জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
বাঁচানো গেল না হলের ট্রাঙ্ক থেকে উদ্ধার নবজাতকটিকে
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলের একটি কক্ষ থেকে ট্রাঙ্কবন্দী অবস্থায় উদ্ধার করা নবজাতকটি মারা গেছে।
ট্রাঙ্ক থেকে উদ্ধারের প্রায় সাত ঘণ্টা পর শনিবার রাত ১০টার দিকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যায় শিশুটি।
এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক আবু জাফর এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, তিনটার দিকে ট্রাঙ্ক থেকে উদ্ধারের পর বিকাল পাঁচটার দিকে নবজাতকটিকে হাসপাতালে আনা হয়। এ সময় বাচ্চাটির নাড়ি হাত দিয়ে টেনে ছেঁড়া ছিল। আনতে দেরি হওয়ায় ও অক্সিজেনের অভাবে শিশুটি নীল আকার ধারণ করে। পরে রাত ১০টার দিকে শিশুটি মারা যায়।
নবজাতকের মা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ও বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের আবাসিক ছাত্রী। তিনি এনাম মেডিকেলেই আছেন।
এর আগে শনিবার বিকাল তিনটার দিকে ট্রাঙ্ক থেকে নকজাতকটিকে উদ্ধার করা হয়।
হলের শিক্ষার্থী ও প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দুপুর আড়াইটার দিকে ওই ছাত্রীর রুমমেট ও আশেপাশের কক্ষের শিক্ষার্থীরা তার প্রসব বেদনার কথা জানতে পারেন। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে জানালে নার্স এসে তাকে এনাম মেডিকেল কলেজে নিতে বলেন।
কিন্তু এর আগেই সন্তান ভূমিষ্ট হলে কাউকে না জানিয়ে নবজাতককে ট্রাঙ্কে তালাবদ্ধ করে রাখেন তিনি। এক পর্যায়ে ওই ছাত্রীকে এনাম মেডিকেলে নেওয়ার পর তার কক্ষে নবজাতকের কান্নার আওয়াজ পান অন্য শিক্ষার্থীরা।
খোঁজাখুজি করে কক্ষে থাকা ট্রাঙ্ক থেকে তালা ভেঙে নবজাতককে উদ্ধার করে হল প্রশাসন। পরে নবজাতককে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে এনাম মেডিকেল পাঠান।
বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক মুজিবর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঘটনা শুনে সঙ্গে সঙ্গে হলে যাই। কান্নার আওয়াজের ভিত্তিতে কক্ষের ট্রাঙ্ক ভেঙে নবজাতককে উদ্ধার করি এবং এনাম মেডিকেলে নিয়ে যাই।’
নবজাতক ট্রাঙ্কে লুকিয়ে রাখার ঘটনায় অপরাধ হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘তথ্য গোপন করাটা অপরাধ। অনেক বড় দুর্ঘটনাও ঘটতে পারতো। এই ঘটনা তদন্তে হলের সহকারী আবাসিক শিক্ষক লাবিবা খাতুন তানিয়াকে প্রধান করে চার সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে। ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।’
ঢাকাটাইমস/১৭মার্চ/আইআই/এমআর