুকতে নিষেধ করেন। বলেন, এখানে সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। আতঙ্কিত খেলোয়াড়েরা তখন দৌড়ে হ্যাগলি ওভালে ফেরত যান। যাওয়ার সময় তারা স্থানীয় জনগণকেও মসজিদটির আশপাশে যেতে নিষেধ করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী বেশ কয়েকজন জানান, একজন বন্দুকধারী মসজিদটিতে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে থাকেন। শব্দ শুনে সেখানে থাকা মুসল্লিরা দ্বিগ্বিদিক ছোটাছুটি করতে থাকেন। হামলার পর ওই বন্দুকধারী জানালার কাঁচ ভেঙে হামলাকারী পালিয়ে যায়। হামলাকারীর হাতে অটোমেটিক রাইফেল ছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, মসজিদটি ছাড়াও এছাড়া আশপাশের বেশ কয়েকটি স্কুলেও গোলাগুলির শব্দ শুনতে পেয়েছেন। এসব ঘটনায় কতজন হতাহত হয়েছেন তা বলতে পারেননি কেউ। দেশটির শীর্ষস্থানীয় পত্রিকা স্টাফ ইঞ্জিন আহতের সংখ্যা অর্ধশত পেরিয়ে যেতে পারে বলে খবর দিয়েছে। তাদের মধ্যে দুজন নারীকে গুরুতর আহত অবস্থায় স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আবার বেশ কয়েকটি অনলাইনে নিহতের সংখ্যা ছয় বলে জানানো হচ্ছে। মসজিদটির আশপাশের এলাকা কর্ডন করে রেখেছে পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দাদের ঘরে থাকতে বলা হচ্ছে।

হামলার পর আশপাশের স্কুলগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কমিশনার মাইক বুশ। দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শহরের ক্যাথিড্রাল স্কয়ারে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে একটি র‍্যালিতে অংশ নিতে কয়েক হাজার শিশু জড়ো হওয়ার পর ওই জায়গাটি খালি করে ফেলা হয়েছে।

হামলার পর বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের হোটেলে ফিরে নেওয়া হয়েছে। তাদের সবার চোখে মুখে ছিল আতঙ্কের ছাপ।

তামিম ইকবাল নিজের টুইটার একাউন্টে লিখেছেন, ‘পুরো দল গোলাগুলির হাত থেকে বেঁচে গেলো। খুবই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা, সবাই আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের ডাটা অ্যানালিস্ট শ্রিনিবাস তার টুইটার একাউন্টে লিখেছেন, ‘মাত্রই এক বন্দুকধারীর হাত থেকে রক্ষা পেলাম। এখনো শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক হচ্ছে না। ভয় কাজ করছে সর্বত্র।’

উল্লেখ্য, ক্রাইস্টচার্চের হেগলি ওভাল মাঠে আগামীকাল বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যেকার তৃতীয় টেস্ট হওয়ার কথা। হামলার এই ঘটনার পর শনিবারের এই খেলা হবে কি না তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

ঢাকাটাইমস/১৫মার্চ/এমআর