নেত্রকোণায় সহিংসতা ছেড়ে সৌহার্দ্যের ক্রীড়া উৎসব

নেত্রকোণা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ১৯ মার্চ ২০১৯, ২১:৪০

নেত্রকোণায় কেন্দুয়ায় এক গ্রামবাসী গত চার দশকের সহিংসতা-খুনোখুনি ছেড়ে শান্তির পথে ঐক্য স্থাপন করে উদযাপন করলেন দুই দিনব্যাপী সৌহার্দ্যের ক্রীড়া উৎসব।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসী বলছেন, ‘হিংসা বিদ্বেষের বিরুদ্ধে এই উদ্যোগ এক অনন্য নজির স্থাপন করেছে।’

স্থানীয়রা জানায়, ‘নেত্রকোণায় কেন্দুয়ার প্রত্যন্ত গ্রাম খিদিরপুর। গ্রামটির বাসিন্দাদের মাঝে গত চার দশক ধরে লেগে ছিল সংঘর্ষ, খুন, আগুন দিয়ে বাড়িঘর পুড়ানো, লুটপাটের মতো ঘটনা। এ নাগাদ পাল্টাপাল্টি খুনে ১০ জন বাসিন্দা মারা গেছেন। অর্ধশতাধিক মামলা-মোকদ্দমা হয়েছে আদালতে। হানাহানিতে জড়িয়ে গ্রামের লোকজন আর্থিকসহ নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিলেন।’

গ্রামের যুবক সাইদুর রহমান বলেন, ‘এ অবস্থার পরিবর্তনে গ্রামের যুবকেরা বয়স্কদের সহযোগিতায় সকল পক্ষকে নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করে সব বিভেদ ভুলে শান্তি স্থাপনে উদ্যোগ নেয়া হয় প্রায় তিন মাস আগে। এতে গ্রামের লোকজন ঐক্যমতে আসেন।’

গ্রামের আরেক যুবক সোহেল জানান, ‘সব পক্ষই আপস-মীমাংসায় উপনীত হন। পরে এই শান্তি উদ্যোগকে আরও সফল করতে গ্রামের লোকজনদের অংশ গ্রহণে শান্তিতে সৌহার্দ্যে স্লোগানে দুই দিনের ক্রীড়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।’

গ্রামের বাসিন্দা মহসিন আলী খান। তার বাবা খুন হন ২০১৪ সালে। এই খুনের ঘটনার পর পাল্টা আরো একটি খুন হয়। এরপরে মহসিনদের বাড়ি-ঘরে দেয়া হয় আগুন।

মহসিন খান বলেন, ‘এ ঘটনায় মামলা মোকদ্দমায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। তবু শান্তি উদ্যোগে সাড়া দেই। হিংসায় ক্ষতি ছাড়া ভাল কিছু হয় না বলেন তিনি। এখন তিনি গ্রামের সব পক্ষের সাথেই মিলে মিশে দিন কাটাতে চান।’

মঙ্গলবার সকালে গ্রামের খিদিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শুরু হয় এই ক্রীড়া উৎসব। উৎসবে গ্রামে শন্তির জন্যে সবাই একযোগে কাজ করে যাওয়ার শপথ নেয়া হয়েছে বলে জানান স্থানীয় সান্ধিকোণা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সিরাজুল ইসলাম।

তিনি শান্তি উদ্যোগে জড়িত ছিলেন জানিয়ে বলেন, ‘গ্রামের লোকজন সব বিবেধ ভুলে এখন ঐক্যবদ্ধ। শান্তির পক্ষে এ এক অনন্য দৃষ্টান্ত।’

গ্রামের শিক্ষক মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, ‘উৎসবে দারিয়াবান্দা, কলাগাছে ওঠা, পাঁচ কিলোমিটার ম্যারাথন দৌড়, চেয়ার দখলসহ ২৩ ধরনের গ্রামীণ খেলায় গ্রামের নারী, পুরুষ, যুবকেরা অংশ নেন। শেষে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।’

ক্রীড়া উৎসব বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি শিক্ষক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা আর হানাহানি চাই না। ক্রীড়া উৎসবের শান্তির বাণীতে গ্রামের সব মানুষ উদ্বেলিত, খুশি।’

(ঢাকাটাইমস/১৯মার্চ/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :