দানের টাকা ফিরিয়ে আত্মহত্যার অনুমতি চাইলেন ভারতের কৃষক

প্রকাশ | ১৯ মার্চ ২০১৯, ১৫:৪৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস

কৃষকদের সম্মানার্থে চালু করার প্রকল্পের অংশ হিসেবে দুই হাজার টাকা পেয়েছিলেন ভারতের উত্তর প্রদেশের এক কৃষক। সেই টাকা ওই প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কাছে ফিরিয়ে দিয়ে আত্মহত্যার অনুমতি চেয়েছেন ওই কৃষক। যোগীকে লেখা এক চিঠিতে প্রদীপ নামের ওই কৃষক জানিয়েছেন, তিনি আর বেঁচে থাকতে চান না।

উত্তরপ্রদেশের আলুচাষি প্রদীপ চিঠিতে জানিয়েছেন, প্রায় ৩৫ লক্ষ টাকা ঋণ রয়েছে তার। এই ঋণ শোধ করা কখনই সম্ভব নয়। তাই মুখ্যমন্ত্রী তাকে আত্মহত্যার অনুমতি দিলে তিনি বেঁচে যাবেন।

তিনি জানিয়েছেন, তিনি ও তার পরিবার দৈনিক গ্রাসাচ্ছাদনের ব্যবস্থাটুকও করতে পারছেন না একেবারেই। এর আগে তিনি জেলা প্রশাসককেও চিঠি লিখেছেন। ২০১৬ সালে শস্যের বিপুল ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার পরে সরকারের কাছে সাহায্য প্রার্থনা করেছিলেন প্রদীপ। কিন্তু তিনি সে চিঠির উত্তর পাননি।

পরবর্তীতে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে দিল্লি গিয়েছিলেন প্রদীপ। কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী রাধামোহন সিংহের সঙ্গেও দেখা করেছিলেন, কিন্তু ফিরেছিলেন খালি হাতে। সেই সময় তার কাকাও হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান ঋণ শোধ করতে না পারার চিন্তায়। তাই বাধ্য হয়েই আত্মহত্যার পথই বেছে নিতে চাইছেন তিনি। সরকারি প্রকল্পের দু’ হাজার টাকা তার কোনো কাজে আসবে না, তাই মুখ্যমন্ত্রীকে সেই টাকা ফেরত পাঠিয়েছেন।

ফলন ভাল হলেও প্রায় প্রতি বছরই ফসলের দাম না পেয়ে হতাশ হতে হয় ভারতের কৃষকদের। প্রায়ই কৃষকদের আত্মহত্যার ঘটনা ঘটে। কৃষকদের এমন অবস্থা নিয়ে বহু আন্দোলন হলেও কার্যত কোনো ফল আসেনি ভারতে।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ফসল বিক্রির টাকা পাঠিয়ে অভিনব প্রতিবাদ করেছিলেন মহারাষ্ট্রের কৃষক সঞ্জয় শাঠে। কৃষকদের দুর্দশার কথা সঞ্জয় বলেছিলেন, ‘ফলন ভালই হয়েছিল। স্থানীয় নিফাদ পাইকারি বাজারে কেজি প্রতি এক টাকা দর দেয় ব্যাপারীরা। শেষ পর্যন্ত এক টাকা চল্লিশ পয়সা দরে রফা হয়। ৭৫০ কেজি পেঁয়াজ বিক্রি করে হাতে পাই মাত্র ১০৬৪ টাকা। সেই টাকাই পাঠিয়েছি প্রধানমন্ত্রীকে।’

আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে এই ইস্যুটি ভালোভাবে সামনে আসলে মোদির দলকে বিপদে পড়তে হবে বলে মত দিয়েছেন ভারতের বিশ্লেষকরা।

ঢাকা টাইমস/১৯মার্চ/একে