নিউজিল্যান্ডে সন্দেহভাজন হামলাকারীকে আদালতে হাজির

প্রকাশ | ১৬ মার্চ ২০১৯, ০৯:২১ | আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৯, ০৯:৩৭

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে দু’টি মসজিদে হামলায় অন্তত ৪৯ জনকে হত্যার ঘটনায় প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবে ব্রেন্টন টারান্টকে শনিবার আদালতে হাজির করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে হত্যাকান্ডের অভিযোগ আনা হয়েছে। ২৮ বছর বয়সী ব্রেন্টন টারান্টকে সাদা রংয়ের কয়েদীদের শার্ট এবং হ্যান্ডকাফ পরা অবস্থায় হাজির করা হয়। তার বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ আনা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। খবর বিবিসির।

এর আগে দেশটির প্রধানমন্ত্রী জাসিন্দা আরডান বলেন, এই হামলা ছিল একটি উগ্র-সন্ত্রাসবাদী হামলা এবং প্রধান সন্দেহভাজন হামলাকারীর আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স ছিল। ওই ব্যক্তি ছাড়া আরও দুজন পুলিশের হেফাজতে আটক আছে। প্রধানমন্ত্রী আরডান জানিয়েছেন যে, আটকদের কারও বিরুদ্ধে কোন অপরাধের রেকর্ড নেই।

শুক্রবারের হামলার শিকার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে প্রথম দাউদ নবী নামে একজনের নাম প্রকাশ করেছে তার পরিবার। ৭১ বছর বয়সী দাউদ ১৯৮০ সালে আফগানিস্তান থেকে নিউজিল্যান্ডে চলে আসেন। হতাহত অন্যান্যদের নাম এখনো প্রকাশ করা হয়নি।

শুক্রবার ক্রাইস্টচার্চের মসজিদে জুম্মার নামাজরত শতশত মুসুল্লির ওপর ওই হামলা চালায় সশস্ত্র বন্দুকধারী। ওই হামলায় আহত হয়েছেন ৪৮ জন। তাদের মধ্যে দুই বছর বয়সী এবং ১৩ বছর বয়সী দুটি শিশুও রয়েছে। হতাহতদের মধ্যে বাংলাদেশ সহ ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার নাগরিক রয়েছেন। ক্রাইস্টচার্চে ব্যাপক নিরাপত্তা বিরাজ করছে এবং পুরো দেশজুড়ে সকল মসজিদ বন্ধ রয়েছে

হামলাকারী সম্পর্কে সর্বশেষ তথ্য

নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন মসজিদের হামলার এ ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত ব্যক্তির পাঁচটি আগ্নেয়াস্ত্র এবং একটি লাইসেন্স ছিল। হামলার ঘটনার একদিন পর তিনি আরও জানিয়েছেন, দেশটির অস্ত্র আইন বদলানো হবে।

পুলিশ জানিয়েছে তারা হামলার শিকার দুটো মসজিদ থেকেই গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে এবং সন্দেহভাজন একজনের গাড়ির ভেতর বিধ্বংসী ডিভাইস পাওয়া গেছে।

প্রধানমন্ত্রী আরডান সাংবাদিকদের বলেছেন, হামলাকারীর বন্দুক লাইসেন্সে ছিল এবং সেটি ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে নেয়া হয়েছে।

ওই ব্যক্তি বলেছে সে ২০১৭ সালে ইউরোপ ভ্রমণের পর থেকে এই হামলার পরিকল্পনা করছিল। মাথায় স্থাপন করা ক্যামেরা দিয়ে পুরো হামলার ঘটনা সরাসরি ইন্টারনেটে প্রচার করছিল হামলাকারী, তার বয়স ২৮ বছর এবং সে অস্ট্রেলিয়ান।

ফুটেজে দেখা যায় সে নারী, পুরুষ ও শিশুদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। বন্দুকধারী এরপর প্রায় ৫ কিলোমিটার গাড়ি চালিয়ে আরেকটি মসজিদে গিয়ে হামলা চালায়।

প্রধান সন্দেহভাজন

প্রধানমন্ত্রী আরডান সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘প্রধান সন্দেহভাজন ব্যক্তি বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ভ্রমণ করেছেন এবং নিউজিল্যান্ডে বিক্ষিপ্ত সময় অতিবাহিত করেছেন। তাকে আমি দীর্ঘ-কালীন বাসিন্দা বলব না। হামলাকারীর বন্দুক লাইসেন্সে ছিল। আমাকে জানানো হয়েছে সেটি ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে নেয়া হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘নিউজিল্যান্ডে গোয়েন্দা সংস্থা উগ্র চরমপন্থিদের বিষয়ে তদন্ত করছে কিন্তু হত্যার দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তি চরমপন্থার জন্য গোয়েন্দা সম্প্রদায়ের কিংবা পুলিশ কারও নজরেই আসেনি।’

ওই ব্যক্তি ২০১৭ সালে ইউরোপ ভ্রমণের পর থেকে এই হামলার পরিকল্পনা করছিল এবং সেখানকার ঘটনার প্রেক্ষিতে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছিল। ১৯৯০ এর দশক থেকে যুদ্ধ বিধ্বস্ত বিভিন্ন দেশ থেকে শরণার্থী আসায় নিউজিল্যান্ডে মুসলিমদের শঙ্কা বেড়ে যায়। এ বিষয়টিতে সে ক্ষুব্ধ ছিল।

আল নুল মসজিদে হামলার খবর প্রথম আসে স্থানীয় সময় দুপুর একটা ৪০ মিনিটের দিকে। সামনের দরজা দিয়ে বন্দুকধারী প্রবেশ করে এবং মাথায় স্থাপন করা ক্যামেরা দিয়ে পুরো হামলার ঘটনা সরাসরি ইন্টারনেটে প্রচার করে হামলাকারী।

একজন প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনা অনুসারে, সেখানে একজন মুসুল্লি তাকে নিরস্ত্র করে এবং এরপর সে দৌড়ে বাইরে অপেক্ষমাণ গাড়িতে উঠে যায়।

বন্দুকধারী হামলাকারীকে ঠিক কোথায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা পরিষ্কার নয়। পুলিশ জানিয়েছে তারা হামলার শিকার দুটো মসজিদ থেকেই গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে এবং সন্দেহভাজন একজনের গাড়ির ভেতর বিধ্বংসী ডিভাইস পাওয়া গেছে।

ঢাকা টাইমস/১৬মার্চ/একে