আন্তর্জাতিক সুখ দিবস

সুখী হওয়ার পাঁচ উপায়

প্রকাশ | ২০ মার্চ ২০১৯, ০৮:১৮

ঢাকাটাইমস ডেস্ক

আজ বুধবার ‘আন্তর্জাতিক সুখ দিবস’ পালন করা হচ্ছে বিশ্বের অনেক দেশে। তবে কেউ যদি সেই সুখের অনুভূতি পুরোপুরি না পেয়ে থাকেন, চিন্তার কিছু নেই। জেনে নিতে পারেন কীভাবে একজন সুখী মানুষ হওয়া যায়।

ঠিক যেভাবে সংগীতশিল্পী বা ক্রীড়াবিদরা চর্চা করেন, অন্যদের শেখান, তাদের উন্নতিতে সহায়তা করেন, ঠিক একই ভাবে চর্চা করে শেখা যেতে পারে যে, কীভাবে নিজেকে একজন সুখী মানুষ হিসাবে গড়ে তোলা যায়।

সুখী হওয়ার ব্যাপারটা এমন নয় যে, এটা এমনি এমনি চলে আসে। এজন্য অভ্যাস করে করে দক্ষ হয়ে উঠতে হবে। এমনটাই বলেছেন লুরি স্যান্তোস নামে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিদ্যার একজন অধ্যাপক। তিনি বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছেন, কীভাবে খারাপ লাগা বা দুঃখের বিষয়গুলোকে ভুলে যেতে হবে।

ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩১৭ বছরের ইতিহাসে স্যান্তোসের ক্লাস ‘মনোবিদ্যা এবং সুখী জীবন’ হচ্ছে সবচেয়ে জনপ্রিয় কোর্স। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকাভুক্তির রেকর্ড ভেঙ্গে ১২০০ শিক্ষার্থী নিজেদের নাম লেখান। সেখানে অধ্যাপক স্যান্তোস সুখী হওয়ার যে পাঁচটি উপায়ের কথা বলেছেন তা তুলে ধারা হলো-

প্রাপ্তির একটি তালিকা করুন

শিক্ষার্থীদের এমন একটি তালিকা তৈরি করার জন্য বলেন স্যান্তোস, যেগুলোকে তারা নিজেদের জীবনের প্রাপ্তি বলে মনে করেন। এই তালিকা তৈরির কাজটি প্রতিদিন রাতে একবার হতে পারে বা অন্তত সপ্তাহে একবার করতে হবে।

সান্তোস বলেন, ‘এটা হয়তো শুনতে বেশ সাধারণ লাগছে। কিন্তু আমরা দেখেছি, যে শিক্ষার্থী এই চর্চাটি নিয়মিতভাবে করেন, তারা অন্যদের চেয়ে বেশি সুখী হয়ে থাকেন।

বেশি ঘুমান আর ভালো থাকুন

এখানে চ্যালেঞ্জটা হলো, প্রতি রাতে অন্তত আট ঘণ্টা ঘুমানো এবং সেটা হতে হবে সপ্তাহের সাতটি রাতেই। এই সাধারণ বিষয়টি অর্জন করা অনেকের কাছে অনেক কঠিন একটি বিষয় বলে মনে হয়। বেশি ঘুমানোর ফলে বিষণ্ণতায় ভোগার সম্ভাবনা কমে যায় এবং যে কারও ভেতর ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করে।

ধ্যান

তিদিন অন্তত ১০ মিনিট ধ্যান করুন, সপ্তাহের প্রতিটি দিন। স্যান্তোস বলেছেন, যখন তিনি পড়াশোনা করতেন, নিয়মিত ধ্যান তার ভেতর ভালো লাগার অনুভূতি তৈরি করতো। এখন তিনি একজন অধ্যাপক। তিনি শিক্ষার্থীদের বেশ কিছু গবেষণার উদাহরণ তুলে ধরে বলেন, কীভাবে ধ্যান এবং পুরো মনোযোগ টেনে নেয়ার মতো কর্মকাণ্ড একজন ব্যক্তিতে আরও সুখী হতে সহায়তা করে।

পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে আরও বেশি সময় কাটানো

স্যান্তোসের তথ্য মতে, সাম্প্রতিক বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে চমৎকার সময় কাটানো গেলে সেটা মানুষকে প্রফুল্ল বা সুখী করে তোলে। যাদের আমরা পছন্দ করি, তেমন মানুষের সঙ্গে সময় কাটানো অথবা ব্যক্তিগত ভালো সম্পর্ক ও সামাজিক যোগাযোগের ফলে মানুষের মধ্যে একটা আনন্দ এবং স্বস্তি তৈরি করে, যা আসলে তাদের ভালো থাকাকে আরও বাড়িয়ে তোলে।

সামাজিক মাধ্যমে কম সময় আর বাস্তব যোগাযোগ বৃদ্ধি

সামাজিক মাধ্যম অনেক সময় আমাদের মিথ্যা সুখের আবহ দিতে পারে। কিন্তু তাতে ভেসে না যাওয়ার জন্য সতর্ক থাকতে হবে। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, যেসব মানুষ ফেসবুক, টুইটার সহ নানা সামাজিক মাধ্যমগুলো বেশি ব্যবহার করে, তারা ওইসব মানুষের চেয়ে কম সুখী, যারা ওগুলো খুব একটা ব্যবহার করেন না।

তাই কেউ যদি জীবনে সত্যিই সুখী হতে চান, তাহলে প্রাপ্তির হিসাব দিয়ে শুরু করুন, রাতে চমৎকার একটি ঘুম দিন, মনকে বিক্ষিপ্ত অবস্থা থেকে সরিয়ে মনোযোগী করুন, যেসব মানুষকে পছন্দ করেন, তাদের সঙ্গে বেশি সময় কাটান আর সামাজিক মাধ্যম থেকে কিছুদিন বিরতি নিন।

ঢাকাটাইমস/২০মার্চ/এএইচ