নিউ ইয়র্ক সিনেটে ‘বাংলাদেশি ইমিগ্র্যান্ট ডে’ আইন পাস

প্রকাশ | ১৫ মার্চ ২০১৯, ১৪:৩৯

তোফাজ্জল লিটন

নিউ ইয়র্ক সিনেটে ‘বালাদেশি ইমিগ্র্যান্ট ডে’ আইন পাস হয়েছে। এ বছর থেকে নিউ ইয়র্ক স্টেটে ২৫ সেপ্টেম্বর ‘বাংলাদেশি ইমিগ্রান্ট ডে’ হিসেবে পালিত হবে। নিউ ইয়র্ক স্টেট ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে দিনটিকে। মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা বিশ্বজিত সাহার পক্ষ থেকে ২৭ ফেব্রæয়ারি আলবেনিতে অনুষ্ঠিত সেনেট অধিবেশনে এই বিলটি উত্থাপন করলে টবে আন্ স্তাভাস্কি। সর্বসম্মতিক্রমে পাস হওয়ার পরে ‘বাংলাদেশি ইমিগ্রান্ট ডে’ রেজ্যুলেশন ৩২২ নাম্বারের আইনটি ঘোষণা করেন নিউ ইয়র্ক স্টেটের গভর্ণর এন্ড্রু ক্যুমো।

‘বালাদেশি ইমিগ্র্যান্ট ডে’ হিসেবে ২৫ সেপ্টেম্বরকে বাচাই করা প্রসঙ্গে দিবসটির স্বপ্নদ্রষ্টা বিশ্বজিত সাহা বলেন, ‘১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে প্রথমবারের মত বাংলাদেশের স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমান বাংলায় ভাষণ দিয়েছিলেন। তাই দিনটি বাঙালি জাতি ও বাংলা ভাষার জন্য  খুবই তাৎপর্যপূর্ন। আগামী ২০২১ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শত জন্মবার্ষিকী। তার আগে ২৫ সেপ্টেম্বরকে বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয়ভাবে ‘বাংলাদেশি ইমিগ্রান্ট ডে’ ঘোষণা করে জাতির জনককে শ্রদ্ধা জানানোর গৌরবতম অধ্যায় হবে বলে মনে করি।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বে প্রবাসী আয়ের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান নবম। বাংলাদেশ পৃথিবীর পঞ্চম বৃহত্তম দেশ, যে দেশের এত বিপুলসংখ্যক প্রবাসী রয়েছে। বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বর্তমানে প্রায় ৮৮ লাখ বাংলাদেশি বাস করেন। বাংলাদেশ জন্মের ৪৭ বছরেও এ বিপুল সংখ্যক প্রবাসীদের জন্য আলাদা কোনো দিবস ছিল না। আজ প্রবাসীদের জন্য একটি দিবস পেয়েছি। সকল প্রবাসীদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকারের কাছে আমাদের আকুল আবেদন, ২৫ সেপ্টেম্বরকে যেন ‘বাংলাদেশি ইমিগ্রান্ট ডে’ হিসেবে সংসদে আইন আকারে পাস করা হয়। যেমন আইন পাস করা হয়েছে নিউইয়র্ক স্টেটে।’

সিনেট অফিস থেকে পাস হওয়া রেজ্যুলেশনটি ১২ মার্চ মুক্তধারা ফাউন্ডেশনে পাঠানো হয়। ১৭ মার্চ নিউ ইয়র্কে অনুষ্ঠিতব্য শিশু-কিশোর মেলায় এই রেজ্যুলেশনটি প্রদর্শিত হবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে মুক্তধারা ফাউন্ডেশন গত তিন বছর ধরে এই শিশু-কিশোর মেলা আয়োজন করে আসছে।

তথ্যানুসন্ধান করতে গিয়ে পাওয়া যায়, ‘বাংলাদেশি ইমিগ্রান্ট ডে’ আইন পাস করার লক্ষে বিশ্বজিত সাহা ২০১৬ সালের ১২ ডিসেম্বর  প্রথম সেনেটর টবে আন্ স্তাভাস্কির কাছে আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের জানুযারি মাসে সেনেট অধিবেশনে এই প্রস্তাব উত্থাপিত হলে রিপাবলিকান সেনেটরদের বিরোধিতার মুখে বাতিল হয়ে যায়। পরে বিশ্বজিত সাহা ২০১৭ সালের  জানুয়ারি মাসে সেনেটর হোজে প্যারাল্টার সঙ্গে দেখা করে বিষয়টি তাকে জানান। সেনেটর আশ্বাস দেন।  ২০১৮ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর হোজে পেরাল্টা একটি প্রকলেমেশনে ২৫ সেপ্টেম্বরকে ’বাংলাদেশি ইমিগ্র্যান্টস ডে’ হিসাবে ঘোষণা করেন।

ইতোপূর্বে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের রেজ্যুলেশটিও সেনেটর হোজে প্যারাল্টার প্রস্তাবনায় নিউ ইয়র্ক স্টেটে পাস হয়েছিল এবং তা স্টেট ক্যালেন্ডারের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।